শেষ হল না স্বামীর সঙ্গে ভিডিও কল
ইসরাইলে রকেট হামলায় মৃত্যু ভারতীয় যুবতীর
বুধবার রাতে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় গাজার হামাস গোষ্ঠী ও ইসরাইলের মধ্যে
তারই বলি হলেন কেরলের বাসিন্দা ওই যুবতী
২০১৭ সালে শেষবার কেরলে নিজের বাড়িতে এসেছিলেন সৌম্যা সন্তোষ। তারপর থেকে ভিডিও কলই ছিল স্বামী সন্তোষ এবং ৯ বছরের পুত্র সন্তানকে দেখার এবং কথা বলার একমাত্র উপায়। বুধবার রাতেও, ভিডিও কলে স্বামীর সঙ্গেই কথা বলছিলেন তিনি। ভিডিও কল চলাকালীন, ফোনেই কেরল থেকে তাঁর স্বামীর কানে এসেছিল একটা বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ। আর তারপরই হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল ফোনের সংযোগ। সন্তোষ বুঝতে পারেননি তাঁর স্ত্রী আর নেই। হামাস গোষ্ঠীর ছোড়া রকেট, কেড়ে নিয়েছে সৌম্যার প্রাণ।
গত কয়েকদিন ধরেই জেরুজালেমে আল আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ছিল প্যালেস্তাইনি ও ইসরাইলিদের মধ্যে। বুধবার রাতে তা চরম আকার ধারণ করে। ইসরাইলকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল প্যালেস্তাইনপন্থী হামাস গোষ্ঠী। আর সেই রকেটের একটির আঘাতেই প্রাণ গিয়েছে কেরলের ইদুক্কি জেলার বাসিন্দা, ৩১ বছরের সৌম্যার। দক্ষিণ ইসরাইলের উপকূলীয় শহর আশ্কেলন-এর একটি বাড়িতে, এক অশিতীপর বৃদ্ধার দেখাশোনা করার কাজ করতেন তিনি। জায়গাটি গাজা সীমান্তের খুব কাছে। তাই, বুধবার রাতে হামাসের আক্রমণের বেশিরভাগটাই সহ্য করতে হয়েছে এই শহরকেই।
গত সাত বছর ধরেই ইসরাইলে ছিলেন সৌম্যা। জানা গিয়েছে ইসরাইলি যে বৃদ্ধার দেখাশোনা করতেন তিনি, বুধবার রাতে হামাসের ছোড়া একটি রকেট সরাসরি তাঁর বাড়িতেই আঘাত হেনেছিল। অদ্ভূতভাবে এই প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধা। তবে গুরুতর আহত অবস্থায় তিননি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কিন্তু, তাঁর দেখভালকারী ভারতীয় নাগরিক সৌম্যাকে, ইসরাইল-প্যালেস্তাইনের এই দ্বন্দ্বের শিকার হতে হয়েছে। শুধু তিনিই নন, বুধবার রাতের এই হিংসায় ইসরাইলের আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩৫।
২০১৪ সালের ভয়ঙ্কর যুদ্ধের পরই, ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে বিভিনন্ন সামরিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। এই ধরমের রকেট হামলার হাত থেকে বাঁচার জন্য আশ্রয়স্থলও গড়া হয়েছে। কিন্তু, ওই বৃদ্ধার বাড়ি থেকে এরকম একটি আশ্রয় নেওয়ার জায়গা বেশ খানিকটা দূরে ছিল বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া ওই বাড়িটির দেওয়ালও সেরকম মজবুত ছিল না। স্থানীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, রকেট হানা প্রতিরোধ করার জন্য তাদের যে 'আয়রন ডোম ব্যাটারি' ব্যবস্থা রয়েছে, বুধবার রাতে তাতে কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটিও দেখা দিয়েছিল। তাই হামাসের ছোড়া রকেটের কয়েকটিকে সেই ব্যবস্থা আটকাতে পারেনি। এই কারণেই ৫ জন নাগরিকের মৃত্যু ও আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।