গত কয়েকদিন সদ্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আগুন জ্বলে উঠতে দেখা গিয়েছে একের পর এক রাজ্যে। সরকার সরাসরি এর জন্য বিরোধী দলগুলিকে দায়ি করেছে। মোদী সরকারের দাবি, বিরোধীরা সাধারণ মানুষকে ভুল পথে চালিত করছেন। এই আইন নিয়ে ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। বৃহস্পতিবার, এই ভুল তথ্যের প্রচার রুখতে সরকারে পক্ষ থেকে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কিছু 'সত্যি তথ্য' প্রশ্নোত্তরের আকারে প্রকাশ করা হল।
প্রথমেই জানানো হয়েছে, এনআরসি অর্থাৎ লাগরিকপঞ্জীর সঙ্গে কোনওভাবেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সম্পর্কিত নয়। দুটি বিষয়ের কোনওটি নিয়েই ভারতীয় মুসলিমদের ভাবনার কারণ নেই বলে দাবি করা হয়েছে। এনারসি-র ক্ষেত্রে ধর্মের বিভাজনও করা হবে না। এছাড়া আলাদা করে নাগরিকত্ব প্রমাণেরও দরকার নেই। ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড করানোর মতোই বিষয়।
নাগরিকত্ব নির্দারণ করা হবে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে যে যে নাগরিকত্ব বিধি রয়েছে তা অনুযায়ী। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য বাবার জন্মের শংসাপত্র লাগবে, এমনটাও নয়। যদি নিজের জন্মের শংসাপত্র না থাকে তাহলেই বাবার শংসাপত্র লাগতে পারে। তবে কোন নথিকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য ধরা হবে তা এখনও ঠিক করা হয়নি। ১৯৭১ সালের আগে থেকে ভারতে থাকার প্রামাণ্য নথিও লাগবে শুধু অসমের ক্ষেত্রেই বাকি দেশে নয়। ওই রাজ্যে অনুপ্রবেশ দীর্ঘদিনের সমস্যা বলেই ১৯ লক্ষ মানুষ এনআরসি-তে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন, অন্যত্র সংখ্যাটা খুবই কম হবে বলে দাবি করেছে সরকার।
আরও পড়ুন - সর্বধর্ম মানব-বন্ধনের ঘোরাটোপে নামাজ পাঠ, ধ্বংস নয় এই প্রতিবাদ গড়ার কথা বলল
আরও দেখুন - নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গর্জে উঠল তিলোত্তমার রাজপথ, পথে নামলেন অপর্ণা-কৌশিকরা
আরও দেখুন - কনফিডেন্স নিয়ে মিথ্যে বলেন, রাজ্যে হিংসার জন্য দায়ি মমতাই, হুঙ্কার বিজয়বর্গীয়-র
আরও পড়ুন - আরও সংযম চাই, নাগরিকত্ব আইনের আগুনে জল ছেটালেন জামে মসজিদের শাহি ইমাম
যদি কেউ শিক্ষিত হন, এবং কোনও নথিই তাঁর কাছে না থাকে সেই ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য কোনও সাক্ষীর মুখের কথাও গ্রাঢ্য করা হবে। বা অন্য কোনও পারিপার্শ্বিক নথির মাধ্যমে তাঁকে নাগরিকত্ব প্রমাণের সুযোগ দেওয়া হবে। ভারতের অনেক গরীব মানুষের ঘরই নেই, নাগরিকত্ব প্রমাণের নথি তো কোন দূর। সরকার বলেছে, এই তথ্য পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ তাঁরা ভোট দেন, সরকারি সুযোগ সুবিধাও পান। সেইসব দিয়ে তাঁদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করা হবে। রূপান্তরকামী, নিরীশ্বরবাদী, আদিবাসী, দলিত, মহিলা, নথিবিহীন জমিবিহীন হওয়ার কারণে কারোর নাম নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ পড়বে না বলেও আশ্বাস দিয়েছে মোদী সরকার।