বিহার মডেলেই দিল্লিতে বাজিমাত প্রশান্তর, আরও নিশ্চিন্ত হলেন মমতা

  • দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আপ-এর একতরফা জয়
  • আপ ঝড়ে উড়ে গেল বিজেপি
  • কাজে এলো না বিজেপি-র মেরুকরণের রাজনীতি
  • উন্নয়নের উপরে জোর দিয়ে সফল আপ
  • আপ-এর সাফল্যের কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে প্রশান্ত কিশোরকে

জেডিইউ-এর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনাও চলছে। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে ভোট জয়ের অঙ্ক ছকে দিতে তাঁর যে জুড়ি মেলা ভার, দিল্লিতে আবারও  তা বুঝিয়ে দিলেন প্রশান্ত কিশোর। আপ-এর নির্বাচনী প্রচার রণনীতি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন প্রশান্তই। দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল-এর দলের হয়ে তাঁর এই সাফল্য নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও হাসি ফোটাবে। কারণ দিল্লির মতোই বাংলাতেও বিজেপি-কে রুখতে প্রশান্তের উপরেই ভরসা রেখেছেন তৃণমূলনেত্রী। 

দিল্লিতে যে আপ সরকারের প্রত্যাবর্তন ঘটছে সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন বলেই ভোটের ফলপ্রকাশের একদিন আগেই দিল্লিবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন প্রশান্ত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তাঁর পরামর্শেই বিজেপি-র মেরুকরণের রাজনীতির ফাঁদে পা না দিয়ে উন্নয়ন এবং জনমুখী প্রকল্পের উপর আস্থা রেখেছিল আপ। তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। 

Latest Videos

এ দিন দিল্লিতেে বিজেপি-র হার নিশ্চিত হওয়ার পরই টুইট করে প্রশান্ত কিশোর লেখেন, 'ভারতের আত্মাকে রক্ষা করার জন্য দিল্লিবাসীকে ধন্যবাদ।'

অনেকেই প্রশান্তের এই কৌশলের সঙ্গে বিহারে গত বিধানসভা নির্বাচনের মিল খুঁজে পাচ্ছেন। সেখানেও প্রশান্তের ফর্মুলাতেই নীতিশ- লালুর মহাজোট বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে রুখে দিয়েছিল। সেবারও মেরুকরণের রাজনীতির নিয়ে বিজেপি-র প্রচারের পাল্টা সামাজিক ইস্যু এবং সাধারণ মানুষের প্রকৃত সমস্যাগুলির উপর জোর দিয়ে বাজিমাত করেছিলেন প্রশান্ত। 

দিল্লি নির্বাচনের গোটা প্রচার পর্বে বিজেপি নেতাদের মুখে সবথেকে বেশি শাহিনবাগের কথা শোনা গিয়েছে। শাহিনবাগে কেজরিওয়াল বিরিয়ানি পাঠাচ্ছেন বলেও কটাক্ষ করা হয়েছে। কিন্তু এ সবের জবাবে একটিও শব্দ করেননি কেজরিওয়াল বা তাঁর দলের নেতারা। এমন কী শাহিনবাগের দিকে পা বাড়াননি। সচেতনভাবেই শাহিনবাগের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছিল অরবিন্দ কেজিরওয়লারে দল। বিজেপি অনেক প্ররোচনা দিলেও, মেরুকরণের রাজনীতির ফাঁদে পা বাড়াননি আপ নেতা। 

আরও পড়ুন- দিল্লিতে বিজেপি-র বিপর্যয়ে উল্লসিত মমতা, ফোন করে কেজরিওয়ালকে শুভেচ্ছা

আরও পড়ুন- জয়-পরাজয় নিয়ে দার্শনিক ব্যাখ্যা, নতুন পোস্টারে মান বাঁচাচ্ছে গেরুয়া শিবির

বিজেপি বার বার কেজরিওয়াল-কে হিন্দু বিরোধী বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করে গিয়েছে দিল্লি নির্বাচনের প্রচারপর্বে। এর জবাবে মুখে কিছু বলেননি আপ নেতারা। কিন্তু বদলে যাওয়া অরবিন্দ কেজরিওয়াল-কে দেখা গিয়েছে প্রচার পর্বের শেষ দিকে। যেমন, টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে হনুমান চালিসা গাইতে শোনা যায় কেজরিওয়ালকে। আচমকাই বজরংবলির মন্দিরে যাওয়া শুরু করেন তিনি। আপ-এর সংখ্যালঘু নেতারাও আড়ালে চলে যান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পাঁচ বছর আগে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনেও একই ভাবে জেডিইউ এবং আরজেডি-র সংখ্যালঘু নেতাদের মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছিল। দু' ক্ষেত্রেই এই কৌশলের পিছনে প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্ক রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

এই প্রশান্ত কিশোরই এখন পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের হয়ে রাজনৈতিক প্রচার কৌশল ঠিক করার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই দিল্লির আপ সরকারের মতো বাংলাতেও সরকারি পরিষেবার সুফল আমজনতার কাছে পৌঁছে দিয়েই বিজেপি-র মোকাবিলা করার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে তৃণমূল সরকারের মধ্যেও। প্রশান্তের পরামর্শেই শুরু হয়েছিল 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি। আর এবারের বাজেটে তো দিল্লির আপ সরকারের আদলেই বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সঙ্গে আদিবাসী, তপশিলি, প্রবীণ নাগরিক, বেকারদের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে প্রচুর জনমুখী প্রকল্প। ফলে দিল্লিতে আপ-এর সাফল্য বাংলায় প্রশান্তের উপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থা আরও বাড়িয়ে দেবে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

ইসকনের পাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কড়া বার্তা দিলেন বাংলাদেশকে? Narendra Modi
'চুরি হবে অথচ তৃণমূলের নাম আসবে না তা হয় কখনও!' ট্যাব দুর্নীতিতে মমতাকে ধুয়ে দিলেন সুকান্ত!
Suvendu Adhikari: 'তৃণমূল বাচ্চাদের ট্যাবও খেয়ে ফেলছে' চরম কটাক্ষ শুভেন্দু অধিকারীর
'ট্যাব কেলেঙ্কারিতে মমতা ও আইপ্যাক যুক্ত' বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দু অধিকারীর | Suvendu Adhikari
হতবাক সবাই! হাওড়া স্টেশন থেকে এ কী উদ্ধার হলো, দেখুন | Howrah News Today