উত্তমা সরকার, জলপাইগুড়ি: অসম চলে গেলে ফিরবেন কী করে? আতঙ্কে শেষপর্যন্ত চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিলেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। চেন টেনে নেমে পড়লেন আরও সাতজন। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে।
আরও পড়ুন: 'অসুস্থতা বাড়লে ফোন করতে হবে থানায়', বাড়িতেই চিকিৎসা করোনা আক্রান্তের
ছ'জনের বাড়ির উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের পাঞ্জিপাড়ায়, আর দু'জন আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা। হায়দরাবাদ থেকে স্পেশাল ট্রেনে ফিরছিলেন আটজন পরিযায়ী শ্রমিক। ট্রেনটি যখন জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বেলোকোবা স্টেশনের কাছে পৌঁছয়, তখনই ঘটে বিপত্তি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রথমে ট্রেন থামার শব্দ পান তাঁরা, তারপর দেখেন, কামরা থেকে লাফিয়ে লাইনে নামছেন বেশ কয়েকজন। কী ব্য়াপার? ট্রেন থেকে যাঁরা নেমেছিলেন, তাঁদের আটকে রেখে থানায় ও আরপিএফকে খবর দেন এলাকার লোকেরা। পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করেছে বেলকোবা থানার পুলিশ।
হায়দরাবাদ থেকে স্পেশাল ট্রেনে ফিরছিলেন রায়গঞ্জের পাঞ্জিপাড়ায় বাসিন্দা মিহির বিশ্বাস। চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে বেলকোবা স্টেশনের কাছে নেমে পড়েন তিনি। ওই পরিযায়ী শ্রমিক জানিয়েছেন, 'পুজোর সময়ে আটজন মিলে বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে গিয়েছিলাম। লকডাউনের জেরে এখন কাজকর্ম বন্ধ। ট্রেনে চেপে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিই।' তাঁর অভিযোগ, রায়গঞ্জে পাঞ্জিপাড়া স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ায়নি। এমনকী, এনজেপি স্টেশনে যখন ট্রেন থামে, তখন কাউকে নামতে দেওয়া হয়নি। এদিকে ততক্ষণে এ রাজ্যের ওই আটজন পরিযায়ী শ্রমিক জেনে গিয়েছেন, যে ট্রেনটি অসমে যাবে। এরপর জলপাইগুড়ির বেলাকোবা স্টেশনে প্রথমে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন একজন, তারপর টেন চেনে নেমে পড়েন বাকীরাও।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্র থেকে ফেরার পথে বাসেই মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের, আতঙ্কে পশ্চিম মেদিনীপুর
আরও পড়ুন: হুগলিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আতঙ্ক, অনেকের দেহেই করোনার উপসর্গ
পেটের দায়ে ভিনরাজ্যে কাজ করতে হয় যেতে হয় তাঁদের। লকডাউনের জেরে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরাই। কাজকর্ম বন্ধ, রোজগার নেই। পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর জন্য স্পেশাল ট্রেনের বন্দোবস্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তাতে কি আদৌও লাভ হচ্ছে? অব্যবস্থার কারণে ভোগান্তি আরও বাড়ছে বলে অভিযোগ।