সম্প্রতি আন্টার্কটিকায় তাপপ্রবাহ খবরের শিরোনামে এসেছে। নিমেষের মধ্যে গলে যাচ্ছে আন্কার্কটিকার চাঁই চাঁই বরফ। ভেঙে পড়ছে হিমবাহ। পরিবেশবিদ থেকে বিজ্ঞানীমহল সকলেই এখন বিপদের আশঙ্কায় শঙ্কিত। এরমধ্যেই নেট দুনিয়ায় ভারইরাল হওয়া ছবি পরিবেশবিদদের চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে রক্তের মত লাল রঙের বরফে ছেয়ে গিয়েছে আন্টার্কটিকার বিস্তির্ণ এলাকা।
আরও পড়ুন: জন্মেই চিকিৎসকের উপর রেগে গেল নবজাতক, নেটিজেনদের কাছে শিরোপা পেল বিশ্বের নবম আশ্চর্যের
ইউক্রেনের এক বিজ্ঞানী প্রকৃতির অদ্ভূত ঘটনা বলে লাল বরফের সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। আন্টার্কটিকার উত্তর দিকেই উপদ্বীপের উপকূলবর্তী একটি দ্বীপে এই রক্ত বরফ দেখা গেছে। সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছে ইউক্রেনের শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রকও। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সাদা বরফের সঙ্গে মিশে রয়েছে রক্তের মত রঙের লাল বরফ।
আন্টার্কটিকা উপকূল সংলগ্ন গ্যালেন্ডেজ দ্বীপে অবস্থিত আর্নাদস্তি রিসার্চ বেসের কাছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই লাল বরফ দেখা যাচ্ছে। ভয় ধরানো এই বরফ আসলে ক্যালিডোমোনাস নিভালিস নামে মাইক্রোস্কোপিক শ্যাওলার ফলাফল বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রবল ঠান্ডাতেও বেঁচে থাকতে সক্ষম এই শ্যাওলা সারা বিশ্বজুড়ে মেরু ও পার্ব্য অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই শৈবালের ক্লোরোপ্লাস্টের ক্যারোটিনয়েডস সাদা তুষারকে লাল রঙ দেয়। ক্যারোটিনয়েডসের কারণেই আমাদের অতি পরিচ্ছিচ কুমড়ো ওগ গাজরও তাদের লালচে রঙ পায়।
আরও পড়ুন: পর্যটকদের জন্য দুসংবাদ, শনিবার থেকে বন্ধ হচ্ছে ডিজনি পার্ক
এই প্রজাতির সবুজ শ্যাওলাগুলি প্রচুর সূর্যালোক গ্রহণ করলে তাতে ক্যারোটিনয়েডগুলি উৎপাদিত হয়। এই মুহুর্তে গ্রীষ্ম তলছে দক্ষিণ গোলার্ধে। তার ফলেই ক্রমে লাল হয়ে উঠছে শ্যাওলাগুলি। যার ফলে উদ্ভট এক রঙ পাচ্ছে শ্বেত শুভ্র তুষারের দল।
তবে এই লাল বরফের কিছু ক্ষতিকারক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। ইউক্রেনের শিক্ষা ও বিজ্ঞান মন্ত্রক নিজেদের ফেববুক পোস্টে সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছে। লাল রঙের কারণে তুষার থেকে কম সূর্যের আলো প্রতিবিম্বিত হয়, যার ফলে বরফ দ্রুত গলতে থাকে।
এমনিতেই ফেব্রুয়ারি মাসে তীব্র তাপপ্রবাহে গলদঘর্ম অবস্থা আন্টার্কটিকার উত্তরভাগের। তাপমাত্রা পৌঁছে গেছে ৬৪.৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। এই তাপপ্রবাহের ফলে আন্টার্কটিকার বরফের চাদর প্রায় ২০ শতাংশ গলে গিয়েছে। যার ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রের জলস্তর।