কবরে শুয়ে রয়েছে রক্তচোষা মহিলা ভ্যাম্পায়ার! পোল্যান্ডে উদ্ধার হওয়া মহিলা কঙ্কালে চাঞ্চল্য

রক্তচোষা বাঁদুড়কে নিয়ে কত ধরনেরই না গল্প রয়েছে। সিনেমায় তো বহুদিন আগেই স্থান করে নিয়েছিল ড্রাকুলা সিরিজ। রোমহর্ষক এবং রোমাঞ্চে ভরা ড্রাকুলা কাহিনিকে হলিউডে সিনেমাও হয়েছে। কিন্তু, এবার এমন দাবি করা হয়েছে তাতে চক্ষু চড়কগাছ।

Astik Ghosh | Published : Sep 10, 2022 2:50 PM IST

পোল্যান্ডের এক কবর এখন বিশ্ব জুড়ে শিরোনামে। নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত হওয়া এই খবরে এখন আতঙ্কের শিহরণ বইয়ে দিয়েছে সকলের মধ্যে। আর আতঙ্ক এমন এক বিষয়ে যার গল্প আপনাকেও করতে পারে আতঙ্কিত। কারণ, নিউ ইয়র্ক পোস্টের এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কবরস্থানটি যে মানুষের, তিনি আসলে ছিলেন একজন মহিলা ভ্যাম্পায়ার, যার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় রক্তচোষা মহিলা বাঁদুর। যাকে সাহিত্যের আধারে অনেকে ড্রাকুলা নামেও চেনে। গ্রাহাম স্টোকের বিখ্যাত ড্রাকুলা সিরিজ বিশ্বজুড়ে মানুষকে মানুষরূপী রক্তচোষা বাঁদুড়দের কাহিনির সঙ্গে পরিচিত করিয়েছে। তেমনই এক ভ্যাম্পায়ার বা ড্রাকুলার সন্ধান নাকি পাওয়া গিয়েছে। আর এই ভ্যাম্পায়াটি হলেন একজন মহিলা। 

নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত হওয়া এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোল্যান্ডে যে কবরটি আবিষ্কৃত হয়েছে তা আসলে ১৭ শতকের। নিকোলাস কোপারনিকাস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক দারিসুজ পোলিনস্কি এবং তাঁর ছাত্ররা এই কবরটিকে খুঁজে বের করেছেন। মাটি খুঁড়ে মহিলার কঙ্কালটি উদ্ধার হয়। কঙ্কালটির গলার উপর দিয়ে একটি কাস্তে বসানো ছিল। আর সেই কাস্তের মুখের অগ্রভাগ মাটির মধ্যে গেঁথে ছিল। 

স্থানীয় লোকাচার মতে, মৃতদেহের সঙ্গে যদি গলার কাছে কাস্তে গেঁথে রাখা হত, তার মানে এই মৃতদেহের মধ্যে কোনও অশুভ শক্তি বাসা বেঁধেছিল। তাকে কব্জা করতেই এইভাবে কাস্তে রাখা হয়েছিল। জানা গিয়েছে কঙ্কালটি এক মহিলার। সাধারণত সেই সময়ে পোল্যান্ডের ওই অঞ্চলে রক্তচোষা বাঁদুড়কে নিয়ে নানা গল্প-কাহিনি প্রচলিত ছিল। বিশ্বাস করা হত রক্তচোষা বাঁদুড় রয়েছে। এরা নাকি মানুষের ছদ্মবেশ ধরেও থাকত। তাই রক্তচোষা বাঁদুড়ের অপবাদে যে সব মহিলা ও পুরুষকে চিহ্নিত করা হত তাদের হত্যা করে গলার কাছে কাস্তে বসিয়ে এবং পা-এ তালা বেঁধে সমাধি দেওয়া হত। পোল্যান্ডে অধ্যাপক দারিসুজ এবং তাঁর ছাত্ররা যে কবর খুঁজে পেয়েছেন তাতেও উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটির গলায় কাস্তে রাখার সঙ্গে সঙ্গে পা-এ তালা লাগানো ছিল। এইভাবে সমাধি দেওয়ার কারণ লোকজন বিশ্বাস করত এতে অশুভ আত্মার বশবর্তী মানবশরীর কোনওভাবে যদি বেঁচেও ওঠে তাহলেও সে কবর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। আর গলার উপরে কাস্তে এমনভাবে বসানো হত যে একটি এদিক ওদিক করলেই গলা এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যাবে। 

উদ্ধার হওয়া কঙ্কালের মাথায় দামি সিল্কের একটি টুপিও ছিল। কঙ্কালটি যে সময়ে সেই সময়ে এই ধরনের কাপড় অভিজাত অবস্থাসম্পন্ন শ্রেণির মানুষ ছাড়া কেউ ব্যবহার করত না। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে প্রকাশ পায় যে ১১ শতকে পূর্ব ইউরোপে সবচেয়ে বেশি রক্তচোষা বাঁদুড়ের গল্পের খোঁজ মেলে। এমনকী এই রক্তচোষা বাঁদুড় সন্দেহে যাদের হত্যা করা হত অথবা নিজে থেকে যারা মারা যেত তাঁদের মৃতদেহের সঙ্গে নানা ধরনের উপাচার পালন করা হত। যার ফলে ১৭ এবং ১৮ শতকে পোল্যান্ডে অসংখ্য কবরে অনেক ধরনের অত্ভুত নিয়ম পালন করতে দেখা গিয়েছিল। তবে, পোল্যান্ডের পিন শহরে যেভাবে কাস্তে বসানো এবং তালা লাগানো অবস্থায় মহিলা কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছে তা এর আগে কখনও পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হয়েছে এই রিপোর্টে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে এমন মহিলা কঙ্কাল উদ্ধার হওয়ার ৭ বছর আগে পোল্যান্ডের দ্বারস্কো শহরেও ৫টি এমন কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছিল, যাদের দেখে মনে হয়েছিল রক্তচোষা বাঁদুড়েরর বিশ্বাসেও তাদের কবর দেওয়া হয়েছিল। 

Share this article
click me!