কবির কথায় ভালবাসা নিরন্তন। তারই যেন প্রমাণ দিয়ে চলেছে ধ্বংসের বালেশ্বের রেললাইন। যেখানে থরে থরে মৃতদের সাজান ছিল কাল পর্যন্ত, সেখানেই পড়ে রয়েছে প্রেমের কবিতা লেখা পাতা।
ওড়িশার বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার আজ তৃতীয় দিন। বহস্পতিবার সন্ধ্যের সময় তিনটিট্রেনের সংঘর্ষ হয়। যারমধ্যে দুটি যাত্রীবাহী দূরপাল্লার ট্রেন- করমণ্ডল ও যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। একটি বাংলা ছেড়ে যাচ্ছিল। অন্যটি বাংলায় আসছিল। যাইহোক ওড়িশার বালাসোরের দুর্ঘটনা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এই রাজ্যের রাজনীতির উত্তাপ ছড়িয়ে জাতীয় রাজনীতিতে। কিন্তু মৃত্যুপুরী বালেশ্বরের রেললাইন নাম না জানা কবির কবিতার খাতার ছেঁড়া পাতা আকঁড়ে ধরে রেখেছে।
কবির কথায় ভালবাসা নিরন্তন। তারই যেন প্রমাণ দিয়ে চলেছে ধ্বংসের বালেশ্বের রেললাইন। যেখানে থরে থরে মৃতদের সাজান ছিল কাল পর্যন্ত, সেখানেই পড়ে রয়েছে প্রেমের কবিতা লেখা পাতা। উদ্ধাকরারী দলেপ কথায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একটি ছিন্নভিন্ন কোটের পাশের ট্র্যাকের ওপর পড়েছিল দুর্ঘটনাগ্রস্তদের অনেক জিনিস। তারই মধ্যে ছিল বাংলায় কবিতা লেখা একটি পাতা। দোমড়ানো মোচড়ানো অবস্থায়।
'অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়। ছোট ছোট গল্পথেকে ভালবাসা সৃষ্টি হয়।' একটা নয় আরও লেখা রয়েছে 'ভালবাসা দিয়ে তাকে চাই সর্বদা আছো তুমি আমার মনের সঙ্গে'। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ছবি। এগুলি দেখে মন খারাপ নেটিজেনদের। অনেকেই বলেছে জীবন বড়ই নিষ্ঠুর।
দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে দীর্ঘ সময়- কিন্তু এখনও কেউ কবিতার খাতা সম্পর্কে কোনও দাবি করেনি। কবি সম্পর্কেও কোনও দাবি কেউ জানায়নি। তাই প্রেমের কবিতার খাতাও তার মালিকের মত অজানা ভাগ্যের অপেক্ষায় প্রহর গুণছে। তেমনই জানিয়েছেন স্থানীয় এক পুলিশ কর্তা।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস এই রাজ্য থেকে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলির মধ্যে পড়ে। এই ট্রেন পডুয়া, পরিযায়ী শ্রমিক, অসুস্থরা যেমন যাতায়াত করে তেমনই পর্যটকরাও যান। কবিতার খাতার মালিকের কোনও হদিশ নেই। পুলিশও জানে না কবিতার খাতার মালিক বেঁচে আছে না মারা গেছে। এই অবস্থায় যার কথা মনে করে এই লাইনগুলি লেখা হয়েছিল তিনি কি জানতে পেরেছেন তাঁর আপনজনের পরিণতি ? এই নিয়েও আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছেন অনেকে। অনেকেই বলছেন প্রেমের মৃত্যু হয় না।
আজই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, দুর্ঘটনার কারণে বাংলার বাসিন্দা এমন ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন রাজ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ২০৬ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ওড়িশার হাসপাতালে ৭৬ জন বাংলার বাসিন্দা ভর্তি রয়েছে। তিনি রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ক্ষতিপুরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুনঃ
'আমি কোনও বাজে কথা বলিনি', কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে জ্ঞানেশ্বরীর পাল্টা গোধরা তোপ মমতার
From The India Gate: সিপিএম নেতার ৫০ লক্ষ টাকার গাড়ি! প্রশ্ন উঠলেও দল নীরব