বুধবার রাজ্যসভাতেও নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৯ পাস হওয়ার পর এই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করল অসমে। বুধবার রাতে ডিব্রুগড়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালের বাড়িতে ইঁট-পাথর ছুড়ল বিক্ষোভকারীরা। রাতেই অসমের তিন জেলায় মোতয়েন করা হল সেনা। গুয়াহাটির পর ডিব্রুগড়েও অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি হল কার্ফু।
ডিব্রুগড় পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পল্লভ গোপাল ঝা জানিয়েছেন, লখিনগর এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে রাতে ইঁট-পাথর ছোড়া হয়। এতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের বেশ কয়েকটি জানলার কাচ ভেঙে গিয়েছে। ঘটনার পরই পুলিশ সুপার গৌতম বোরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান। এর আগে তেজপুর হেলিকপ্টারে করে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী বিক্ষোভের কারণেই কিছু সময়ের জন্য গুয়াহাটির লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে পড়েছিলেন।
আরও পড়ুন - বন্ধ ইন্টারনেট, জারি কার্ফু, নামছে সেনা, সিএবি বিরোধী বিক্ষোভে রণক্ষেত্র অসম-ত্রিপুরা
আরও পড়ুন - যুগান্তকারী না অন্ধকারময়, দুই কক্ষেই সিএবি পাসের পরও জারি বিতর্ক
তবে, শুধু মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িই নয়, নাগরিকত্ব বিল বিরোধী বিক্ষোভকারীরা বিজেপি বিধায়ক প্রশান্ত ফুকান এবং বিজেপি নেতা সুভাষ দত্তের বাড়িতেও ভাঙচুর চালায়।
মঙ্গলবারের পর বুধবারও সারাদিন অসমের বিভিন্ন এলাকায় নাগরিকত্ব বিলের বিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। দফায় দফায় বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে জড়ান পুলিশের সঙ্গে। সেই আগুনে আরও ঘি পড়েছে লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও বিলটি পাস হয়ে যাওয়ায়। মুখ্য়মন্ত্রী ও বিজেপি নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি রাতে বিক্ষোভকারীরা চাবুয়া এবং পানিতোলা রেলস্টেশনেও ভাঙচুর চালায়। সরকারি সম্পত্তিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর ডিব্রুগড় এবং তিনসুকিয়া জেলার রেলস্টেশনগুলিতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।
বিক্ষোভের আঁচ বাড়তেই আসরে নামানো হয়েছে সেনা-কে। বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল গুয়াহাটি এবং তিনসুকিয়া ও ডিব্রুগড় জেলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু গুয়াহাটিতেই দুই কলাম সেনা পাঠানো হয়েছে। রাতেই তারা শহরে ফ্ল্যাগমার্চ-ও করে।
আরও পড়ুন - ঐতিহাসিক মুহূর্ত, দ্বিতীয় বাধাও টপকালো নাগরিকত্ব বিল, রইল বাকি রাষ্ট্রপতির সম্মতি
আরও পড়ুন - '৪৭-এর পর আরও এক স্বাধীনতার রাত, সদ্যজাত পাক হিন্দুর নাম হল 'নাগরিকতা'
সোমবার লোকসভা পাস হয়েছিল নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৯। আর বুধবার তা সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে রাজ্যসভার। ফলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে আর বাধা নেই বললেই চলে। এখন শুধু রাষ্ট্রপতির সমম্মতির অপেক্ষা।