নতুন করে কূলবূষণ মামলার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চাপে পড়ল পাকিস্তান। বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক মন্যায় আদালতের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুলকাওয়াই ইউসুফ জানান, এই মামলায় পাকিস্তান ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে রিপোর্ট পেশ করে বিচারপতি ইউসুফ জানান, পাকিস্তান ভিয়েনা চুক্তির ৩৬ নম্বর ধারা মানেনি। আর তার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপও কিছু গ্রহণ করেনি।
বলাই বাহুল্য আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের প্রধান বিচারপতি এই রিপোর্ট ভারতের পক্ষে বিশাল জয়। ২০১৭ সালে এক পাক আদালত ভারতের প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিক কুলভূষণ যাদবকে গুপ্তচরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদী কার্ষকলাপে য়ুক্ত থাকার অভিযোগে প্রাণদণ্ড দিয়েছিল। ভারত তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য ১৯৬৩ সালের ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী কনসুলার অ্যাক্সেস চেয়েছিল। আন্তর্জাতিক ন্য়ায় আদালতও কুলভূষণ বিষয়ে পাক আদালতকে আগের রায় পুনর্বিবেচনা ও কুলভূষণকে কনসুলার অ্যাক্সেস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
আরো পড়ুন ৃ-, কুলভূষণ মামলায় পাকিস্তানের ইউটার্ন, ফের ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন
আরও পড়ুন - অপেক্ষার অবসান! অবশেষে কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করলেন ভারতীয় কূটনীতিক
আরও পড়ুন - সোমবার থেকেই কনস্যুলার অ্যাকসেস পাবেন কুলভূষণ, জানিয়ে দিল পাক বিদেশ মন্ত্রক
এখই সঙ্গে তাঁর রিপোর্চটে বিচারপতি ইউসুফ এও উল্লেখ করেছেন, ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবন্দী হলে ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশকে খবর দিতে হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে পাকিস্তান, ভারতকে কুলভূষণের ধরা পড়ার খবর জানায় প্রায় তিন সপ্তাহ পরে। কাজেই এই ক্ষেত্রেও ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান।
আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের নির্দেশের পর পাকিস্তান কুলভূষণকে কন্সুলার অ্যাক্সেস দিয়েছিল, তবে তা একেবারেই নাম-কা-ওয়াস্তে। ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁকে একান্তে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সর্বক্ষণ পাক কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে ভারতীয় প্রতিনিধি জানিয়ছিলেন কুলভূষণের কথা শুনে মনে হয়েছে, তাঁর উপর পাক কর্তৃপক্ষ চাপ সৃষ্টি করেছে। এই বিষয়টিও তাঁর রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের প্রধান বিচারপতি। জানিয়েছেন, গাফিলতি সংশোধনের যে নির্দেশ পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছিল, তা তারা পুরোপুরি মেনে চলেনি।
স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। বিদেশ দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই রায়ে মামলায় ভারতের অবস্থানই আরও জোরদার হল। এদিকে, এই রায় নিয়ে পাক তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।