সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাণক্য ছিলেন তিনি। মোদীর রথের সারথী যেমন অমিত শাহ, দুই যুগের বেশি সময় সেই ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন মুকুল রায়। অতীতে ফিরে তাকিয়ে আজ তাঁর মনে হচ্ছে, সে সময়ের সব সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। সিঙ্গুরের মতো আন্দোলন যা তৃণমূলকে গদিতে পৌঁছে দিয়েছিল এক লহমায়, ৩৪ বছরের বাম সরকারকে ভূলুণ্ঠিত করে দিয়েছিল এক ঝটকায়, তাঁকেই 'ভুল' বলছেন মুকুল রায়। ১১ বছর পরে তাঁর এই নতুন স্বীকারোক্তি তুফান তুলছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠছে একে কি বিলম্বিত বোধোদয় বলা হবে নাকি বলা হবে রাজনৈতিক অন্তর্ঘাত?
এদিন দিল্লিতে দার্জিলিং-এর কাউন্সিলরদের যোগদানের মঞ্চে কোনও পূর্বাভাস ছাড়াই সেই এক যুগ আগের ঘটনা তুলে আনেন মুকুল রায়। বলেন, সেদিনের আন্দোলনে আমিও শরিক ছিলাম, এত বছর পরে ভুল স্বীকার করছি। সেই সময়ে টাটার ওই কারখানা হলে আরও অনেক শিল্পগোষ্ঠী সিঙ্গুরে আসত। বেকারত্বের বাজারে রাজ্যের ছেলেরা চাকরি পেত।
প্রসঙ্গত এবার লোকসভায় সিঙ্গুরে তৃণমূলকে ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। শুধু সিঙ্গুরেই ১৭ হাজার ভোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
আরও খবর- মুকুলের খেলা চলছেই, এবার দার্জিলিং পুরসভা দখল করল বিজেপি
মুকুল রায়ের বক্তব্যের পরে এদিন তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই বলছেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলের সিপিএম মডেলে মানুষের মন ছুঁতে চাইছেন মুকুল। সেই বার্তা আগেই লকেট দিয়ে রেখেছেন। অন্য দলের বক্তব্য, মুকুলের বর্তমান দলও সেদিন সিপিএম বিরোধীতার নামে সিঙ্গুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে সমর্থন করেছিল। এখন আরও পালে হাওয়া পেতে অন্তর্ঘাতের রাস্তা বেছে নিচ্ছেন মুকুল রায়। এই তাঁর নয়া স্ট্র্যাটেজি।
প্রসঙ্গত পুরসভা দখলের ঝড় চলছে তাঁর নেতৃত্বে। সম্প্রতি দার্জিলিং পুরসভা দখল করে নিল বিজেপি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মোট সতেরো জন কাউন্সিলর দিল্লিতে বিজেপি-তে যোগ দেয়। এর ফলে দার্জিলিং পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যায় বিজেপি।