নতুন ভিডিও বার্তা আদানি কর্তা গৌতম আদানির। তিনি বলেছেন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই সিদ্ধান্ত। বিনিয়োগকারীদের স্থান তাঁর কাছে সবার আগে।
নতুন শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া (FPO ) স্থগিত রেখেছে সংস্থা। তবে এই ঘোষণা অনেককেই অবাক করেছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত খুবই জরুরি ছিল। বৃহস্পতিবার একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করে আদানি গ্রুপের প্রধান গৌতম আদানি এই দাবি করেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন সংস্থা মনে করছেন এই পরিস্থিতিতে FPO ছাড়ার সিদ্ধান্ত নৈতিকভাবে ঠিক হবে না। তাই বুধবার নেওয়া সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংস্থাটি দৃঢ়ভাবে অবস্থান করছে। তিনি আরও বলেছেন তাঁর গোষ্ঠীর মৌলিক বিষয়গুলি শক্তিশালী। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে এদিন গৌতম আদানি বলেন, আদানি গ্রুপ মনে করছে ফোলো-অন পাবলিক অফারের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া নৈতিকভাবে ঠিক হবে না , সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিন ভিডিও বার্তায় গৌতম আদানি আরও বলেছে , একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যাবসা করছেন। তাঁর ব্যবসায় তিনি স্টক হোল্ডার ও বিনিয়োগকারীদের থেকে প্রচুর সমর্থন পেয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, বিশ্বাস আর বিশ্বাসের কারণেই তিনি তাঁর জীবনে এই সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, তাঁর এই সাফল্যের জন্য তিনি বিনিয়োগকারী ও স্টকহোল্ডারদের কাছে ঋণী। 'আমার জন্য বিনিয়োগকারী ও স্টকহোল্ডারদের আগ্রহ সর্বাগ্রে। বাকি সবকিছুই গৌণ। তাই বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেতেই এই FPO প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত করেছি।' ভিডিও বার্তায় তেমনই জানিয়েছেন গৌতম আদানি।
গৌতম আদানি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, 'আমাদের কোম্পানি ব্যালেন্স শীট স্বাস্থ্যকর । সম্পদ মজুত রয়েছে। আমাদের EBITDA মাত্রা এবং নগদ প্রবাহ খুবই শক্তিশালী এবং আমাদের ঋণের বাধ্যবাধকতা পূরণের একটি অনবদ্য ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। আমরা দীর্ঘমেয়াদী মূল্য সৃষ্টিতে ফোকাস চালিয়ে যাব এবং প্রবৃদ্ধি পরিচালিত হবে অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়।' আদানি আরও বলেছেন, বাজার স্থিতিশীল হলে গ্রুপটি পুঁজিবাজারের কৌশল পর্যালোচনা করবে। আদানি কর্তা বলেন, ইএসজিতে তাদের একটি দৃঢ়় ফোকাস রয়েছে। তাদের প্রতিটি ব্যবসা একটি দায়িত্বশীল ।
যদিও হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট সামনে আসার পর গত সপ্তাহে আদানি গোষ্ঠী জানিয়েছিল তারা এফপিও ছাড়়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসবে না। সেইসঙ্গে আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থাগিতে দেওয়া ৮১৩ পাতার জবাবে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগে ভারত ও দেশের প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক বৃদ্ধির ওপর আক্রমণ বলেও সমালোচনা করেছিল। গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আদানি এন্টারপ্রাইস এফপিওতে শেয়ার বিক্রি করেছে। কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সামনে আসার পরে গত শুক্রবার প্রথম দিনে এই শেয়ার কিনতে আবদেন পড়েছিল মাচ্র ১ শতাংশ। উল্টে শেয়ার বিক্রি ও তার দরে বিপুল পতনের জেরে লগ্নীকারীরা হারিয়েছেন প্রায় ৫ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সবমিলিয়ে বিএসই বিনিয়োগকারীদের ১১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সেবি ও এক্সচেঞ্জগুলি। কারচুপির অভিযোগ ওঠায় আদানিগোষ্ঠীতে এলআইসি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও ব্যাঙ্কের লগ্নি ও ঋণ নিয়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আসরে নামতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ
মুক্তির স্বাদ, ২৮ মাস পরে উত্তর প্রদেশের জেল থেকে মুক্তি পেলেন কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিক কাপান
'আমাদের সঙ্গে তামাশা করা হচ্ছে', শেয়ার নিয়ে আদানিদের কটাক্ষ মহুয়া মৈত্রর
আদানি-গোষ্ঠীর কাছে থাকা জনগণের টাকা বাঁচাতে সরকার কী করছে? সংসদে আলোচনার দাবি কংগ্রেসের