নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ঘুষের টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেন। তিনি টাকার বিনিময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হেনস্থা করার কাজ করেছেন।
আবারও প্রকাশ্যে বিজেপি -তৃণমূল কংগ্রেস দ্বৈরথ। বিজেপির নিশিকান্ত দুবে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলেছে। তিনি স্পিকার ওম বিড়লার পাশাপাশি এই আইনজীবী একই অভিযোগ জানিয়ে সিবিআই-কেও একটি চিঠি দিয়েছেন। পাল্টা সরব হয়েছেন মহুয়া মৈত্র। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে যেকোনও ধরনের তদন্তকে সরাসরি স্বাগত জানিয়েছেন।
নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ঘুষের টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেন। তিনি টাকার বিনিময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হেনস্থা করার কাজ করেছেন। দুবের অভিযোগ আদানি ইস্যুতে প্রশ্ন করার জন্য ঝাড়খণ্ডের ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা নিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। এই কাজের মধ্যে দিয়ে মহুয়া মৈত্র সংসদের অবমাননা করেছেন। এটি একটি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র বলেও সওয়াল করেন। এই মর্মে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজের জন্য নিশিকান্ত দুবে ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছেন। নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সংসদ প্রায় ২ কোটি টাকা, দামি আইফোন ঘুষ হিসেবে পেয়েছেন। পাশাপাশি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মহুয়াকে ব্যবসায়ী ৭৫ লক্ষ টাকাও দিয়েছেন।
মহুয়ার বিরুদ্ধে আইনজীবী অনন্ত দেহাদরির অভিযোগ হল, দুবাইয়ের ভারতীয় ব্যবসায়ী দর্শন হিরনান্দানির থেকে টাকা আর উপহার নিয়েই লোকসভায় ৬১টির মধ্যে ৪৬টি প্রশ্ন করেছিলেন মহুয়া। এই প্রশ্নগুলি সবই আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।সাংসদ ব্যবসায়ীকে তার লোকসভা অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেস দিয়েছিলেন যেখানে প্রশ্নগুলি সরাসরি হিরনন্দানি বা মহুয়া তার নির্দেশে পোস্ট করেছিলেন। এমনটাও দাবি করা হয়েছে।
যাইহোক এই বিষয়ে মহুয়া মৈত্র রীতিমত সরব হয়েছেন। তিনি একসঙ্গে আদানি গোষ্ঠী, বিজেপি ও আইনজীবীকে নিশানা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বলেছেন,'আদানি গোষ্ঠী যদি আমাকে চুপ করানোর জন্য বা আমাকে টেনে নীচে নামানোর জন্য সঙ্ঘবাদী আর ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালাদের মিথ্যা দলিলে বিশ্বাস করবে বলে ঠিক করে থাকে, তবে আমি বলব, আপনাদের সময় নষ্ট করবেন না বরং আইনজীবীদের ভাল কাজে ব্যবহার করুন।' তিনি আরও বলেছেন, 'এই সব ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালা এবং বিজেপির তথাকথিত প্রাজ্ঞদের বিরুদ্ধে বহু সুবিধা লঙ্ঘনের অভিযোগের বিচার বাকি আছে। আমার বিরুদ্ধে যে কোনও প্রস্তাব আপনারা সংসদে আনতে পারেন। তবে আশা করব তার আগে মাননীয় স্পিকার এই বকেয়া বিষয়গুলি মেটাবেন।' তবে এজাতীয় তদন্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মহুয়া মৈত্র। তবে সেখানেও সিবিআইকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, তিনি আশা করেন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা তাঁর কাছে আসার আগে আদানিদের কয়লা দুর্নীতি নিয়ে একটি এফআইআর দায়ের করবে।
অন্যদিকে দর্শন হিরনন্দানির সংস্থাও তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। সংস্থার মুখপাত্র বলেছেন, 'আমরা সবসময় ব্যবসার ব্যবসায় ছিলাম, রাজনীতির ব্যবসায় নয়। আমাদের গ্রুপ সর্বদা দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে কাজ করেছে এবং তা চালিয়ে যাবে।'