বিতর্কিত কিন্তু দক্ষ প্রশাসক- এমনি ছিলেন শীলা দীক্ষিত

Published : Jul 20, 2019, 09:32 PM IST
বিতর্কিত কিন্তু দক্ষ প্রশাসক- এমনি ছিলেন শীলা দীক্ষিত

সংক্ষিপ্ত

বিতর্কিত চরিত্র, কিন্তু সঙ্কটে তিনিই ভরসা ছিলেন দিল্লি কংগ্রেসের  তাঁর অবর্তমানে এবার কোন পথে এগোবে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন  তাঁর পনেরো বছরের শাসনকালে ভোল পাল্টে গিয়েছিল দিল্লির একথা এক বাক্যে স্বীকার করেন তাঁর অতি বড় সমালোচকও

বিতর্কিত চরিত্র, কিন্তু সঙ্কটে তিনিই ভরসা ছিলেন দিল্লি  কংগ্রেসের। তাঁর অবর্তমানে এবার কোন পথে এগোবে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। তাঁর পনেরো বছরের শাসনকালে ভোল পাল্টে গিয়েছিল দিল্লির- এক বাক্যে স্বীকার করেন তাঁর অতি বড় সমালোচকও। এহেন দক্ষ প্রশাসকের বিরুদ্ধেই এক সময়   উঠেছিল একের পর এক অভিযোগ। নিজের দলের মধ্যেও এক অত্যন্ত কট্টরপন্থী 'ওল্ড স্কুল' ভাবনা বহন করতেন তিনি। প্রদেশ রাজনীতিতে অজয় মাকেনের সঙ্গে তাঁর অম্ল-মধুর সম্পর্কের কথাও সর্বজনবিদিত। 

 টানা ১৫ বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বে শীলা দীক্ষিত সৃষ্টি করেছিলেন অনন্য এক নজির। তাঁর আগে ভারতবর্ষে অন্য কোনও মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর নামের আগে টানা ১৫ বছর সরকার সামলানোর রেকর্ড ছিল না। তাঁর হাত ধরে চালু হওয়া  ভাগিদারীর মত প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। কমনওয়েলথ গেমস এবং তাকে কেন্দ্র করে দিল্লিতে মেট্রো রেলের আগমন- নিঃসন্দেহে দিল্লির মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছিল। ঠিক একই সঙ্গে কমনওয়েলথ কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ায় কংগ্রেস নেতা সুরেশ কালমদির। একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প ঢাকা পড়ে যায় কেলেঙ্কারির কালো ছায়ায়। তাঁর আমলেই দিল্লিতে বিদ্যুতের মাশুল আকাশ ছোঁয়। 

যদিও বিরোধিতাকে কোনোদিনও তেমন আমল দিতেন না শীলা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার আগে অধ্যাপিকার চাকরি ছিল তাঁর পেশা। বরাবরই তাঁর মধ্যে শিক্ষিকা সুলভ এক কড়া ধাঁচের মনোভাব খেলা করত। নিয়মানুবর্তিতা থেকে শৃঙ্খলা- এটাই ছিল শীলা দীক্ষিতের মূল মন্ত্র। দিল্লিতে, বিশেষ করে পুরনো দিল্লি অঞ্চলে বহুতল তৈরির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন তিনি। এই নিয়ে প্রবল বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন। তবুও তিনি নিজের অবস্থান থেকে একবিন্দুও নড়েননি। পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়েছিল ঐতিহাসিক নগরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট রক্ষ্যায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই সিদ্ধান্ত।
 
তাঁর পুত্র সন্দীপ দীক্ষিত-কে নিয়েও বহুবার অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছিলেন প্রবীণ এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। অভিযোগ ওঠে দিনের পর দিন পূর্ব-দিল্লি  এলাকার মানুষ দেখা পাননি তাদের  সাংসদ-এর। এমনকী, নিজের প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে একের পর এক নির্বাচনে শীলা নাকি টিকিট জোগাড় করে দিয়েছিলেন, এমন অভিযোগও শোনা গিয়েছে।
 
নির্ভয়া কাণ্ডে তাঁর অসংবেদনশিল উক্তির জন্য মুখ পোড়ে কংগ্রেসের- জনবিক্ষোভ আঁছড়ে পরে দিল্লির রাজপথে।  বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মাশুল বৃদ্ধি এবং নির্ভয়া-কাণ্ডে তাঁর প্রতি জন্ম নেওয়া ক্ষোভ-কে পুঁজি করেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির বুকে আম-আদমি পার্টির রাজনৈতিক উত্থান সফল করেছিলেন।
 
নির্বাচনে পরাজিত হয়ে শীলা কেরলের রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলান। সেখানেও বিতর্ক তাঁকে ধাওয়া করে গিয়েছে। সিপিএম নেতা কে কে মণির সঙ্গে তাঁর বাক-যু্দ্ধ অনেকক্ষেত্রেই শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছিল । 
২০১৪ সালে বিজেপি সরকার আসার পরেও তিনি রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাননি। ২০১৭ সালের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদের মুখ করে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। যদিও পরে শীলা নিজেই পিছিয়ে যান এবং কংগ্রেসকে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়। ভগ্ন-স্বাস্থ্য নিয়ে ২০১৯ সালের নির্বাচনেও দলের হয়ে কাজ করেছিলেন আজীবন কংগ্রেসী আখ্যা পাওয়া শীলা দীক্ষিত। 'আয়ারাম গয়ারাম'-দের সময় যা নিঃসন্দেহেই এক বিরল কৃতিত্ব।  
  

PREV
click me!

Recommended Stories

আধারের ফটোকপি জমা রাখা আর বাধ্যতামূলক নয়, নয়া নিয়ম আনছে কর্তৃপক্ষ, জেনে নিন বিস্তারিত
Indigo Flights Cancelled : ইন্ডিগোর বিমান বিভ্রাট অব্যাহত! চরম ভোগান্তি, আকাশপথে জট, রেলপথেই সমাধান!