করোনা নিয়ে আশার আলো দেখল দেশবাসী, ৩ সপ্তাহের মধ্যে ভারতে শুরু হচ্ছে ভ্যাকসিনের উৎপাদন

  • দেশে সরকারি ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৭,৮৯২
  • গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের শিকার হয়েছে ১,৩৯৬ জন
  • এর মধ্যেই আশার খবর শোনাল এক ভারতীয় সংস্থা
  • মে মাসেই ভারতে শুরু হচ্ছে ভ্যাকসিনের উৎপাদন

Asianet News Bangla | Published : Apr 27, 2020 4:55 AM IST / Updated: Apr 27 2020, 10:28 AM IST

বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ ছুঁই ছুইঁ। ভারতেও বাড়ছে দ্রুত সংক্রমণ। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত ২৭ হাজার দৌঁড়চ্ছে ২৮ হাজারের দিকে। দেশজুড়ে লকডাউন চললেও প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা জেনন না কেউই। ক্রমেই ঘন হচ্ছে আশঙ্কার মেঘ। এই অবস্থায় ভারতবাসীকে আশার আলো দেখাল পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের উৎপাদন দেশেই শুরু হতে চলেছে বলে দাবি করেছে সংস্থাটি। ফলে চলতি বছর অক্টোবরেই করোনাভাইরাসের টিকা দেশের বাজারে মিলবে বলেই আশাবাদী সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কর্তারা।

পৃথিবীতে নতুন আমদানি হওয়া করোনা ভাইরাসের এখনও কোনও চিকিৎসা জানা নেই। বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীরা নিরন্তর এর প্রতিষেধক আবিষ্কার করত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনার টিকার অপেক্ষায় এখন পথ চেয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব। ভ্যাকসিন অবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত লকডাউন আর সামাজিক দূরত্ব দিয়ে এই রোগকে আটকে রাখা সম্ভব নয়। এমন সময়ে কিছুটা হলেও বিশ্বকে আশা দেখিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। গত সপ্তাহেই ব্রিটেনে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। অক্সফোর্ডের সঙ্গে এই গবেষণায় সামিল হয়েছে বিশ্বের আরও সাতটি প্রতিষ্ঠানও। যাদের মধ্যে অন্যতম ভারতের পুনায় অবস্থিত সেরাম ইনস্টিটিউট। অক্সফোর্ডের গবেষকদের সঙ্গে সেরাম ইনস্টিটিউটের গবেষকরাও নিরন্তর কাজ করে চলেছেন মারণ রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে। 

ভারতেও শুরু হচ্ছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, অক্টোবরের মধ্যেই বাজারে ভ্যাকসিন আসার সম্ভাবনা

করোনা এবার প্রাণ কাড়ল কংগ্রেস নেতার, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার ছুঁতে চলল

করোনাকে জয় করে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ফিরলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, যোগ দিলেন কাজে

তাঁদের আবিষ্কার করা ভ্যাকসিমের সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। আর সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এদেশেও করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক উৎপাদনের বিষয়ে তোরজোড় শুরু করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট। সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়াল্লা জানিয়েছেন, 'অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ডক্টর অ্যাড্রিয়ান হিলের সঙ্গে আমাদের দল কাজ শুরু করেছে। আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। এর পরে প্রাথমিকভাবে প্রথম ছ-মাসের মধ্যে আমরা ৫০ লক্ষ ডোজ উৎপাদন করতে পারব। এর পরে বাড়িয়ে মাসে ১ কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদন করার সক্ষমতা আমরা অর্জন করব বলে আশা।' আর এই মহাযজ্ঞের জন্য ইতিমধ্যে  ড্রাগ কন্ট্রোল ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) অনুমোদনও চেয়ে রেখেছে সেরাম ইনস্টিটিউট। 

 আদর এর সঙ্গেই মনে করিয়ে দিয়েছেন , অবশ্যই অক্সফোর্ডে ভ্যাকসিনের  ট্রায়াল কী ফলাফল দিচ্ছে সেদিকে নজর রাখা হবে। তার আগে এদেশে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট বানিয়ে ফেলবেন সেরামের ভাইরোলজিস্টরা। ল্যাবরেটরিতেই শুরু হবে ট্রায়াল। এই সময়ের মধ্যে অক্সফোর্ডে হিউম্যান ট্রায়াল অনেকটাই এগিয়ে যাবে। মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন কাজ করলেই বাণিজ্যিক হারে ভেক্টর ভ্যাকসিন বানানোর কাজ শুরু হবে সেরাম ইনস্টিটিউটে।সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।

এর পাশাপাশি যক্ষ্মা  প্রতিরোধক  ‘ব্যাসিলাস ক্যালমেট গেরান’ (বিসিজি) ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে কতটা কাজ দিতে পারে সেই নিয়েও গবেষণা চলছ সেরামে। আইসিএমআরের অনুমোদনে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হচ্ছে  মহারাষ্ট্রে। সংস্থার সিইও আদর পুনাওয়াল্লা জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি যাঁদের সবচেয়ে বেশি তাঁদের উপরেই আগে প্রয়োগ করে দেখা হবে এই ভ্যাকসিন। ট্রায়ালের জন্য ২০০০-৩০০০ হাজার জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন বয়স্ক ব্যক্তিরা, যাঁদের সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি এবং ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেরাম জানিয়েছে কেন্দ্রের বায়োটেকনোলজি বিভাগ, আইসিএমআরের অনুমোদনেই এই ট্রায়াল শুরু হচ্ছে। বার্লিনের ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব ইনফেকশন বায়োলজির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করোনার প্রতিরোধী করে বানানো হচ্ছে এই ভ্যাকসিনকে।
 

Share this article
click me!