দেশে আনলক ওয়ান শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিনই সংক্রমণ বেড়ে চলেছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ফের একবার বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার ২ দিন ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলবেন তিনি। ১৬ মে অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রথম বৈঠক। ১৭ মে বৈঠক হবে বাংলা সহ আরও কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে। কিন্তু জানা যাচ্ছে, লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার ভবিষ্যৎ কৌশল আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর ডাকা সেই ভিডিয়ো কনফাররেন্সে বলার সুযোগই পাচ্ছেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যগুলিকে দু’দফায় ভাগ করে আজ, মঙ্গল ও কাল, বুধবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলা রয়েছে কালকের বৈঠকের সূচিতে। এই বৈঠকেবক্তার তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু,কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীরা। রয়েছেন পাঞ্জাব,বিহার এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীদের নামও। বক্তার তালিকায় একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকলেও নেই বাংলার নাম। সোমবার নবান্নের হাতে বক্তা হিসেবে যে সব রাজ্যের নাম এসেছে, তাতে অন্তত বাংলার নাম নেই। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে থাকা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে লাগাতার সাফল্য সেনার, সোপিয়ানে সাতসকালেই এনকাউন্টারে খতম ৩ জঙ্গি
মুখ্যমন্ত্রী বুধবারের বৈঠকে না থাকলে, সে ক্ষেত্রে প্রোটোকল অনুযায়ী, রাজ্যের কোনও আধিকারিক প্রতিনিধি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীরডাকা ভিডিও কনফারেন্সে হাদির থাকতে পারেন। কিন্তু বাংলার করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও কেন মুখঅযমন্ত্রী বলার সুযোগ পাচ্ছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।
এর আগেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে খুব কম কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করছে কেন্দ্রীয় সরকার, মোদীর সঙ্গে বৈঠকে এমনই অভিযোগ করে রুদ্রমূর্তি ধারণও করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারও তাঁর নাম বক্তার তালিকায় না থাকায় তাই কেন্দ্র করোনা-যুদ্ধে তাদের পছন্দের রাজ্যগুলির প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: আজও কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টি, সপ্তাহ জুড়েই দক্ষিণবঙ্গে চলবে ভারী বৃষ্টি
কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, এই নিয়ে ষষ্ঠবার প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। সব মুখ্যমন্ত্রীই কোনও না কোনও বার বলার সুযোগ পেয়েছেন। যাঁরা সুযোগ পান না, তাঁদের সকলকেই প্রধানমন্ত্রী চিঠি লিখে মতামত জানানোর অনুরোধ করেন। চতুর্থ দফার লকডাউন শেষের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। কেন্দ্রীয় সূত্রের আরও বক্তব্য, বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে যে রাজ্যগুলিকে বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এ বার, তার মধ্যে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু বা কর্নাটকে করোনা সংক্রমণ এখনও ঊর্ধ্বমুখী। আবার ওই রাজ্যগুলি থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকেরা সব চেয়ে বেশি সংখ্যায় ফিরেছেন। পাশাপাশি, বিহার, উত্তরপ্রদেশ বেশি সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়েছে। তাই রোগ ও অর্থনীতির প্রশ্নেই রাজ্যগুলিকে বাছা হয়েছে। এর মধ্যে অন্য কোনও ‘সমীকরণ’ খোঁজা উচিত নয়।