পেট্রোল আর ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশক দার জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশানাল মনিটারি ফান্ড বা আইএফএফ সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধি কোনও ভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না পাকিস্তানে। পেট্রোল আর ডিজেলের দাম বাড়তে বাড়তে আকাশে ছোঁয়া হয়ে গেছে এবার। মঙ্গলবার থেকে আবারও নতুন করে দাম বাড়ল পেট্রোল আর ডিজেলের। এদিন একলাফে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ১৯ টাকা। পাকিস্তানের জিও নিউজের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেই দেশে এক লিটার পেট্রোলের দাম ২৭৩ টাকা ৯৫ পয়সা। আর ডিজেলের দাম ২৭৩ টাকা ৪০ পয়সা।
দিন কয়েক আগেই পাকিস্তানে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ান হয়েছিল। সেই সময় পেট্রোলের দাম ছিল ২৫৪ টাকা আর ডিজেলের দাম ছিল ২৫৩ টাকা ৫০ পয়সা। এদিন পেট্রোলের দাম দাম বেড়েছে ১৯ টাকা ৯৫ পয়সা , ডিজেলের দাম বেড়েছে ১৯ টাকা ৯০ পয়সা। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পাকিস্তানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এমনিতে সেই দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার আকাশ ছোঁয়া।
এদিন পেট্রোল আর ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশক দার জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশানাল মনিটারি ফান্ড বা আইএফএফ সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে জাতীয় স্বার্থ জড়িত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান আইএফএফএর সঙ্গে সম্মতত হওয়ায় শেহবাজ শরিফ সরকার পেট্রোল আর ডিজেলের গারে পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট লেভি চাপাতে বাধ্য হয়েছে। সেই কারণে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
দার আরও জানিয়েছেন, 'আমরা আমরা দাম কমানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে কী ভাবে সমন্বয় তৈরি করা যায় তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু আমরা সবাই জানি যে পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট লেভিতে আইএমএফ-এর চুক্তি মেনেই আমাদের সব কাজ করতে হচ্ছে।'
তবে পাকিস্তানের সরকারের অর্থমন্ত্রী দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশের মানুষ ক্লান্ত। সেই কারণে পিডিএল কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। দার আরও বলেন, তিনি আগের সরকারের অর্থাৎ ইমরান খানের সরকারের পেট্রোলের দাম কমানোর পদ্ধতি অবলম্বন করবে না। মার্কিন আর্থিক সংস্থাটি পাকিস্তানের ওপর কঠোর শর্ত আরোপ করেছে, যাতে তিন বিলিয়ন ডলারের স্ট্যান্ডবাই চুক্তি সুষ্ঠুভাবে চলতে থাকে।
আইএমএফ-এর সঙ্গে পাকিস্তান সরকার তিন বিলিয়ন স্ট্যান্ডবাই চুক্তিটি আর্থিক শ-ঙ্খলা ইস্যুতে প্রায় আট মাস আলোচনার পর ৩০ জুন চূড়ান্ত হয়েছিল। এই চুক্তির অনেকগুলি প্রয়োজনীয় শর্ত ছিল। যারমধ্যে পেট্রোলিয়াম লেভে অন্যতম। এই লেভি চার্জ ধীরে ধীরে ৬০ টাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
পেট্রোলিয়ামের দামের বড় বৃদ্ধি শেহবাজ শরিফ সরকারের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এখনও শেরিফ সরকারের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা। আর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। তার আগেই মূল্যস্ফীতি ২৯ শতাংশেরও বেশি। আগামী দিনে আরও বাড়বে বলেই অর্থনৈতিক হিসেব।