প্রধানমন্ত্রী ঘটনাস্থল থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আহতদের এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার ওড়িশার বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি কটকের হাসপাতালেও আহতদের সঙ্গে দেখা করবেন। এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, দুর্যোগ ত্রাণ বাহিনী এবং রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। সরসার যাবতীয় সহযোগিতা করবে বলেও জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ঘটনাস্থল থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আহতদের এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার যাতে কোনও অসুবিধের সম্মুখীন না হয় ও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে প্রয়োজনীয় সাহয্য পায় তা তিনি নিজে দেখবেন। হাসপাতালে গুরুতর আহতদের সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। ভূবনেশ্বর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে বালাসোর জেলার বাহানাগা বাজার স্টেশন। ঘটনাস্থলের কাছে প্রধানমন্ত্রীকে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার নিয়ে যায়। তিনি দুর্ঘটনায় আহতদের ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে কথা বলেন। আগেই দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন।
অন্যদিকে এদিন করমণ্ডল এক্সপ্রেস- যশবন্তপুর ও মালগাড়ির সংঘর্ষে আহত যাত্রীদের দেখতে ওড়িশায় যান। সেখানে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টানায়েক ও রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পরে রেলের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। পুনরুদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও হাওড়া-যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলে দিল এলএইচবি কোচের নিরাপত্তা নিয়ে। আধুনিক প্রযুক্তির এলএইচবি কোচে অত্যান্ত নিরাপদ বলেও দাবি করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরেই দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে যখন মৃতের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়েছে তখনই আধুনিক প্রযুক্তির কোচের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহতাও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। একাধিক রেল কর্তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন গত ২০ বছরে এমন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা তারা দেখেননি।
রেল কর্তাদের একাংশের দাবি এলএইচবি রেকের কামরা লাইনের দুই পাশে চড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনা ঘটে ক্রস পুল এফেক্টের ফলে। কোনও ট্রেন তাই লাইন চ্যুত হলে সেই ট্রেনের চালকের দায়িত্ব থাকে পাশের লাইনে আসা ট্রেনের চালককে আগেই সতর্ক করা। সেই কারণে প্রত্যেক চালকের কাছে ১০টি করে ডেটোনেটর, দুটি করে ফিউসি বা বারুদযুক্ত রংমশাল থাকে। ডেটোনেটর ফাটিয়ে সতর্ক করার সময় না থাকলে দ্রুত মশাল জ্বালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার কবলে পড়া যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের চালক এই কাজের সময় সময় পেয়েছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও রেল কর্তাদের একটি অংশের দাবি এলএইচিবি কোচ সম্পূর্ণ নিরাপদ। দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ হলে মৃত্যু অনেক কম হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে রেলকর্তরা দুটি ট্রেনের স্পিডকেই দায়ী করেছেন।
আরও পড়ুনঃ
মৃত্যুপুরী বালাসোর, করমণ্ডল-যশবন্তপুর-মালগাড়ির ধাক্কায় দুমড়ে যাওয়া কামরায় ঝুলছে মানুষের হাত-পা
কতটা সুরক্ষিত আধুনিক LHB কোচ? করমণ্ডল - যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর উঠছে একাধিক প্রশ্ন