কৃত্রিম উপায়ে একটা সূর্য তৈরি করে ফেলল চিন
বস্তুত এটি একটি পারমাণবিক ফিউশন যন্ত্র
তবে সূর্যের কোর অংশের থেকেও ১০গুণ বেশি তাপ তৈরি হয়
২০০৬ সাল থেকেই এই নিয়ে কাজ করছিল চিন
আস্ত একটা সূর্যই তৈরি করে ফেলল চিন। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে শুক্রবার তারা সফলভাবে এইচএল-২ এম টোকামাক পারমাণবিক চুল্লি চালু করেছে। চুল্লিটি চীনের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে উন্নত পারমাণবিক ফিউশন পরীক্ষামূলক গবেষণা যন্ত্র। চুল্লিটিতে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ তাপ ও শক্তির কারণে, এটিকে 'কৃত্রিম সূর্য' বলা হয়। ২০০৬ সাল থেকেই চিন পারমাণবিক ফিউশন চুল্লির ছোট সংস্করণ তৈরির কাজ করছিল। এবার তা পূর্ণ আকারে তৈরি করে চালুও করে ফেলল।
আরও পড়ুন - বিশ্বের পঞ্চম সেরা নৌশক্তি ভারতীয় নৌসেনা, নেভি ডে-তে জেনে নিন গর্বের ১০ তথ্য
আরও পড়ুন - পিরামিডের সামনে উপচে পড়ছে যৌবন - 'অনুপযুক্ত' ফটোশ্যুট করে আটক মডেল, আলোড়ন নেটদুনিয়ায়
'কৃত্রিম সূর্য' কোনও সাধারণ পারমাণবিক চুল্লি নয়। পারমাণবিক অস্ত্র বা পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লিগুলিতে নিউক্লিয়ার ফিশন পদ্ধতিকে কাজে লাগানো হয়। এই প্রক্রিয়ায় যাতে পারমাণবিক নিউক্লিগুলি ক্রমাগত ভাঙতে থাকে। কিন্তু, কৃত্রিম সূর্যতে কাজে লাগানো হচ্ছে নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়া, যা পারমাণবিক নিউক্লিগুলিকে একীভূত করে। এই প্রক্রিয়াই আমাদের সূর্যকে শক্তি দেয়। 'কৃত্রিম সূর্যে'র ক্ষেত্রে গরম প্লাজমা ফিউজ করার জন্য একটি শক্তিশালী চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে ১৫০ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা তৈরি হতে পারে, যা সূর্যের কোর অংশের উত্তাপের থেকে দশগুণ বেশি।
চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে এই চুল্লিটি অবস্থিত। গত বছরের শেষ দিকে এটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। চিনা বিজ্ঞানীদের আশা, এই যন্ত্রটি একটি শক্তিশালী 'ক্লিন এনার্জি', অর্থাৎ গ্রিনহাউস গ্যাস বিহীন শক্তির উত্সের সম্ভাবনা খুলে দিতে পরে। চিনা সংবাদপত্র পিপলস ডেইলি বলেছে, 'পারমাণবিক ফিউশন শক্তির বিকাশ যে শুধুমাত্র চিনের কৌশলগত শক্তির চাহিদার সমাধান করবে তাই নয়, ভবিষ্যতে চিনের জ্বালানি ও জাতীয় অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্যও এটি তাত্পর্যপূর্ণ'। তবে ফিউশন প্রক্রিয়া অত্যন্ত কঠিন এবং ব্যয়বহুল। কৃত্রিম সূর্য চালু করতে আনুমানিক ২২৫০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে।