২০০৯ সালে লতার জীবনের অন্যতম কাছের মানুষ রাজ সিংহ দুঙ্গারপুর চলে যান না ফেরার দেশে। এই রাজ সিংহয়ের হাত ধরেই ক্রিকেট অনুরাগী হয়ে উঠেছিলেন লতা মঙ্গেশকর।
কাব্য করে বললে যার গানে মন খারাপের ঠিকানা খুঁজে পায় মানুষ, সেই মানুষেরই মন খারাপের কারণ রাখে কজন। কথা হচ্ছে প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরকে নিয়ে। রবিবারই শারীরিক অসুস্থতার কারণে পৃথিবী থেকে চির বিদায়ের পথে হাঁটা লাগিয়েছেন তিনি (Death of Lata Mangeshkar)। দীর্ঘজীবনের নানা চড়াই-উৎরাই একাই পাড়ি দিয়েছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই সংগীতশিল্পী। তবে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কিন্তু বরাবরই হেঁটেছেন একটু অন্যপথেই। বিয়ে করেননি। আজীবন কুমারী থেকে গিয়েছেন। তবে প্রেম কি আসেনি তাঁর জীবনে? এসেছিল। কিন্তু প্রেমের পরিণতি হিসাবে বিয়ের সন্ধিক্ষণ আসেনি তাদের জীবনে।
অনেকেই বলেন দুঙ্গারপুরের রাজ ঘরানার মহারাজ রাজ সিংহের প্রেমে পড়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। রাজ সিং বাবা–মাকে কথা দিয়েছিলেন, রাজপরিবারের মেয়ে ছাড়া কাউকে বউ করে আনবেন না। কথা রেখেছিলেন ছেলে। লতাকে বিয়ে করেননি। তবে লতার কাছেও কথা রেখেছিলেন। জীবনে আর কাউকে বিয়ে করেননি। তার পরেই সংসার জীবন থেকে মুখ ফিরিয়েছিলেন সুরসম্রাজ্ঞী। নিজেকে আরও বেশি করে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন গানে। তবে আজীবন রাজ সিংহের পকেটে সব সময়ে থাকত একটি রেকর্ডার। তাতে রেকর্ড করা থাকত লতা মঙ্গেশকরের জনপ্রিয় কিছু গান। দীর্ঘ জীবন একা কাটিয়ে ২০০৯ সালে লতার জীবনের অন্যতম কাছের মানুষ রাজ সিংহ দুঙ্গারপুর চলে যান না ফেরার দেশে। এই রাজ সিংহয়ের হাত ধরেই ক্রিকেট অনুরাগী হয়ে উঠেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। লতার চেয়ে ৬ বছরের বড় রাজ সিংহ আদর করে লতাকে 'মিট্টু' বলে ডাকতেন বলেও শোনা যায়।
আরও পড়ুন- চিরঘুমে ভারতের সুর সম্রাজ্ঞী, পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য মুম্বইতে
আরও পড়ুন- নিজের দেশে মহিলাদের গান নিষিদ্ধ, অথচ লতার ফ্যান ছিলেন এই নৃশংস স্বৈরচারী পাক জেনারেল
২৮ সেপ্টেম্বর ১৯২৯ সালে ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেন লতা। লতা মঙ্গেশকর তার পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। লতা মঙ্গেশকরের বাবা দীনানাথ মঙ্গেশকর একজন থিয়েটার শিল্পী এবং সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। বাবার হাত ধরেই সঙ্গীত জগতে প্রবেশ করেন লতা। যতদিন লতা মঙ্গেশকরের বাবা ছিলেন ততদিন তাদের পরিবারে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল কিন্তু। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস ঠেকায় কে। লতা মঙ্গেশকর যখন ১৩ বছর বয়সী তখন তার মাথা থেকে তার বাবার ছায়া উঠে গিয়েছিল। বাবার পরে, তিনি ছিলেন বাড়ির বড় এবং এই কারণে সমস্ত দায়িত্ব পড়ে লতা মঙ্গেশকরের ছোট কাঁধে। তখন থেকেই শুরু যুদ্ধ।
আরও পড়ুন- সচিন তেন্ডুলকর থেকে বিরাট কোহলি, লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ভারতীয় ক্রিকেট