রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর সারা বিশ্বের সরবরাহ চেন যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তা ঠিক করতেই কি মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই উজবেকিস্তান সফর! উঠছে নানান জল্পনা।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ববাজারে এনে দিয়েছিলো মন্দা । এই যুদ্ধের কারণেই আমাদের দেশেও ১৩০ কোটির মানুষের জ্বালানির চাহিদা তৈরি হয়েছিল। যা মেটানো কার্যত ভারত সরকারের পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব ছিল না । কিন্তু ভারতের বিশেষজ্ঞমহল চাহিদা পূরণের বিকল্পপথ খুঁজছিলো অনেকদিন ধরেই। নানান তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞমহল দাবি করে যে উজবেগিস্তানক জ্বালানির খনি, তাই ভারতের জ্বালানির চাহিদা মেটাতে উজবেকিস্তানের সঙ্গে সখ্য অত্যন্ত ফলদায়ক হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এতদিন সেই সখ্য তৈরির সুযোগটাই খুঁজছিলেন। আর সেই সুযোগই করে দিয়েছে এসসিও। এইবছর এসসিও-র সম্মেলন হচ্ছে উজবেকিস্তানের সমরখন্দে। কাজাখস্তান, চীন, কিরঘিজস্তান, রাশিয়া, তাজাকিস্তান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান-এর মতো ভারতও এ বছর আছে আমন্ত্রণ তালিকায়। এই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতেই প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং গেলেন সমরখন্দে। এবারের সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধেই আফগানিস্তান, বেলারুশ, ইরান এবং মঙ্গোলিয়ার মতো পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র ও আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, কম্বোডিয়া, নেপাল, তুরস্ক এবং শ্রীলঙ্কা মতো সংলাপ অংশীদার রাষ্ট্রগুলিও এবার এসসিও-তে নিজেদের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ পায়।
২০২০ তে করোনার আবহে এসসিওর ভার্চুয়াল সামিট হয়েছিল। সেখানে মূলত অতিমারি নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলো নিয়েই বিভিন্ন আলোচনা হয়েছিল দেশগুলির মধ্যে।
২০২১ এ তালিবানদের আফগানিস্তান দখল নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছিল। ২০২১-এর পর কেটে গিয়েছে এক বছর। এখনও আফগানিস্তান তালিবানদেরই দখলে। এই সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সেই প্রসঙ্গে কি বলবেন আফগানিস্তানের মাথার সেই দিকেই এখন তাকিয়ে আছে সবাই।
অন্যদিকে শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আলোচনা চলাকালীন,পুতিন জোর দিয়ে বলেন যে বিশ্বব্যবস্থার বহুমুখীতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইউক্রেন ইস্যুতে বোঝাপড়ার জন্য তিনি চীনকে ধন্যবাদও জানান ।
ন্যাটো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই আবার ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে স্পষ্টভাবে সমর্থন করার জন্য চিনকে দোষারোপ করেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে রাশিয়ার সঙ্গে চিনের বাণিজ্যের ক্ষেত্র প্রসারিত হবার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
গত কয়েক মাসে রাশিয়া থেকে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের আমদানি যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে, ইরানি প্রনিধিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জ্বালানি নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা বেশি গুরুত্ব পেতে পারে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
অন্যদিকে একটি বহু প্রতীক্ষিত বৈঠক বা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং তার পাকিস্তানি প্রতিপক্ষ শেহবাজ শরিফের ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। যদিও, এই বৈঠক নিয়ে এখনও কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি।