নতুন রাষ্ট্রপতিকে ২১ বন্দুকের স্যালুট দেওয়া হয়। এরপরই বক্তব্য রাখে নতুন রাষ্ট্রপতি। যৌথ বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে হারিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হন মুর্মু। তিনি স্বাধীনতার পর জন্মগ্রহণকারী প্রথম এবং শীর্ষে পৌঁছানো সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি।
দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা হিসেবে শপথ নিলেন দ্রৌপদী মুর্মু। প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই সময় দ্রৌপদী মুর্মু তার ভাষণে বলেন যে আমার কাছে মহিলাদের স্বার্থই সর্বাগ্রে হবে। পাশাপাশি তিনি দলিত, অনগ্রসর ও দরিদ্রদের স্বার্থে কাজ করার কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের শক্তি আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। দেশের দরিদ্র আদিবাসী, দলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষ আমার মধ্যে তাদের প্রতিফলন দেখতে পায়। আমার এই নির্বাচনে আজকের যুগে এগিয়ে চলা তরুণদের অবদানও রয়েছে। দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, আমি স্বাধীন ভারতে জন্মগ্রহণকারী দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতিও।
দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, 'আজ আমি ভারতের নেতৃত্ব দিতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। আজ আমি দেশের নারী ও যুবকদের মনে করিয়ে দিচ্ছি যে তাদের স্বার্থই আমার কাছে সর্বাগ্রে। আমার সামনে রাষ্ট্রপতি পদের এত বড় উত্তরাধিকার রয়েছে, যা বিশ্বে ভারতের গণতন্ত্রের মর্যাদাকে শক্তিশালী করেছে। সংবিধানের আলোকে আমি আমার দায়িত্ব পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে পালন করব। আমার জন্য গণতান্ত্রিক আদর্শ এবং সকল দেশবাসীর শক্তির উৎস হবে। তিনি কারগিল বিজয় দিবসে অগ্রিম শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।
দ্রৌপদী মুর্মু, যিনি দেশের দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি, তিনি এই অনুষ্ঠানে পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু, সর্দার প্যাটেল, ভীমরাও আম্বেদকর, ভগত সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ এবং মহাত্মা গান্ধীর কথাও উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয়, তিনি রানী লক্ষ্মীবাঈসহ অনেক নারী শাসকের কথাও উল্লেখ করেছেন। আদিবাসীদের উত্তরাধিকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন যে কোল ক্রান্তি, ভিল ক্রান্তি সহ এমন অনেক আন্দোলন হয়েছে, যার নেতৃত্বে আদিবাসীরা ছিলেন এবং এটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে শক্তিশালী করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অবদানের জন্য নিবেদিত একটি জাদুঘর নির্মিত হচ্ছে। সংসদীয় গণতন্ত্র হিসেবে ভারত অনেক এগিয়েছে।
আমরা এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ার দিকে এগোচ্ছি। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অমৃত কালের নতুন অধ্যায় যোগ করতে হবে। ভারত করোনা মহামারী মোকাবিলায় শক্তি দেখিয়েছে, বিশ্বে তার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়েছে। আমরা ভারতীয়রা নিজেদের শক্তি দিয়ে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি এবং বিশ্বের সামনে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছি।
দ্রৌপদী মুর্মু বলেছিলেন যে দেশে G-20 শীর্ষ সম্মেলন হতে চলেছে, যা অবশ্যই বিশ্বকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে। তিনি বলেন, আমি আদিবাসী ঐতিহ্য থেকে এসেছি, যেখানে পরিবেশ রক্ষা জরুরি।
নতুন রাষ্ট্রপতিকে ২১ বন্দুকের স্যালুট দেওয়া হয়। এরপরই বক্তব্য রাখে নতুন রাষ্ট্রপতি। যৌথ বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে হারিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হন মুর্মু। তিনি স্বাধীনতার পর জন্মগ্রহণকারী প্রথম এবং শীর্ষে পৌঁছানো সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি।
সকাল ১০.১৫ মিনিটে সংসদের সেন্ট্রাল হলে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে উপরাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, রাজ্যের গভর্নর, সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, কূটনৈতিক মিশনের প্রধান এবং সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংসদের সেন্ট্রাল হলে অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি তার কনভয় নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে তাকে ইন্টার সার্ভিস গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।