Mizoram Happiest State: কোন কোন কারণগুলির জন্য ভারতের সবচেয়ে সুখী রাজ্য মিজোরাম?

মানুষের মধ্যে বর্ণবৈষম্য এবং ভেদাভেদ নেই, শিশু পালনের ক্ষেত্রেও মা ও বাবার সমান ভূমিকা। সন্তানের সাফল্যের উদ্দেশ্যে মা-বাবার চাপ কম। এরকম আর কোন কোন কারণে মিজোরাম ভারতের সবচেয়ে সুখী রাজ্য হয়ে উঠেছে? 

Web Desk - ANB | Published : Apr 29, 2023 11:50 AM IST / Updated: Apr 29 2023, 10:57 PM IST

ভারতের সবচেয়ে সুখী রাজ্য হিসেবে সম্প্রতি ঘোষিত হয়েছে মিজোরাম। গুরুগ্রামের ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক রাজেশ কে পিলানিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি সমীক্ষা অনুসারে এই ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর গবেষণায়, তিনি এই রাজ্যটিকে ভারতের সবচেয়ে সুখী রাজ্য বলে ঘোষণা করার পাশাপাশি সবচেয়ে সুখী হওয়ার কতগুলি কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। প্রফেসর পিলানিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, মিজোরামের সুখের সূচকটি ছয়টি প্যারামিটারের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যার সঙ্গে কাজ-সম্পর্কিত সমস্যা, পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক সমস্যা এবং জনহিতৈষী কার্যকলাপ, সুখ, ধর্ম এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর COVID-19 এর প্রভাব, সবকিছুই জড়িত রয়েছে। এই কারণগুলির জন্যই মিজোরাম ভারতের সবচেয়ে সুখী রাজ্য।

রিপোর্ট অনুযায়ী, মিজোরামে সফলভাবে স্বাক্ষরতার হার অর্জন করেছেন সমস্ত মানুষ, অর্থাৎ পুরো ১০০ শতাংশ মানুষ। এর দ্বারা এটাই প্রমাণ হয়েছে যে, এখানকার ছেলেমেয়েরা খুব চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও নিজেদের দক্ষতা এবং ক্ষমতা বিকাশের সুযোগ পায়। এই রাজ্যটি ভারতের দ্বিতীয় রাজ্য, যেখানে শতকরা একশো ভাগ মানুষ স্বাক্ষরতা অর্জন করেছেন।

উদাহরণস্বরূপ দেখা যায়, মিজোরামের লংটলাই জেলা। যেটি একসময় রাজ্যের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া এবং দুর্যোগ-প্রবণ এলাকা ছিল, এখন সেই জেলা উন্নয়নের একটি রোল মডেল হয়ে উঠেছে এবং এটি 'কান সিকুল, কান হুয়ান' (আমার স্কুল, আমার খামার) ধারণার জন্য সুপরিচিত হয়ে উঠেছে। আইএএস অফিসার শশাঙ্ক আলা এই প্রোগ্রামটি চালু করেছিলেন যখন তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, অসম থেকে আসা শাকসবজি এবং ফলগুলি প্রায়শই পচে যায় এবং স্থানীয় মানুষজন সেই ফল বা সবজি খেয়ে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শিশুরা খারাপ খাবারের জন্য ভুগছিল, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা অপুষ্টিতে আক্রান্ত হচ্ছিল সবচেয়ে বেশি।.এই সমস্যাটির সমাধান করার জন্য, তিনি স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের সাথে এই প্রোগ্রামটি শুরু করেছিলেন। তিনি শিশুদের একটি দল তৈরি করেছিলেন এবং তাদের বিভিন্ন ব্যাচে ভাগ ভাগ করে দিয়েছিলেন, যাতে প্রতিটি শিশু প্রত্যেক সপ্তাহে কমপক্ষে এক ঘন্টা করে 'নিউট্রিশন গার্ডেন' করার সময় পায়।

মিজোরাম রাজ্যটি মিজোসের ভূমি নামেও পরিচিত। তরুণ প্রজন্মের তারুণ্যের কারণেও এই রাজ্য সুখের সূচকে শীর্ষ স্থানে রয়েছে, যা পড়াশোনার প্রতি অত্যন্ত অনুপ্রাণিত। মিজো সম্প্রদায়ের নারী ও যুবকরা, লিঙ্গ নির্বিশেষে, অল্প বয়স থেকেই আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনের প্রবণতা রাখে এবং তারা সমস্ত কাজকে সমান বলে মনে করে। এই রাজ্যে লিঙ্গ বৈষম্যের ঘটনা খুবই কম এবং এই রাজ্য ভারতে একটি উদাহরণ হিসেবে কাজ করে, যা থেকে অন্যান্য রাজ্যগুলিও শিক্ষা নিতে পারে। শিশুদের প্রতিপালন করার ক্ষেত্রে এই রাজ্যে কোনও নারী-পুরুষ ভেদাভেদ নেই। এই কারণটিও সুখের সূচকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, এই অঞ্চলে পড়াশোনার সাফল্য এবং জীবনে কোনও কাজ করার জন্য সন্তানদের ওপর বাবামায়েদের চাপ তুলনামূলকভাবে কম। সর্বোপরি, মিজোরাম রাজ্যে মানুষের মধ্যে বর্ণবৈষম্য এবং ভেদাভেদ প্রায় নেই বললেই চলে।

এই রাজ্যে ছাত্রছাত্রীদের মতে, তাদের শিক্ষকরা তাদের সেরা বন্ধু এবং শুধুমাত্র শিক্ষকরা তাদের বন্ধুই নন যাঁদের সাথে যেকোনও কথা মন খুলে শেয়ার করা যায়, শিক্ষকরা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও ভীষণভাবে সাহায্য করেন। এই রাজ্যে মানুষের সমাজ যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ। কারণ বেশিরভাগ লোকজন আঞ্চলিক গির্জা এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে সামাজিকীকরণ গড়ে তোলেন খুব সহজে। মিজো সোসাইটি তরুণ প্রজন্মকে নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার বোধও প্রদান করে। বেশিরভাগ ব্যক্তি জীবনের কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়লে, যেমন কর্মজীবনের ব্যর্থতা, আর্থিক সমস্যা, বিবাহবিচ্ছেদ ইত্যাদির মুখে পড়লে নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে আসার বিকল্প রয়েছে।

মিজোরাম ভারতের উত্তর-পূর্বের একটি চমৎকার রাজ্য। প্রচুর হ্রদ, পাহাড়, সবুজে ঘেরা বনভূমি দিয়ে এই রাজ্য পরিপূর্ণ। যে কোনও মানুষের জন্য মিজোরাম সফর নিশ্চিতভাবে স্মরণীয় এবং সমৃদ্ধ ভ্রমণ হতে পারে।

আরও পড়ুন-

বৃষ্টি দেখে নিশ্চিন্ত হবেন না একেবারেই, মে মাসে ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহের সতর্কতা দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর
জন্ম দেওয়া থামছেই না! সাড়ে পাঁচশোরও বেশি সন্তানের জন্ম দিয়ে আদালতের কোপে নেদারল্যান্ডসের ব্যক্তি

Viral News: মেট্রোর ভেতর বসে বসে হস্তমৈথুন করে চলেছেন এক যুবক! ভাইরাল ভিডিও নিয়ে তোলপাড় দিল্লি

Share this article
click me!