ইশা ফাউন্ডেশনের উদ্যোতে আলোচনায় সভায় সফল ব্যক্তিদের চাঁদের হাট। চন্দ্রশেখর ঘোষ থেকে শুরু করে সোনম ওয়াচুংক জানালেন তাঁদের সাফল্যের গোপন রহস্যটি।
'ইশা ইনসাইট: দ্য ডিএনএ অফ সাকসেস' ইশা লিডারশিপ অ্যাকামেডির তত্ত্বাবধানে একটি আলোচনা সভায় বন্ধন ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ তুলে ধরেনের তাঁর স্বপ্নের সাফল্যের কাহিনি। তিনি বলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে কীভাবে মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানিতে উত্তোরণ ঘটেছে। তিনি সাফল্যের পাশাপাশি প্রথম জীবনে কষ্টের কথাও উল্লেখ করেন।
বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতি সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, তাঁর এই যাত্রাপথ মোটেও সহজ ছিল না। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে ব্যাঙ্ক তৈরির পথে অনেক কাঁটা পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। প্রথম দিকে তিনি মহাজনদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ৭.৫ শতাংশ হারে সুদ নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর একটি মাত্র লক্ষ্য ছিল ব্যাঙ্কের কাছে প্রমাণ করা যে তিনি যে মডেলটি তৈরি করতে চলেছেন সেটি একদম নিখুঁত। লোকেদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা তিনি ফেরাতে পারবেন। বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রধান বলেছেন, 'ভারত একটি বড় দেশ। আপনি যদি সঠিক মাপকাঠিতে না খেলেন তবে দেশের ওপর তার কোনও প্রভাব পড়বে না।' তাঁর কথায় ব্যাঙ্কটি দেশের সবথেকে ব্যাঙ্কবিহীন ও আন্ডারব্যাঙ্কড বিভাগের আর্থিক চাহিদাগুলিকে সম্বোধন করে। দেশের ওপর প্রভাব ফেলতে নির্ভর করে।
এই আলোচনাসভার দ্বিতীয় দিনে চন্দ্রশেখর ঘোষ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন, লাদাখের সোনম ওয়াংচুক, ডিরেক্টর, হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভস। ও গৌতম সারাওগী, প্রতিষ্ঠাতা, সিইও । আর ছিলেন কুণাল বাহল। তিনি AceVector Group-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা। তিনি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের জন্য তাঁর প্রথামিক লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেছেন। 'ইশা ইনসাইট: দ্য ডিএনএ অফ সাকসেস' ইশা লিডারশিপ অ্যাকামেডির তত্ত্বাবধানে এই আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল কোয়েম্বাটোরের ইশা যোগকেন্দ্রে।
এই অনুষ্ঠানে কুনাল বাহল দেশের স্টার্ট-আপ সংস্কৃতিকে সমর্থন করেছেন। বলেছেন, ভারতীয় স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রেখেছে। আগামী দিনে এই সংস্থাগুলি আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। তবে স্টার্ট-আপ সংস্থা নিয়ে এখনই অত্যাধিক সমালোচনা বা আলোচনা করার প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। কুণাল বলেছেন, আগামী ২০ বছরে বিশ্বের সবথেকে বেশি কেনাবেচা হবে সফ্টওয়্যার পণ্যকে কেন্দ্র করে। আর সেটা আমাদের জন্য অত্যান্ত গর্বের বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আগামী দিনে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে কেন্দ্র করে স্টার্ট-আপ সংস্থা গড়ে তোলার বিষেয় আশা প্রকাশ করেছেন।
Go Colors-এর প্রতিষ্ঠাতা সিইও গৌতম সারাওগি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি মহিলাদের পোশাক তৈরির যাত্রা কীভাবে শুরু করেছিলেন তা শেয়ার করেনেন বাকিদের সঙ্গে। গো কালারের 'ব্লু ওশান' কৌশল ব্যাখ্যা করে, গৌতম সরোগী বলেছিলেন যে প্রতিদিনের পোশাক হওয়ায় এই বিভাগে কোনও প্রতিযোগিতা ছিল না, কোনও ফ্যাশন বা ইনভেন্টরি ঝুঁকি তৈরি করেনি কারণ সেগুলি পণ্যের দামে বিক্রি করা যেতে পারে। তিনি বলেন ২০১১ সলে চেন্নাইতে প্রথম কিয়স্ক খোলে Go Colors। বর্তমানে এই সংস্থার হাতে রয়েছে ১৩৩টি শহরের ৫৬৯টি স্টোর। Go Colors বর্তমানে ৩ হাজার - ৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তিনি বলেছেন ব্যবসা বড় হয়ে গেলে তা জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়া অনেক সহজ। কিন্তু শুরু করা খুব কঠিন।
সোনম ওয়াংচুক লাদাখের হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অব অল্টারনেটিভস-এর পরিচালক। তিনি মাটির গরম ঘর তৈরি করে আফগানবাসীকে নতুন পথ দেখিয়েছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বলেন, 'আমার কাছে উদ্যোক্তা তারা নন, যারা শুধুই অর্থ উপার্জন করেন এবং আরও বেশি উপার্জনের চেষ্টা করেন। উদ্যোক্তা তাঁরা যারা সমস্যার সমাধান করতে পারেন।' তিনি বলেন আপনি যদি কোনও সমস্যার সমাধান করতে না পারেন তাহলে আপনি কিছুতেই উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন অন্যদের সাহায্য করার জন্য একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই তিনি সাফল্য পাবেন।
ইশা ইনসাইট ২০২২ এর তৃতীয় দিনের আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকবেন,কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র শিং শেখাওয়াত। Aequs-এর চেয়ারম্যান ও সিইও অরবিন্দ মেলিগেরি। তাঁরা অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে শিক্ষা ও ভ্রমণ নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবেন।
আরও পড়ুনঃ
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আলোচনার দাবি বিজেপির, শাসকদল না মানায় উত্তাল বিধানসভা