অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বাংলায় এসেছে ঐতিহাসিক জয়
এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য দিল্লি
এইক্ষেত্রেও ভরসা তাঁর সেই প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক
সংস্থার সঙ্গে ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ালো তৃণমূল
১০ বছরের শাসনের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা ছিল। পাশ থেকে একের পর এক বিশ্বস্ত সেনাপতির সরে যাওয়া ছিল। ছিল লোকসভা ভোটের ফলে উৎসাহিত বিজেপি নেতাদের আস্ফালন, কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি। বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে এই সব কিছুকে পরাজিত করে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছেন মমতা। অনেকেই বলেছেন, কারণ তাঁর পক্ষে একটা প্রশান্ত কিশোর, আর তাঁর আইপ্যাকের দলবল ছিল। আর এরপরই ২০২৬ অর্থাৎ পরবর্তী বাংলা বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত প্রশান্ত কিশোরের ইন্ডিয়ান পলিটিকাল অ্যাকশন কমিটি বা আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি বৃদ্ধি করল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে দলীয় সূত্রে খবর, এই চুক্তির মূল লক্ষ্য অবশ্য ২০৪ সালের লোকসভা নির্বাচন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশান্ত কিশোরের এই প্রতিষ্ঠান কলকাতায় এতদিন যে সেট আপ-এ কাজ করত, তা অপরিবর্তিতই থাকবে। অফিস এবং ফিল্ড - দুই ক্ষেত্রেই আগের মতোই কাজ চালিয়ে যাবে আইপ্যাক। তবে নারায়নী সেনা অর্থাৎ আইপ্যাক'কে সঙ্গে পেলেও 'কৃষ্ণ'কে পাশে পাবেন কিনা মমতা, তাই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ বঙ্গ ভোটে জয় পাওয়ার পর, আজ থেকে প্রায় একমাস আগেই 'ভোট কুশলী' বা 'ব্যাকরুম বস' বা 'নির্বাচনী ম্যানেজার' হিসাবে আর কাজ করবেন না বলে দাবি করেছেন প্রশান্ত কিশোর। রাজনৈতিক কৌশলবিদ হিসাবে তিনি শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেই নন, অতীতে জগনমোহন রেড্ডি, এমকে স্ট্যালিন, অমরিন্দর সিং, অরবিন্দ কেজরিওয়াল এমনকী নরেন্দ্র মোদীর জয়েও বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি।
আরও ৫ বছর প্রশান্ত কিশোরই মমতার সারথী
একমাস আগেই তিনি ভোটকুশলীর কাজ ছেড়ে সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে, তাঁর সাম্প্রতিক মুম্বই সফর, অন্য রাজনৈতিক জল্পনার জন্ম দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হয়ে তিনি ২০২৪-এর ঘর গোছাতে শুরু করে দিয়েছেন। মুম্বইয়ে শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। জানিয়েছিলেন, বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যারা সমর্থন করেছিলেন, তাদের ধন্যবাদ জানাতে তাঁর 'শুভেচ্ছা' সফরের অংশ ছিল সেটি। সেহাতই 'ব্যক্তিগত সাক্ষাত'।
আরও পড়ুন - রহস্য বাড়ছে ধৃত চিনা যুবককে ঘিরে - শরীরে কি লুকোনো গোপন যন্ত্র, হবে বডিস্ক্যান
আরও পড়ুন - 'দিদিমনির কাছে কাননের স্থান কখনই বদলাবে না', জল্পনা উসকে পার্থ-র বাড়িতে শোভন-বৈশাখী
তবে, সেটি সত্য়িই কতটা ব্যক্তিগত সাক্ষাত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের জয়, ভারতীয় রাজনীতির সমীকরণ অনেকটাই বদলে দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধী দলগুলির মধ্যে আলোচনা চলছিল যে, বিজেপি বিরোধী জোটের মুখ হিসাবে কংগ্রেস আর চলবে না। বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের পর বিকল্প মুখ হিসাবে উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম। আর তৃণমূল কংগ্রেসও সেটা বুঝতে পারছে। তাই কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আগে পাণ্ডবদের দূত হয়ে কৃষ্ণ যেমন সমর্থন সংগ্রহের কাজে গিয়েছিলেন, প্রশান্ত কিশোরও সেই কাজটাই করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।