এক বছরে ভারত থেকে মেটার আয় বেড়ে গেছে প্রায় ৫৬ শতাংশ। লাভের অঙ্ক কষে মেটা ভারত থেকে খুব বেশি কর্মী ছাঁটাই করবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংস্থায় কর্মরত ১১ হাজার জন কর্মীকে ছাঁটাই করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেসবুক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘মেটা’। মোট নিয়োজিত সংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশ কর্মীর চাকরি চলে যাওয়ার পরিস্থিতি। সংস্থার আয়ের ঘাটতির দরুন এই দুঃখজনক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে বুধবার চিঠি লিখে কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছেন সংস্থার কর্তা মার্ক জ়াকারবার্গ। সংকটময় পরিস্থিতিতে মেটাতে কর্মরত ভারতীয় কর্মীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও উঠেছে জোরালো প্রশ্ন।
"দুর্ভাগ্যবশত, আমি যেভাবে আশা করেছিলাম, সেভাবে সবকিছু এগোয়নি," জাকারবার্গ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন। "শুধুমাত্র অনলাইন বাণিজ্যের ক্ষতি হয়েছে তা-ই নয়, সামষ্টিক অর্থনৈতিক মন্দা, প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞাপনের ক্ষতির কারণে সংস্থার আয় আমার প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম হয়েছে। আমি এটা ভুল করেছি এবং আমিই এর জন্য দায়ী।”
জাকারবার্গ আরও বলেছেন যে, মহামারী শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও দ্রুত আয় বৃদ্ধির প্রত্যাশা করে তিনি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেটার নতুন ছাঁটাইয়ের কারণে চাকরি হারাবে সংস্থায় কাজ করা বহু ভারতীয়। এর সংখ্যা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যায়নি। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, ভারতের মোট ৪০০ জন কর্মচারীকে মেটা চাকরিতে বহাল রাখতে পারবে বলে জানা গেছে।
যদিও আগের কয়েক বছরের তুলনায় ২০২২-এ ভারতে মেটার ব্যবসা অনেক বেড়েছে। ব্যবসায়িক প্রতিবেদন বলছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারত থেকে মেটা-র আয় হয়েছে ২,৩২৪ কোটি। তার আগে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে আয় করেছিল ১, ৪৮৫ কোটি। অর্থাৎ এক বছরে ভারত থেকে মেটার আয় বেড়ে গেছে প্রায় ৫৬ শতাংশ। লাভের অঙ্ক কষে মেটা ভারত থেকে খুব বেশি কর্মী ছাঁটাই করবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিছু দিন আগেই মেটা থেকে ভারতের হয়ে প্রধানের পদ ছেড়ে দিয়েছেন ভারতীয় প্রধান অজিত মোহন। যদিও তখনও কর্মী ছাঁটাই নিয়ে কোনও অফিশিয়াল বিবৃতি দেননি মেটা কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, এর আগের কয়েক সপ্তাহে আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্ক টুইটার অধিগ্রহণের পরই টুইটারের ‘ছাঁটাই অভিযানে’ ভারতের প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মীর চাকরি গিয়েছে। তার দু’সপ্তাহের মধ্যেই ছাঁটাইয়ের পথেই এগিয়েছে মেটাও। তবে, মেটা শুধুমাত্র ছাঁটাই করা কর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার বেতনই দিচ্ছে না, বরং বিদেশী কর্মীদের অভিবাসনের সহায়তাও দিচ্ছে, এই সাহায্যের তালিকায় ভারতীয়রাও রয়েছেন। "আমি জানি এটা বিশেষভাবে কঠিন যদি আপনি এখানে ভিসা নিয়ে বসবাস করে থাকেন। কাজ সমাপ্তির আগে একটি নোটিশ পিরিয়ড এবং কিছু ভিসা গ্রেস পিরিয়ড আছে, অর্থাৎ প্রত্যেকেরই নিজেদের অভিবাসন অবস্থা সম্পর্কে পরিকল্পনা তৈরি করার এবং কাজ করার সময় থাকবে। আপনার এবং আপনার পরিবারের যা প্রয়োজন, তার উপর ভিত্তি করে আপনাকে গাইড করার জন্য আমাদের ডেডিকেটেড ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞও রয়েছেন,” কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাকারবার্গ নিজের ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন-
এবার ১৮ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যেতে পারবেন জোকা থেকে তারাতলা, আপাতত নন এসি রেক নিয়েই মেট্রো চলার প্রস্তুতি শুরু
২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল আড়াই হাজার, ফের লকডাউনের পথে হাঁটছে চিন
কলকাতার আকাশ মেঘলা হওয়ার সম্ভাবনা, শান্ত আবহাওয়ায় জমাট বাঁধছে কুয়াশা