দুনিয়ার ৪৭ কোটি মানুষ ধুঁকছেন কাজের অভাবে, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার

  • বিশ্বজুড়ে মন্দায় কর্মহীনতার সংখ্যা বেড়েই চলেছে
  • এমন এক চরম সময়ে সামনে এসেছে এক ভয়ানক তথ্য
  • যে তথ্য সরবরাহ করেছে খোদ আইএলও
  • অভিযোগ বর্তমান পরিস্থিতিতে আইএলও-র ভূমিকাও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে

Tapan Malik | Published : Feb 1, 2020 12:59 PM IST

দুনিয়ার সর্বত্র যেমন বেকারত্ব বাড়ছে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য। এমন বহু মানুষ আছেন যাদের  চাকরি আছে ঠিকই কিন্তু মাইনের টাকায় আর তাদের দিন গুজরান হচ্ছে না। ক্রমশ মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকাটা দুর্বিসহ হয়ে উঠছে বেশীরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও-এর ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশাল আউটলুক: ট্রেন্ড ২০২০’ নামের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে বিশ্বের প্রায় ৪৭ কোটি মানুষ ধুঁকছে কাজের অভাবে।

আইএলও-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহুর্তে বিশ্বে যত জন মানুষের কাজ আছে তার মধ্যে অধিকাংশ জনই  তাদের ন্যয্য মজুরির চেয়েও কম মজুরি হাতে পেয়েও শ্রম বিনিয়োগ করতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে কাজ না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন তার চেয়ে দবিগুন সংখ্যক মানুষ। আইএলও মনে করছে চলতি বছরেই প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বেকারত্বের তালিকাভূক্ত হবে। 

এ ধরণের পরিস্থিতি যে একদিনে তৈরি হয়নি সে কথা বলাই বাহুল্য। কারণ অনুসন্ধানের পর আইএলও-র ওই রিপোর্ট যে ব্যাখা দিয়েছে সেখানে তারা জানাচ্ছে, গত-দশ বছরে সারা পৃথিবীতে বেকারত্ব এতটা প্রকতভাবে দেখা দেয় নি। তাদের ব্যাখ্যা অনুসারে তা মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু গত দু-তিন বছরে বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গতি ক্রমশই মন্থর হয়েছে। অর্থনীতির শ্লথ গতি বিরাটভাবে প্রভাব ফেলেছে শ্রম- বাজারে। 

সাম্প্রতিক সময়ে যারা কাজের বয়সে পোঁছচ্ছে তাদের জন্য আর নতুন করে কোনও সুযোগ তৈরি হচ্ছে না। কর্ম সংস্থান ক্রমশ সংকুচিত হওয়ায় যারা কাজের মধ্যে ছিলেন তারাও কাজ হারাচ্ছেন। কেবল তাই নয়। আগামী দিন শ্রমবাজার এতটাই সংকুচিত হয়ে পড়বে যে প্রায় কারও জন্যই নতুন কোনও কাজের সুযোগ ঘটবে না। আইএলওর মুখ্য পরিচালক গাই রাইডার এই অবস্থায় বলেন, ‘কয়েক কোটি সাধারণ মানুষ শ্রমের বিনিময়ে রোজগার করে যে জীবন যাপন করবেন আগামী দিনে সেই পরিস্থিটি আর থাকবে না বলেই মনে হচ্ছে’। 

এই মুহুর্তে সারা পৃথিবীতে ১৮ কোটি ৮০ লাখ বেকারের পাশাপাশি ১৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষ পরিশ্রম  করেও তার প্রাপ্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। ১২ কোটি মানুষ হয় চাকরির আশা ছেড়ে দিয়েছেন অথবা তাদের কাজ পাওয়ার আর কোনও সুযোগ নেই। সব মিলিয়ে ৪৭ কোটিরও বেশি মানুষ কর্মসংস্থান সংকটে ধুঁকছেন। 

আইএলও-র ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে, আগের চেয়ে আয় বৈষম্য বেড়েছে  উন্নয়নশীল দেশগুলিতে। ২০০৪-এর থেকে তুলনায় ২০১৭-এ সারা পৃথিবীতে জাতীয় আয়ে শ্রমখাতের অংশীদারিত্বও কমেছ ৫৪ থেকে ৫১ শতাংশে নেমেছে। ইউরোপ, মধ্য এশিয়া ও আমেরিকার ছবিটাও এক। ব্যবসা-বাণিজ্যে গত কয়েক বছরে নানা ধরণের বাধা তরি হওয়ায় বানিজ্য অনকটা সংকোচিত হয়েছে চূড়ান্ত বেকারত্বের পেছনে এটা একটা বড় কারণ জানাচ্ছে ওই রিপোর্ট। অর্থনৈতিক বৃদ্ধি নিম্নমুখী হওয়ায় কম আয়ের দেশগুলিতে দারিদ্র্য দূরীকরণ, কর্মক্ষেত্রের উন্নয়ন ঘটছেই না বলা যায়। 

Share this article
click me!