আইএনএক্স মামলায় তিহার জেলে বিচারাধীন বন্দি দেশের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। বিচারাধীন বন্দি হিসেবে চিদম্বরমের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১৪৪৯। তবে জেলে শুরু থেকেই নাকি বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁকে। প্রথমত খাবারের ক্ষেত্রে, চিদম্বরম রুটির পরিবর্তে ডাল-ভাতই বেশি পছন্দ করছেন বলে জানা গিয়েছে।
এছাড়া আরও কিছু বিষয় নিয়ে নাকি বেশি বিরক্ত তিনি, যার মধ্যে অন্যতম গরম এবং দুর্গন্ধ। তিহার জেলের অতিরিক্ত কর্মকর্তা আইজি রাজকুমার জানান, কিছুদিন আগেই যেখানে চিদম্বরম রয়েছেন, সেই স্থান তিনি পর্যবেক্ষণ করেন, তখন দুর্গন্ধ ছিল না। কিন্তু কোনও বন্দি কোনও বিষয়ে অভিযোগ জানালে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। দুর্গন্ধ নিয়ে এখনও চিদম্বরম জেল প্রশাসনের কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি।
তিহার জেলে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল, কাঠ-খড় পুড়িয়েও দেখা মিলল না চিদম্বরমের
সূত্রের খবর, তিহারের শুধু এই জেল নয়, অন্যান্য জেল থেকেও দুর্গন্ধ বের হওয়া মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পিছনে কারণ হিসেবে বন্দি সংখ্যা বৃদ্ধিকে দায়ি করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে সাত নম্বর জেলের বন্দিধারণ সংখ্যা ৩৫০, কিন্তু সেখানে প্রায় ৬৫০ বন্দি রয়েছে। বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্ত দুধরণের বন্দিই সেখানে রয়েছে।
কি খাচ্ছেন চিদম্বরম?
বিভিন্ন সংবাদ সূত্রের খবর অনুযায়ী, জেলে থাকলেও চিদম্বরমের জীবনযাপনের টাইম টেবিল একইরকম আছে। তিনি এক সময়ে ঘুম থেকে ওঠেন এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে যান। খাবারও খান নির্দিষ্ট সময়ে। জেলের মধ্যে তৈরি খাবারই তিনি খান। কিন্তু শোনা গিয়েছে রুটি একেবারেই খেতে পছন্দ করছেন না চিদম্ববরম। তার থেকে বেশি ভালো খাচ্ছেন ডাল-ভাত। চা-ও খান তিনি। জেলে আসার পর থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি জেল প্রশাসনের কাছে কোনও বিষয়ে দাবি জানাননি।
তিহারে প্রথম রাত কাটল চিদম্বরমের, এর আগে কোন কোন নেতা ছিলেন এই জেলে, দেখে নিন একনজরে
তবে তাঁকে যখন তাঁর সেল থেকে বাইরে নিয়ে আসা তখন খেয়াল রাখা হয় যাতে অন্য বন্দিরা সে সময় তাদের ওয়ার্ড বা সেল থেকে না বের হয়। চিদম্বরমের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আরও জানা যাচ্ছে, এই একই জেলে রাখা হয়েছে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিককে। তবে চিদম্বরম এবং ইয়াসিন মালিকের সেলের মধ্যে দূরত্ব অনেকটাই।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই জানা যায়, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ বাড়ার ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁকে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিহার জেলে রাখা হবে। গত ২১ অগাস্ট এক নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গ্রেফতার হওয়ার পর ১৫ দিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এরপর সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাঁর আইনজীবী কপিল সিব্বলের তরফে অনুরোধ করা হয়, তাঁকে যেন গৃহবন্দি করে রাখা হয়, কিন্তু যেন তিহার জেলে না পাঠানো হয়। যদিও সেসব কিছুই কার্যত গুরুত্ব পায়নি।