সিবিআই চাইলেই গ্রেফতার করতে পারে রাজীব কুমারকে। রাজীবের আর্জি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি মধুমতী মিত্র এই রায় দিয়েছেন।
রাজীবের গ্রেফতারির ওপর হাইকোর্টের যে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ ছিল,তা আজ প্রত্যাহার করে নিল আদালত। যার ফলে আজ থেকে রাজীবের গ্রেফতারির ওপর আর কোনও রক্ষাকবচ রইল না। এদিন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীবকে কোনও স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস দিল না হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানায়, রাজীব শুধুমাত্র মামলার সাক্ষী। তাই তার কোনও অধিকার নেই ইনভেস্টিগেশন প্রত্যাহারের আবেদন করার। তিনি নোটিশ খারিজ হোক এমনও বলতে পারেন না।
এদিন কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বিধাননগরের তৎকালীন সিপি রাজীব কুমার সিটের সদস্য ছিলেন। সেই সময় মামলায় যুক্ত থাকা যে সিনিয়র অফিসাররা ছিলেন, তারা অনেকেই সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছেন। একজন দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে রাজীব কুমারের উচিত তদন্তে সাহায্য করা। তাই শুধুমাত্র রাজীবকে যে টার্গেট করা হয়েছে এটা প্রতিষ্ঠিত নয়। সিবিআই তাদের এক্তিয়ারের মধ্যেই কাজ করছে৷ ফলে আদালতের এক্ষেত্রে কিছু বলার নেই। সিবিআই ৪১ এ তে রাজীবকে নোটিশ দিয়েছিল। নোটিশ দেওয়া মানেই গ্রেফতারি নয়। রাজীবকে বারবার তদন্তের জন্য নোটিশ দেওয়া মানেই গ্রেফতার নয়। সিবিআইয়ের বারবার প্রশ্ন করা তো তদন্তেরই অঙ্গ। এতে রাজীবের যে মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে,তা মোটেই নয়।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টে রাজীব কুমার মামলার রায়দান ঘিরে ছিল চরম উত্তেজনা। দুপুর আড়াইটেয় বিচারপতি মধুমতী মিত্রর ঘরে রায়দান প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই মামলায় সিবিআই নাকি রাজীব কুমার কার জয় হবে যা নিয়ে সারা রাজ্যের নজর ছিল হাইকোর্টের দিকে। কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি হল রাজীব কুমারের ? রাজ্য়ের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী বলছে, ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদা মামলার তদন্তভার হাতে পায় সিবিআই। সিবিআই শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে, সারদা কেসের তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে অন্যতম বাধা রাজীব কুমার। প্রথম থেকেই তদন্তে সহযোগিতা করছেন না তিনি। নোটিশ দিলেও নানা বাহানা দেখিয়ে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে চাইছেন না।
পরবর্তীকালে দেখা যায়, হাজিরা তো দূর, উল্টে নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজীব মামলা করেন হাইকোর্টে। এ প্রসঙ্গে রাজীবের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, সারদা কেসে রাজীব কুমার একজন সাক্ষী। কিন্তু তাঁর মতো একজন সম্মানীয় আইপিএস'কে সিবিআই অভিযুক্ত হিসেবে তকমা দিতে চাইছে। ১৯৮৯ ব্যাচের ওই আইপিএস'কে হেফাজতে নিতে চাইছে সিবিআই। তাই নোটিশ দিয়ে বারবার তাঁকে হেনস্থা করতে চাইছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
যার উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর বলেন, রাজীবের আগে আরও অনেক পুলিশ অফিসারকে তলব করা হয়েছিল। তারা হাজিরা দিলেও রাজীব কুমার আসেননি ৷ কেন আসতে চাইছেন না তিনি? সিবিআই তদন্তভার হাতে নেওয়ার আগে রাজ্য সরকার গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) সারদার তদন্ত করছিল। সিটের মাথায় ছিলেন রাজীব কুমার। তাহলে তদন্তের কোনও বিষয়ে ওই আইপিএস ওয়াকিবহাল ছিলেন না, সেটা কীভাবে হয়?