গত কয়েক বছরে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে পাকিস্তানে। এরমধ্যে পাক প্রধানমন্ত্রীর তখতেও এসেছে পরিবর্তন। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়েছেন ইমরান খান।
ভারতের সঙ্গে হয়ে গেছে তিন-তিনটে যুদ্ধে, ফলত আরও নিঃস্ব হয়ে গেছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। দারিদ্রতার ফলে দেশ জুড়ে বেড়েছে বেকারত্ব। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সৎ ভাবে বিশদে আলোচনায় বসতে চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি বহুল প্রচারিত ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য় এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এ একটি প্রতিবেদন বেরিয়েছে যেটিতে প্রখ্যাত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক শাহজাদ চৌধুরী দাবি করেছিলেন যে, পাকিস্তান যেখানে ক্রমশ আরও গভীরতর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য়ে তলিয়ে যাচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী শরিফকে গোটা পৃথিবীর কাছে কার্যত ‘ভিক্ষে’ চাইতে হচ্ছে, সেখানে মোদীর শাসনে দিন দিন ভারতের উন্নতি হচ্ছে।
এর পরেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্য়মকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জানান, 'আমি ভারত প্রশাসন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই বার্তা দিতে চাই যে, কাশ্মীরের সমস্যাগুলি নিয়ে আমাকে বিশদে এবং সৎ ভাবে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হোক। এক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ ভাবে অগ্রগতি করা অথবা ঝগড়া করে নিজেদের সময় এবং সম্পত্তি ধ্বংস করা, সবটাই আমাদের উপরে।' তিনি আরও বলেন, 'ভারতের সঙ্গে আমাদের তিনটি যুদ্ধ হয়েছে এবং তার জেরে আমাদের সমস্য়া, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, সবকিছুই বেড়েছে। এর থেকে আমরা শিক্ষা পেয়েছি এবং এখন আমরা শান্তি চাই। কিন্তু সবার আগে আমাদের আসল সমস্য়াগুলোর সমাধান করা দরকার।’
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ শাহবাজ চৌধুরী নিজের দেশের প্রশাসনকে সতর্কবার্তা দিয়ে লেখেন, অবিলম্বে পাকিস্তানের অর্থনীতির হাল ফেরানোর ব্য়বস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। কারণ বিশ্বের দুই তাবড় শক্তিধর দেশ আমেরিকা এবং রাশিয়া, দুজনেই ভারতের পাশে রয়েছে। এটা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অভ্যুত্থান। তাঁর এই মন্তব্যের পরেই পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, ভারতের মতো পাকিস্তানও পরমাণু শক্তিধর দেশ। ফলে যুদ্ধ বাঁধলে দুটি দেশেরই ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে। এই সরগরম পরিস্থিতিতে সুস্থ আলোচনার মধ্যে দিয়ে দুই দেশের ভেতরকার শত্রুতা নিকেশ করতে চেয়েছেন তিনি। তবে, একথা অবশ্যই উল্লেখ্য যে, ভারতের পক্ষ থেকে সীমানার দ্বন্দ্ব নিয়ে একাধিকবার পাকিস্তানকে সতর্ক করা হয়েছে। সমগ্র ভারত জুড়ে এই মুহূর্তে নির্বাচনের আবহও বর্তমান। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই আলোচনার আহ্বানে কতটা সাড়া দেন, তার দিকেই এখন তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।
আরও পড়ুন-
‘তৃণমূলি সন্ত্রাস’-এর পরেও বাংলায় বিজেপির লড়াই প্রশংসনীয়: দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করতে মোদীর বার্তা
রাজ্যের সমস্ত উপাচার্যকে নয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের আহ্বান, মঙ্গলবার রাজভবনে বৈঠক