অস্ট্রেলিয় (Australia) গবেষকরা তৈরি করেছেন একটি নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রোগ্রাম বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রাম চোখের (Eyes) রেটিনা (Retina) টিস্যু স্ক্যান করে কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পূর্বাভাস (Prediction of Death) দিতে পারে।
সকলেই জানে জন্মালে, মরতে হবেই। তবে সেই মৃত্যু কবে আসবে, সেটাই কেউ জানতে পারে না। কিন্তু, এবার সহজেই মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। তাও শুধুমাত্র চোখের (Eyes) স্ক্যান করেই। একদল অস্ট্রেলিয় (Australia) গবেষক সম্প্রতি একটি নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রোগ্রাম বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) প্রোগ্রাম তৈরি করেছেন। তাঁদের দাবি, ওই কম্পিউটার প্রোগ্রামই কোনও ব্যক্তি কত বছর বাঁচবেন, তার পূর্বাভাস দিতে পারে। তাও, শুধু ওই ব্যক্তির চোখের পিছনের দিকে থাকা রেটিনা (Retina) টিস্যু দেখেই।
সম্প্রতি, ব্রিটিশ জার্নাল অব অফথালমোলজি'তে (British Journal of Ophthalmology) তাঁদের গবেষণার ফলাফলগুলি প্রকাশ করেছেন মেলবোর্নের সেন্টার ফর আই রিসার্চ (Melbourne's Centre for Eye Research) প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। বাংলায় একটা কথা আছে, চোখ হল মনের জানলা। আর এই গবেষণাপত্রে অজি গবেষকরা বলেছেন, কোনও ব্যক্তির ব্যক্তির স্বাস্থ্যকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য, , ডাক্তারদের কাছে 'জানালা' হিসাবে কাজ করে চোখের রেটিনা টিস্যু। তাঁদের দাবি, এই 'এআই অ্যালগরিদম' (AI Algorithm), প্রায় ১৯,০০০ ফান্ডাস স্ক্যান অর্থাৎ চোখের কালো অংশের স্ক্যান বিশ্লেষণ করার পর, কোনও ব্যক্তির রেটিনার বয়স সঠিকভাবে জানায়। আর তা থেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় ওই ব্যক্তির কবে মৃত্যু হবে।
আরও পড়ুন - 'যন্ত্র বিচারপতি' চিনে, ৯৭ শতাংশ নির্ভুল বিচার করতে সক্ষম বলে দাবি
আরও পড়ুন - AI for All - কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সচেতনতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈপ্লবিক প্রোগ্রাম
গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক তথা মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Melbourne) চক্ষু রোগবিদ্যার অধ্যাপক ডক্টর মিংগুয়াং হে (Dr Mingguang He) বলেছেন, মানুষের চোখের রেটিনাতেই রক্তনালী সংক্রান্ত এবং স্নায়বিক বিভিন্ন রোগের অন্তর্নিহিত প্যাথলজিকাল প্রক্রিয়াগুলির মূল্যায়ন করা যায়। জৈবিক বয়স নির্ণয় করার জন্য রেটিনা এক অনন্য জানালা হিসাবে কাজ করে। কারণ, এই প্রক্রিয়াগুলির উপরেই কারোর মৃত্যুর ঝুঁকি কম-বেশি হওয়াটা নির্ভর করে। ইউকে বায়োব্যাঙ্কে (UK BioBank) প্রদত্ত নমুনা থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি রেটিনাল চিত্র বিশ্লেষণ করার পর এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে।
কীভাবে মৃত্যুর পূর্বাভাস পাওয়া যাবে? অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তাঁদের গবেষণা বলছে, একজন ব্যক্তির প্রকৃত বয়স এবং চোখের রেটিনায় চিহ্নিত জৈবিক বয়সের মধ্যে পার্থক্য কত হয়, তা দেখতে হবে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর পার্থক্যের জন্য যে কোনও রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ২ শতাংশ করে বেড়ে যায়। অর্থাৎ কারোর বয়স যদি হয় ৩০ এবং তার জৈবিক বয়স হয় ৩৬। তবে, তার মৃত্যুর সম্ভাবনা ১২ শতাংশ বেড়ে যায়। কারণ, জৈবিক ও প্রকৃত বয়সের ব্যবধান এবং নন-কার্ডিওভাসকুলার ও নন-ক্যান্সার মৃত্যুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক রয়েছে।