উত্তেজনার মধ্যেই নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আজ সেখানে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দলের। ওটিং গ্রামে তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বর্তমানে সেখানে উত্তেজনা থাকায় ও আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হওয়ায়া সফর বাতিল করেছে তারা।
নাগাল্যান্ড (Nagaland) নিয়ে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছেই। যে কোনও সময়ই সেখানে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে পারে। নিরাপত্তা বাহিনীর (Security Force) বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিন দফায় সংঘর্ষে আরও ২ জন নিহত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত সেখানে মোট ১৬ জনের মৃত্যুর (Death) খবর পাওয়া গিয়েছে। পরিস্থিতি যা রয়েছে তাতে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এই উত্তেজনার মধ্যেই নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আজ সেখানে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের (TMC) একটি প্রতিনিধি দলের। ওটিং গ্রামে তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বর্তমানে সেখানে উত্তেজনা থাকায় ও আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হওয়ায়া সফর বাতিল করেছে তারা।
আজ নাগাল্যান্ডে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব (Susmita Deb), প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, শান্তনু সেন এবং ত্রিপুরা তৃণমূলের মুখপাত্র বিশ্বজিৎ দেবের। রবিবার টুইট করে নাগাল্যান্ডের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি লিখেছিলেন, ‘নাগাল্যান্ড থেকে খুব খারাপ খবর এসেছে। শোকাহত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা রইল। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’ পাশাপাশি এই ঘটনায় তদন্তের দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি। আর তারপরই একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর নেওয়া হয় দলের তরফে। তাঁদের আজ নাগাল্যান্ডে গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল।
আরও পড়ুন- AFSPA বিরোধী আন্দোলন উস্কে দিল লাগাল্যান্ডের হত্যাকাণ্ড, উঠছে আইন প্রত্যাহারের দাবি
এদিকে এখনও পর্যন্ত নাগাল্যান্ডে উত্তেজনা রয়েছে। সেই উত্তেজনা এড়াতে রবিবার ইন্টারনেট, এসএনএস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য এগুলি বন্ধ করেও সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন ধরেই নিষিদ্ধ সংগঠন ন্যাশনাল সোশালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ডের (এনএসসিএন) একটি গোষ্ঠীর সদস্যের খোঁজে ওটিংয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিল নিরাপত্তা বাহিনী। শনিবার ওই গোষ্ঠীর সদস্য ভেবে 'ভুল' করে একটি পিক-আপ ভ্যান লক্ষ্য করে গুলি চালায় বাহিনী। সেই গুলিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়। পরে জানা যায় ওই পিক-আপ ভ্যানে স্থানীয় বাসিন্দারা ছিলেন। কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। এরপর দীর্ঘক্ষণ তাঁদের বাড়ি ফিরতে না দেখে খুঁজতে বের হন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। তখনই পিক-আপ ভ্যানে তাঁরা ওই মৃতদেহগুলি দেখতে পান। এরপরই নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় সেনার দুটি গাড়ি। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। মৃত্যু হয় এক জওয়ানের। 'আত্মরক্ষায়' গুলি চালায় সেনা। তার জেরে আরও সাত নাগরিকের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- নাগাল্যান্ডের ঘটনা গণহত্যার সামিল, অসম রাইফেলসকে নিশানা বিজেপি নেতার
এরপর এই ঘটনা শোকপ্রকাশ করে টুইট করেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও। একে দুর্ভাগ্যজনক' ঘটনা বলে উল্লেখ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। শোক প্রকাশ করে টুইট করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।