সপ্তাহের প্রথম দিনের সকালেই নয়াদিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স পৌঁছয় ৫০০-তে। দিনভর কাজকর্মের শেষে সন্ধা থেকে একিউআই আরও বেড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। রবিরার দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স পৌঁছয় ৪৯৪-এ। ২০১৬ সালে দিল্লির বায়ু দূষণের মাত্রা পৌঁছেছিলো ৪৯৭-এ। সোমবার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- সরছে কি প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকারি বাসস্থান, জমা পড়ল রিপোর্ট
এহেন পরিস্থিতি-তে প্রবল আতঙ্কে দিল্লিবাসীরা। টুইটার থেকে ফেসবুক- সর্বত্রই দিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন বহু মানুষ। কেউ বুঝে উঠতে পারছেন না কীভাবে এমন ভয়াবহ বায়ু দূষণের হাত থেকে রেহাই পাবেন। এমতাবস্থায় নেটিজেনরা দিল্লি থেকেই রাজধানী সরানোর দাবি তুলেছে। এইসব নেটিজেনদের দাবি, দূষণে দিল্লি বসবাসের অযোগ্য। এমন এক শহরের রাজধানীর তকমা কেড়ে নেওয়া উচিত। দিল্লির সঙ্গে গা-লাগিয়ে থাকা এনসিআর-এর এক হাল। তাই এমন জায়গায় রাজধানী করা হোক যেখানে দূষণের দাপাদাপি থাকবে না এবং মানুষ সহজে যাতায়াত করতে পারবে। সেই সঙ্গে সুরক্ষিতও থাকবে রাজধানী।
এই সব নেটিজেনদের অনেকের আবার দাবি দিল্লি থেকে রাজধানী সরিয়ে চেন্নাই, নাগপুর অথবা বেঙ্গালুরু-তে নিয়ে যাওয়ার। দিল্লি-তে রাজধানী থাকা নিয়ে কয়েক'শ বছর ধরেই বিতর্ক রয়েছে। মোঘল আমলে দিল্লি রাজধানী হিসাবে খ্যাতি লাভ করলেও, ব্রিটিশদের কাছে ভারতবর্ষের রাজধানী ছিল কলকাতা। ব্রিটিশ শাসকরা তাদের সমস্ত কাজকর্ম কলকাতার বুক থেকেই সারাদেশে পরিচালনা করত। কিন্তু, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন এবং বাংলার বুকে বৈপ্লবিক কার্যকলাপে ধাক্কা খেয়ে ব্রিটিশরা দিল্লি-তে তাদের রাজধানী সরিয়ে নিয়ে যায়। যদিও, কারণ হিসাবে ব্রিটিশরা দিল্লি-তে রাজধানী স্থানান্তরে ভৌগলিক অবস্থানের অজুহাত খাড়া করেছিল। তাঁরা জানিয়েছিল ভৌগলিক অবস্থানে দিল্লি দেশের এবং কেন্দ্রবিন্দু-তে রয়েছে। যদিও, মহম্মদ বিন তুঘলক দিল্লি থেকে রাজধানী সরিয়ে নিয়েছিলেন। তিনি দেবগীরি বা দৌলতাবাদে রাজধানী স্থানান্তর করেছিলেন। তাঁর মতে দিল্লি রাজধানী হিসাবে মোটেও সুরক্ষিত বা বিজ্ঞানসম্মত স্থান নয়। যদিও, পরিকাঠামোর অভাবে শেষমেশ বিন তুঘলক দিল্লি-তেই ফের রাজধানী স্থাপন করেন। সুতরাং, দিল্লির রাজধানী তকমা বরাবরাই প্রশ্নচিহ্নের সামনে থেকেছে।