কলকাতা মেট্রোতে দিন দিন ভিড়ের চাপ বাড়ছে। ব্যাস্ত জীবনে পরের ট্রেনের অপেক্ষা করতে চান না কেউই। ক্রমেই বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও। শনিবার তো ভিড়ের মধ্যে তাড়াহুড়ে করে ঢুকতে গিয়ে দরজায় আটকে গিয়ে এক যুবকের মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে গেল। এরপর যেমন মেট্রো কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তেমন শহরবাসীদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, কলকাতা মেট্রোতেও কি এইবার 'ওশিয়া' নিয়োগ করার সময় এল?
'ওশিয়া' কথাটা জাপানি। যার অর্থ 'ধাক্কা মারা যাদের কাজ'। জাপানের কোনও কোনও শহরে দিনের ব্যস্ততম সময়ে কলকাতা মেট্রোর অফিসটাইমের থেকেও বেশি ভিড় হয়ে থাকে। কলকাতার মতোই কখনও কখনও ভিড়ে চাপে ট্রেনে উঠতে গিয়ে আটকে যান যাত্রীরা। ওশিয়াদের কাজ, ধাক্কা মেরে ওই যাত্রীদের চট্রেনের ভিতে ঢোকাটা নিশ্চিত করা। তাদের কাজ শেষ হলে তবেই ট্রেন চলতে শুরু করে।
আরো পড়ুন - কলকাতা মেট্রোর দরজা কেলেঙ্কারি, একের পর এক ঘটনাতেও ফেরেনি হুঁশ
আরও পড়ুন - দরজায় ঝুলছেন যাত্রী, কলকাতা মেট্রোয় বেনজির দুর্ঘটনায় মৃত্যু যুবকের
আরো পড়ুন - ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরে মেট্রোর ভিতরে দমবন্ধ অবস্থা, আতঙ্কে যাত্রীরা, দেখুন ভিডিও
তবে শুধু জাপানেই নয়, বিশ্বের বেশ কয়েকটি জনবহুল শহরে বর্তমানে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ওশিয়াদের নিয়োগ করা হয়েছে। চিনের বেজিং, সাংহাই, স্পেনের মাদ্রিদে, আমেরিকার নিউইয়র্কে, জার্মানির ফ্র্যাঙ্কফ্রুটের মতো বেশ কয়েকটি জনবহুল শহরে এঁদের দেখা মেলে। কোথাও তাঁদের বলা হয় 'পুশার', কোথাও 'প্ল্যাটফর্ম কন্ট্রোলার', কোনো শহরে এঁদের নাম 'বোর্ডিং গাইড'। তবে কাজটা তাঁদের একই, যাত্রীরা ট্রেনে ওঠার পরই দরজা ঠিকমতো বন্ধ হল কিনা তার দেখভাল করা।
এমনকী দিল্লি মেট্রোতেও একই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্ল্যাটফর্মে মেট্রো কর্তৃপক্ষের কয়েকজন কর্মী নিযুক্ত থাকেন যাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে ট্রেনে ওঠা ও ঠিকভাবে দরজা বন্ধ হওয়া নিশ্চিত করার জন্য। তাঁদের মধ্যে একনের কাছে একটি হুইশল থাকে, সব দরজা বন্ধ হলে তিনি সেই হুইশল বাজান, তার পরেই ট্রেন ছাড়ে।
একের পর এক দরজা কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে চলেছে। কলকাতা মেট্রোতেও পুশার বা ওশিয়া থাকলে এই ধরণের ঘটনা এড়ানো যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার।