শনিবার বিধাননগর পুরনিগমের ৪১ টি ওয়ার্ডে নির্বাচন (Bidhannagar Municipal Corporation Election 2022 )। ৭ বছর আগের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) বিরুদ্ধে ব্যাপক হিংসার অভিযোগ তুলেছিল সিপিআইএম (CPIM), কংগ্রেস (Congress)।
শনিবার বিধাননগর পুরনিগমের নির্বাচন (Bidhannagar Municipal Corporation Election 2022 )। কলকাতা পুরসভার পরই, গুরুত্বের দিক থেকে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম পুরসভা এটি। এই পুর এলাকাতেই রয়েছে বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের (Vivekanand Yuva Bharati Krirangan) মতো আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম, আছে রাজ্যের প্রথম সফটওয়্যার পার্ক, 'সেক্টর ফাইভ'। মূলত, বিধাননগর নিয়ে গঠিত হলেও, ২০১৫ সালে বিধাননগর পুরসভার সঙ্গে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা ও মহিষবাথান পঞ্চায়েত নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল বিধাননগর পুরনিগম। এই পুর এলাকায় রয়েছে মোট ৬টি বরো এবং ৪১টি ওয়ার্ড। মোট এলাকা প্রায় ৬১ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ৭ লক্ষ।
ভোটের মাঝেই কোলাকুলি করতে দেখা গেল জয়প্রকাশ মজুমদার ও সব্যসাচী দত্তকে, দুপুর ২.৩০টা
বিধাননগর পৌর নিগমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ভগবতী দেবী বালিকা বিদ্যালয়ে ভোট দিতে আসেন বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। ভোট দিয়ে বেরোনোর পর তৃনমুল প্রার্থী সব্যসাচী দত্তের সাথে আলাপচারিতার পর কোলাকুলি করতে দেখা গেল। তারপর বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ জানার সাথে সৌজন্য বিনিময় করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। ভোট দেওয়ার পর বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা ও তৃনমুল প্রার্থী সব্যসাচী দত্তের কোলাকুলি অন্য ছবির দেখা মিলল বিধাননগরে।
১৩ নম্বর ওয়ার্ডে হাতিয়াড়া হাই মাদ্রাসা স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ, দুপুর ২.১০টা
বিধাননগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে হাতিয়াড়া হাই মাদ্রাসা স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ ভোটারদের। পুলিশ গিয়ে তাদেরকে বুঝিয়ে রাস্তার উপর থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয় বেআইনিভাবে কেউ যদি জামায়াত করে তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩০ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা। এলাকার মানুষদের মারধরের অভিযোগ সিপিআইএমের বিরুদ্ধে, দুপুর ১২.১০টা
বিধাননগরে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা। এলাকার মানুষদের মারধরের অভিযোগ সিপিআইএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তৃণমূল প্রার্থী অনিতা মণ্ডলের। সিপিআইএমের দাবি বহিরাগত আটকাতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীরা সিপিআইএম কর্মীদের উপর হামলা করে।
বিধাননগর পৌরনিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ, বেলা ১১.৪২টা
বিধাননগর পৌরনিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তেজনা খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিশ বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা। কংগ্রেস প্রার্থীর অভিযোগ সকাল থেকে অনবরত চলছে ছাপ্পা ভোট। প্রশাসনকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
বাথরুমে ‘ভুয়ো’ ভোটার পাকড়াও, বেলা ১১.২০টা
বিধাননগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাথরুমে ‘ভুয়ো’ ভোটার পাকড়াও। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটিতে বাথরুম থেকে ফলস ভোটার ধরেন বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ জানা। তিনি ভুয়ো ভোটারদের তাড়াও করেন বলে জানা যায়। একজন আটক। চাঞ্চল্য গোটা এলাকায়।
বিগত নির্বাচনে এই পুরনিগম এলাকায় ব্যাপক হিংসার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) বিরুদ্ধে। বুথ দখল থেকে বিরোধী সিপিআইএম (CPIM) নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের পর্যন্ত মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়েছিল। বেশ কয়েকটি বুথে পুনর্নির্বাচনও হয়। শেষ পর্যন্ত ৩৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস, ২টিতে বামফ্রন্ট এবং ২টিতে কংগ্রেস (Congress)। তবে, তার পরের ৭ বছরে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে কেষ্টপুর খাল দিয়ে। একসময়ের তৃণমূল কংগ্রেস পুরবোর্ডের মেয়র সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta), ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল ত্যাগ করে গিয়েছিলেন বিজেপিতে। ভোটে হেরে আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দলে ফিরেছেন। এবার তাঁকে তৃণমূল প্রার্থীও করেছে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে।
৪১টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপিও (BJP) তাই। বামেদের মধ্যে সিপিআইএম প্রার্থী দিয়েছে ৩৫টি ওয়ার্ডে, আর ২টি করে ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে সিপিআই (CPI) ও ফরোয়ার্ড ব্লক (Forward Block)। ২টি আসনে দুই নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করেছে বামফ্রন্ট। জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ২৯টি ওয়ার্ডে। বাকি ওয়ার্ডগুলিতে তারা বাম প্রার্থীদের সমর্থন জানিয়েছে। বাম প্রার্থীদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা শিক্ষক বাসব বসাক (Basab Basak), যাঁকে সিপিআইএম প্রার্থী করেছে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। বিজেপির প্রার্থীদের মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য, বিধাননগরের দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর দেবাশীষ জানা (Devasis Jana)। একসময় কংগ্রেস ও পরে তৃণমূল কংগ্রেসে থাকা এই নেতাও বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।