গঙ্গার ঘাটগুলিতে রাখা থাকবে পাম্প। সেই পাম্পের মাধ্যমে গঙ্গা থেকে জল টেনে তোলা হবে। আর সেই জল হোস পাইপের মাধ্যমে দেওয়া হবে প্রতিমার গায়ে। তা দিয়ে প্রতিমার গায়ের রং ও মাটি ধুয়ে ফেলা হবে। এরপর সেই দূষিত জলকে শোধন করা হবে। শোধনের পর সেই জল পুনরায় ফেলা হবে গঙ্গায়।
দুর্গাপুজো (Durga Puja) শেষ, আজ দেবী দুর্গা (Devi Durga) পাড়ি দেবেন কৈলাসে। আকাশে-বাতাসে এখন শুধুই বিষণ্ণতার সুর ভেসে আসছে। বেশিরভাগ প্রতিমাই আজ নিরঞ্জন করা হবে। আর নিরঞ্জনের প্রসঙ্গ এলেই প্রথমে মাথায় আসে দূষণের (Pollution) বিষয়। আর সেই কথা মাথায় রেখেই গঙ্গা দূষণ রোধ করতে প্রতিমা নিরঞ্জনে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে না। বরং গঙ্গার জল (Ganges Water) দিয়েই ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে।
প্রতি বছর কম করে হলেও প্রায় চার হাজার প্রতিমা নিরঞ্জন হয় কলকাতার বিভিন্ন গঙ্গার ঘাটে। এর মধ্যে বেশিরভাগ নিরঞ্জন হয় নিমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট, বাজা কদমতলা ঘাটে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই তিনটি ঘাটে মোট চারটি ক্রেন থাকবে। এছাড়া বাজা কদমতলা ঘাটে গঙ্গার জলে ভাসমান বার্জের উপর একটি ক্রেন থাকবে এবং পাড়েও একটি ক্রেন থাকবে। নিমতলা এবং জাজেস ঘাটে পাড়ের উপরে একটি করে ক্রেন থাকবে। জলে প্রতিমা পড়লেই সেই ক্রেন দিয়ে কাঠামো টেনে তোলা হবে।
আরও পডুন- দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাংলাদেশ, পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে ভারত
এর পাশাপাশি গঙ্গার ঘাটগুলিতে রাখা থাকবে পাম্প। সেই পাম্পের মাধ্যমে গঙ্গা থেকে জল টেনে তোলা হবে। আর সেই জল হোস পাইপের মাধ্যমে দেওয়া হবে প্রতিমার গায়ে। তা দিয়ে প্রতিমার গায়ের রং ও মাটি ধুয়ে ফেলা হবে। এরপর সেই দূষিত জলকে শোধন করা হবে। শোধনের পর সেই জল পুনরায় ফেলা হবে গঙ্গায়।
আরও পড়ুন, Durga Puja: আজ দশমীতে শোভাবাজার রাজবাড়িতে বিষাদের সুর, বিসর্জন নিয়ে কড়া নজরদারি গঙ্গায়
এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাসমিনিস্ট্রেটর্স চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বলেন, "গঙ্গায় রং ও সিসা যাচ্ছে তার ফলে দূষণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। ত্রিধারায় গতবছর হয়েছিল, সেখান থেকে এই ধারণাটা এসেছে। হোস পাইপের মাধ্যমে রং-মাটি সরিয়ে ফেলা হবে। ছোট ঠাকুর দিয়ে এটা ট্রায়াল করা হয়েছে। তবে যাঁরা গঙ্গাবক্ষে নিরঞ্জন করতে চাইবেন তাঁরা গঙ্গাবক্ষে নিরঞ্জন করবেন। এটা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা উচিত হবে না। আর যাঁরা চাইবেন হোস পাইপের মাধ্যমে প্রতিমা নিরঞ্জন করা যেতে পারবেন। তবে সব রীতি মেনেই এই কাজ করা হবে।"
তবে এ বছর, এই পদ্ধতিতে নিরঞ্জনকে বাধ্যতামূলক করছে না কলকাতা পুরসভা। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, "অনেক পুজো উদ্যোক্তা চাইছিল এটা। পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের গাইডলাইনও রয়েছে। তবে, এটা বাধ্যতামূলক করছি না। তাই যাঁরা চান গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জন করতে তাঁরা করতেই পারেন। কারণ এই নতুন পদ্ধতি সব মানুষ কীভাবে নেবেন, এইভাবে নিরঞ্জন করতে গেলে কতটা সময় লাগবে এই সব দিক নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"