হিজাব বিরোধীদের দমনে হিজাব পরিহিতারা, পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার মহিলা কম্যান্ডোদের পথে নামাল রাইসি সরকার

হিজাব বিরোধী আন্দোলনের মোকাবিলায় ইরানের রাস্তা জুড়ে রয়েছে হাজার হাজার হিজাব পরিহিত মহিলা কম্যান্ডো। হাতে সাদা গ্লাভস, সারা শরীর হিজাবে ঢাকা, অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে হিজাব বিরোধীদের দমনের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন রাইসি সরকারের মহিলা কম্যান্ডো বাহিনি। 

Ishanee Dhar | Published : Sep 26, 2022 11:56 AM IST

আমিনি মৃত্যুর প্রতিবাদে ফুঁসছে ইরান। রাস্তায় রাস্তায় জ্বলছে হিজাব, চুল কেটে পথে নেমে প্রতিবাদ লাখ লাখ লাখ ইরানি মহিলার। ইরানে মহিলাদের বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরার বিরোধীতায় প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে ইরানের একের পর এক প্রদেশে। অপরদিকে চাপের মুখে পিছু হটতে নারাজ রাইসি সরকার। শরিয়া আইন বাতিলের কোনও প্রশ্নই ওঠে না বলে সাফ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টায় শুরু হয়েছে ধরপাকড়ও। ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে ৭০০-র বেশি বিক্ষোভকারীকে। এবার আরও একধাপ এগিয়ে হিজাব বিরোধী আন্দোলন দমনে রাইফেল তুলে দেওয়া হল হিজাব পরিহিতাদের হাতেই। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার মহিলা কম্যান্ডোদের মাঠে নামাল ইব্রাহিম রাইসির সরকার। 

হিজাব বিরোধী আন্দোলনের মোকাবিলায় ইরানের রাস্তা জুড়ে রয়েছে হাজার হাজার হিজাব পরিহিত মহিলা কম্যান্ডো। হাতে সাদা গ্লাভস, সারা শরীর হিজাবে ঢাকা, অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে হিজাব বিরোধীদের দমনের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন রাইসি সরকারের মহিলা কম্যান্ডো বাহিনি। 

 কর্নেল হায়দারি জানিয়েছেন, এই মহিলা কম্যান্ডো বাহিনির মূল কাজ ‘নৈতিক মূল্যবোধ’ লঙ্ঘনকারীদের ছবি তুলে রাখা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করা। যদিও একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমের দাবি বিক্ষোভকারীদের ‘দমনপীড়নের’ জন্য ইরানের রাস্তায় একে-৪৭ বা এমপি-৫ হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এই মহিলা কম্যান্ডোরা। এমনকী দড়ির সাহায্যে দেওয়াল বেয়ে ওঠানামার মতো মহড়া করতেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। 

আরও পড়ুন - 'অত্যাচারী নিপাত যাক' প্রতিবাদের আগুনে জ্বলছে ইরান, চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে রাস্তায় রাস্তায় পুড়ছে হিজাব

১৯৭৯ সালে ইরান বিপ্লব পরবর্তী সময় অর্থাৎ রাজতন্ত্রের অবসানের পর ২০০৩ সালে প্রথম ইরানি সেনাবাহিনিতে মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। ফারাজা পাবলিক সার্ভিস অর্গানাইজেশন নামের সেনাবাহিনির একটি সংগঠনই গড়ে তোলে মহিলা কম্যান্ডোর এই ইউনিটটি। এঁদের প্রত্যেককে জুডো, ফেন্সিং, বিস্ফোরক সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াও শেখানো হয় অস্ত্রচালনা। তিন বছরের কড়া প্রশিক্ষণের পরই কম্যান্ডো হিসেবে স্বীকৃতি পান তাঁরা।   

আরও পড়ুন - তীব্র ক্ষুধার জ্বালায় জ্বলছে বিশ্ব, প্রতি চার সেকেন্ডের মৃত্যু ১ জনের- সতর্ক করল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি

প্রসঙ্গত, 'নীতি পুলিশি'র জেরে ২২ বছরের তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে ফুঁসছে ইরান। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছে লাখ লাখ মানুষ। প্রকাশ্যে হিজাব পুড়িয়ে চুল কেটে বিক্ষোভ আন্দোলনকারীদের। অন্যদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠোর হাতে আন্দোলন দমনের নীতি নিয়েছে রাইসি সরকার। আন্তর্জাতিক সূত্রে খবর এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জনকে গ্রেফতার করেছে ইরানি পুলিশ। পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা ছুঁয়েছে ৪১। আটক হওয়া আন্দোলনকারীদের একটি বড় অংশই মহিলা। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির স্পষ্ট বক্তব্য শরিয়া আইন বাতিলের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
 

Share this article
click me!