অক্টোবরের শুরু থেকেই একাধিক দাবি নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একদল জুনিয়র ডাক্তার, ইন্টার্ন। তার জেরে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা।
একাধিক দাবি তুলে আরজি কর হাসপাতালে (RG Kar Medical College) আন্দোলন (Agitation) অব্যাহত রেখেছেন জুনিয়র চিকিৎসক (Junior doctor) ও ইন্টার্নরা। এই আন্দোলনের জেরে বিঘ্নিত হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা (Medical Service)। আর এবার এই আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কড়া বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। আদালতের তরফে সাফ বলা হয়েছে, আন্দোলনের কারণে যদি রোগী পরিষেবা ব্যাহত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে আদালত।
অক্টোবরের শুরু থেকেই একাধিক দাবি নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একদল জুনিয়র ডাক্তার, ইন্টার্ন। তার জেরে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা। পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে বহু রোগীকে। বেজায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে রোগীর পরিবারের সদস্যদের। আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি, অধ্যক্ষকে ইস্তফা দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অনেক রোগীকেই। বিষয়টি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠতেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর।
আরও পড়ুন- আম বাগানের আড়ালে মাদক চক্রের সন্ধান,রুদ্ধশ্বাস অভিযানে গ্রেফতার ৩ পাচারকারী
আরজি করের জট কাটানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা একটি ‘মেন্টর গ্রুপ’ (Mentor Group) তৈরি করে দেন। এই গ্রুপের সদস্যদের হাতেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই কথা বলে তাঁদের কাজে ফেরানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, একাধিকবার হাসপাতালের অধ্যক্ষ-সহ শীর্ষ কর্তা, মেন্টর গ্রুপের সদস্যরা আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বললেও কোনও সুরাহা মেলেনি।
অবশেষে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের এই অচলাবস্থা কাটাতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নন্দলাল তিওয়ারি নামে এক ব্যক্তি। হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন তিনি। আদালতের কাছে তাঁর আবেদন, দ্রুত জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন তুলে চিকিৎসা পরিষেবা ফেরাতে পদক্ষেপ করুক উচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন- Terrorist Killed: অরুণাচলে অসম রাইফেলসের কঠোর অভিযান, নিহত তিন জঙ্গি
সোমবার এই মামলা ওঠে বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আন্দোলন চলাকালীন জুনিয়র চিকিৎসকরা যেভাবে অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করেছেন। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে মাইকে বাজানো হয়েছে তা অনভিপ্রেত। চিকিৎসক পড়ুয়াদের কলেজ, হোস্টেল, বিদ্যুৎ ও পড়াশোনা পরিবেশে থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।”
এরপরই আন্দোলনকারীদের কড়া বার্তা দেন বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, "হাসপাতালে পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি দেখি যে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিক্ষোভ হচ্ছে তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আন্দোলনের কারণে রোগীদের যেন কোনওরকম সমস্যা না হয়।"
এর প্রেক্ষিতে ইন্টার্নদের পক্ষের আইনজীবী বলেন, "আমরা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কখনও বিক্ষোভ করছি না। আদালতের নির্দেশ মেনেই এবং আদালতের অনুমতিতে বিক্ষোভ হচ্ছে। দয়া করে আমাদের আগামীকালের শুনানির সময় দেওয়া হোক।" এই মামলার পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার।