তাঁকে বলা যেতে পারে বিস্ময় মা। একবার-দুইবার নয়, ৩৮ বছর বয়সে ২০ বার গর্ভবতী হয়েছেন মহারাষ্ট্রের এক মহিলা। তিনি শ্রমিক হিসেবে কর্ণাটকের এক আঁখের ক্ষেতে কাজ করেন। মঙ্গলবার সেখানেই তিনি তাঁর ১৭তম সন্তানের জন্ম দেন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় শিশুটি বাঁচেনি।
লঙ্কাবাই আদতে মহারাষ্ট্রের বিদ জেলার মজলগাঁও তহসিলের বাসিন্দা। কিন্তু খরা প্রবণ বিদ জেলায় কাজের খুবই অভাব। তাই ওই অঞ্চলের হাজার হাজার পুরুষ ও মহিলা ফসল কাটার মরসুমে আঁখের ক্ষেতে কাজ করার জন্য মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অঞ্চলে অথবা প্রতিবেশী রাজ্য কর্ণাটকে পাড়ি দেন। লঙ্কাবাই-ও বর্তমানে কর্ণাটকের বেলগাঁও জেলার এক আখের ক্ষেতে কাজে করছেন।
এদিন সকালে সেই ক্ষেতে কাজ করতে করতেই হঠাৎ তাঁর প্রসব বেদনা ওঠে। সেখানেই এক শিশুকন্যার জন্ম হয়। কিন্তু জন্মের পরই ওই শিশুকন্যার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন বিদ জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. আর বি পওয়ার। যাযাবর গোপাল সম্প্রদায়ের এই মহিলা গত সেপ্টেম্বরেই প্রথমবার জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নজরে আসেন। লঙ্কাবাই তাঁদের জানিছিলেন এই নিয়ে তিনি বিশতমবারের জন্য গর্ভবতী হয়েছেন।
তারপর থেকেই তাঁর ও তাঁর গর্ভের শিশুর শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত ছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ডা. আর বি পওয়ার জানিয়েছেন গত ৮ সেপ্টেম্বর লঙ্কাবাই প্রথমবার তাঁদের কাছে চেকআপ করিয়েছিলেন। তারপর থেকে স্বাস্থ্যকর্তারা নিয়মিত তাঁর ও তাঁর গর্ভের শিশুর শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল গত ২১ নভেম্বর তাঁর বাড়ি গিয়ে জেনেছিলেন তিনি কাজের সন্ধানে কর্ণাটক চলে গিয়েছেন।
জানা গিয়েছে লঙ্কাবাই-এর মোট ১১জন সন্তান আছে। তাদের মধ্যে ৯জনই মেয়ে। তিনি ৩বার গর্ভপাত করিয়েছেন। এবং এদিনের শিশুকন্যাটিকে নিয়ে তাঁর মোট ৫ শিশু জন্মের পরই মারা গিয়েছে। ভারতে শিশুমৃত্যুর হার ক্রমে বাড়ছে। তার মধ্যে লঙ্কাবাইয়ের কাহিনি জনস্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।