চিনের মতই সীমান্ত নীতি নিয়ে শি জিংপিং-এর মোকাবিলা করতে প্রস্তুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই কারণেই সীমান্তে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে ভারতীয় প্রতিরক্ষাকে।
সীমান্তে চিনা আগ্রাসন ক্রমশই বাড়ছে। লাদাখ থেকে অরুণাচল পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলকায় ভারত চিনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে । এই অবস্থায় চিনার আগ্রাসন ও সামান্তে শক্তি বৃদ্ধি ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটা বড় ঝুঁকি। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চিনা আগ্রাসন মোকাবিলায় তিনটি কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে সূত্রের খবর। সীমান্ত ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো। একটি প্রাণবন্ত গ্রামের পরিকল্পনা চালু করা। ও শিনকুন লা টানেল চালু করা। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সিদ্ধআন্তগুলি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমা এলাকায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা ও প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং-এর নতুন দুর্গ হিসেবে পরিচিত তিব্বত নীতির মোকাবিলার জন্য ত্রিমুখী পদক্ষেপ।
আটিবিপি ব্যাটালিয়ান বৃদ্ধি
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার চিনা সীমান্ত এলাকায় আইটিবিপি জওয়ানের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা তিব্বত ও জিনজিয়াংয়ের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণে রেখায় সীমান্ত নীতির প্রতিউত্তর বলা যেতে পারে। চিন যেমন সীমান্ত এলাকায় রক্ষী, জেলা পুলিশ ও পিএলএ রিজার্ভ -সহ সীমান্ত গ্রাম তৈরি করেছে, তেমনই কাজ হবে আইটিবিপি জওয়ানদের। আইটিবিপির সাতটি ব্যাটালিয়নের প্রায় ০৪ হাজারও জওয়ান রাখা হবে। এক সীমান্ত এক গ্রাম নীতির অনুসারী ৩৪৮৮ কিলোমিটার চিনা সীমান্ত এখন থেকে প্রায় ৫৬ ব্যাটালিয়ান সেনা মোতায়েন থাকবে। নতুন ব্যাটালিয়নগুলি ৪৭টি সীমান্ত পোস্টের দায়িত্বে থাকবে। যাক মধ্যে একটি লাদাখে, আর একটি উত্তরাখণ্ডে। বাকি পোস্টগুলি তৈরি করা হবে অরুণাচলপ্রদেশের সংবেদনশীল এলাকায়। অরুণাচলপ্রদেশের ডিআইজি পদমর্যাদার নেতৃত্বে একটি সেক্টরও থাকবে। এই পোস্টগুলিতে খাবার, অস্ত্র , গোলাবারুদের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে জ্বালানি তেলও মজুদ থাকবে।
সীমান্ত গ্রাম
অরুণাচলপ্রদেশ সেক্টরের ফাঁক মেটানোর জন্য আইটিবিপি ব্যাটালিয়নগুলির জন্য ৪৮০০ কোটি টাকার ভাইব্রেন্ট ভিলেজস্কিম রয়েছে। যা ২৫০০ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে। সীমান্তের গ্রামগুলির শেষ পর্যন্ত এই টাকা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। স্থানীয় তরুণদের কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি বাণিজ্যের ওপরেও জোর দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সিদ্ধান্ত পাথব্রেকিং- কারণ জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সীমান্তবর্তী গ্রামের তরুণরা কর্মসংস্থানের জন্য গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসছে আর সেই কারণে সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রতিরক্ষা লাইন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
সিয়াচেন হিমবাহ ও পাকিস্তান
তৃতীয় সিদ্ধান্তের মধ্যে সিয়াচেন হিমবাহ ও পাকিস্তানের সঙ্গে এলএসি ও প্রকৃত গ্রাউন্ড পজিশন লাইন - দুটির জন্য সীমান্ত প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করা। মানালি - অটল টানেলের মাধ্যমে হিমাচলপ্রদেশ থেকে লাদাখ পর্যন্ত সবরকম আবহাওযার মধ্যেই যোগাযোগ বজায় রাখা যাবে। দারচা-শিঙ্কুন লা সুড়ঙ্গ-পদুম-নিমু অক্ষ পশ্চিম জানন্সকার থেকে পূর্বে হিমালয় সংলগ্ন এই রাস্তা ও টানেলটি শত্রুদের আর্টিলারি ও লক্ষবস্তু করা যাবে না। এই রাস্তাকে গুরুত্ব দিয়ে রক্ষা করতে হবে। তারজন্য উভয়প্রাপ্তেই রক্ষী মোতায়েন করতে হবে। সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে সাসের লাএর অধীনে থাকে ১২ কিলোমিটার টালেন চালু করা। যা দৌতল বেগ ওল্ডির সঙ্গে বিকল্প রাস্তা হিসেবে যোগাযোগ তৈরি করবে। পাশাপাশি দিল্লি থেকে অরুণাচলপ্রদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়ানোর কথা ভাবছে নতুন দিল্লি।