চার জন ভারতীয় শিক্ষক কাবুলের বখতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিন দিন আগেই এই বিশ্ববিদ্যালের দকল নিয়েছে তালিবানরা।
চার জন ভারতের নাগরিক আটকে রয়েছে কাবুলে। বাড়ির বাইরে পা রাখতে পর্যন্ত ভয় পাচ্ছে। তাঁদের কথায় জীবন হাতে নিয়ে দেশে ফেরার প্রতীক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিশ্রুতি পাননি। চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। তালিবান অধিকৃত আফগানিস্তানে আটকে পড়া চার শিক্ষকের কথায় তালিবানরা কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকে কোনও রকম গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হচ্ছে। প্রতি ঘণ্টায় পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। অবিলম্বে দেশে পরিবারের কাছে ফিরতে চেয়েও করুণ আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
চার জন শিক্ষকই কাবুলের বখতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিন দিন আগেই এই বিশ্ববিদ্যালের দকল নিয়েছে তালিবানরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহম্মদ আসিফ শাহ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, তাঁরা ভারতের প্রতিটি সম্ভাব্য ফোরামে যোগাযোগ করেছেন। আবেদন করেছেন সরকার যাতে তাঁদের দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করে। তিনি আরও জানিয়েছেন গত দুই দিন তাঁরা ক্যাম্পাসের বাইরে যাননি। বাইরে প্রচুর গন্ডোগল হচ্ছে। যা তাঁদের আরও আতঙ্কিত করে তুলেছে।
রাতের অন্ধকারে সেনা মহড়া ভারতীয় সীমান্তে, এখনও কি চিনা সেনার নজর লাদাখে
কাশ্মীরের বাসিন্দা শাহ। চার বছর ধরে কাবুলের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ান। তিনি ও তাঁর সহকর্মীদের কাছে গোটা ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন সোমবারই তাঁরা দেশে ফেরার জন্য বিমানের টিকিট কেটেছিলেন। প্রাণ হাতে নিয়ে কাবুল বিমান বন্দর পর্যন্ত গিয়েও ছিলেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন বিমান বাতিল হয়ে গেছে। বিমান বন্দরে প্রচুর মানুষের জটলা আর অরাজকতায়ে তারা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তাই ক্যাম্পাসে ফিরে আসা ছাড়া তাঁদের সামনে আর কোনও পথ খোলা ছিল না।
সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেই পদত্যাগ ক্যাপ্টেনের, ঠিক কী কী লিখেছিলেন অমরিন্দর সিং
তিনি আরও জানিয়েছেন করোনার সময় সবকিছু যখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তখন তাঁরা দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই অনলাইনে পড়াশুনা চলছিল। মাস দুই আগে আফগান সরকার অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলায় তাঁরা আফগানিস্তানে ফিরে আসেন। এখন পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। তাই তাঁরা আবারও দেশে ফেরতে চান ।
বিহারের সৈয়দ আবিদ হুসেন বলেছেন এই অনিশ্চয়তার মধ্যে তাঁরা আর থাকতে চান না। ভারতীয় দূতাবাস আর পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছেন বলেও জানিয়েছেন। কাশ্মীরের বাসিন্দা আদিল রসুলের স্ত্রী জানিয়েছেন তাঁরা শুধুমাত্র দেশে ফেরার প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। ঝাড়খণ্ডের আফরোজ বলেছেন প্রতিটি দিন তাঁরা ভয় ভয় কাটাচ্ছেন।
আলৌকিক ঘটনা, পরিবারের ৫ মৃত সদস্যের সঙ্গে একই ঘরে তিন দিন বেঁচে ২ বছরের শিশু
যদিও ভারতের পক্ষ থেকে আগেই জানান হয়েছে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি জটিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বাণিজ্যিক উড়ান পরিষেবা শুরু করা হবে। তখনই আটকে থাকা অবশিষ্ট ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা হবে। আফগানিস্তানে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।