ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোকে পেয়ে বেশ খুশী কলকাতাবাসী। গত বৃহস্পতিবার সন্ধেয়, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো শুভ উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। সেখানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো যাত্রা শুরুর পর অনেকেই কাজের সূত্রে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চড়ছেন। অনেকেই আবার শুধু ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আনন্দ উপভোগ করার জন্য় সওয়ারি হয়েছেন। যার অসামান্য় মুহূর্ত গুলি ধরা পড়া পড়ল আমাদের সংবাদ মাধ্য়মের কাছে। মুখ ভরা হাসি নিয়ে সবাই মন খুললেন,জানালেন তাদের ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা।
আরও পড়ুন, ভালবাসার দিনে ছুটছে প্রথম মেট্রো, তাতেই হাঁটু মুড়ে বসে বিয়ের প্রস্তাব বান্ধবীকে
করুণাময়ীর বাসিন্দা রিমা মৈত্র জানালেন, তার সবথেকে পছন্দ হয়েছে মেট্রোর নিরাপত্তা ব্য়াবস্থা। যাদবপুরের এক তরুণী অবশ্য় বেশী খুশি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নতুন ডিজাইন দেখে। ঝা ঝকঝকে, এবং খুবই দ্রুত বেগের পরিষেবা তার বেশ ভাল লেগেছে। সল্টলেক করুণাময়ীর বাসিন্দা গৌতম সরকার জানালেন, সময় একটু বেশী লাগছে কিন্তু তবুও অনেক আনন্দদায়ক এই সফর। বনগাঁ লাইনের বাসিন্দা শিবশঙ্কর মল্লিক ও তাঁর বাসিন্দা জানালেন, তারা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সঙ্গে তিন বছর ধরে কাজে যুক্ত ছিলেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই খুব ভাল লাগছে। জানালেন, সবথেকে বড় কথা তারা কাজ করে সাফলতা পেয়েছেন। তাই এই দীর্ঘ তিন বছর ধরে টানা কাজ করে তারা সার্থক।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোতে দেখা মিলল দুই ক্ষুদের, যারা শুধু নতুন মেট্রো চড়বে বলে সওয়ারি হয়েছে। জোগাড় করেছে পাঁচ টাকা। পাওয়া গেল দুই স্কুল পড়ুয়াকে। অন্তরা এবং শ্রেয়া, তারা জানাল কম সময়ে বিনা ঝঞ্জাটে স্কুলে পৌছে যাবে, এজন্য় খুবই পছন্দ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। তারা গর্বিত কলকাতার এই নতুন মেট্রোতে। সরকারী কর্মচারী নির্মল সেন এসেছেন তাঁর পরীক্ষা দেওয়াতে। প্রশ্ন করার আগেই আমাদের সংবাদ মাধ্য়মকে নিজেই জানালেন, তিনি খুব খুশী ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নিয়ে। বিশেষ করে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রতিটি স্টেশনে আলাদা করে অটোমেটিক দরজা লাগানো হয়েছে। যেটি ট্রেন আসলে, ট্রেনের দরজার সঙ্গে পাশাপাশি একই সময়ে খোলে। যার ফলে এড়ানো যাবে, মেট্রোতে ঘটা ক্রমাগত সুইসাইড। যাত্রী নিরাপত্তা বাড়বে। ভোগান্তি ছাড়াই সঠিক সময়ে গন্তব্য়ে পৌছানো সম্ভব হবে। সল্টলেক স্টেডিয়াম থেকে এসেছেন এক তরুণী তিনি খুব খুশী। জানালেন, মেট্রোর স্টেশনগুলিতে শৌচাগার থাকার জন্য় অনেকটাই নিশ্চিন্ত হওয়া গেল।
আরও পড়ুন, চড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ, শীতের আমেজ কাটিয়ে আসছে বসন্ত
১৯৮৪ সালের ২৪ অক্টোবর মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়েছিল। এসপ্ল্যানেড এবং ভবানীপুরের (বর্তমানে নেতাজি ভবনের) মধ্য়ে দিয়ে মোট পাঁচটি স্টেশন চালু ছিল। এযেন সেই কলকাতায় মেট্রো রেলের শুরুর দিন গুলির কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। তখন অবাক চোখে আর ভালবাসায় মেট্রোকে গ্রহন করেছিল কলকাতাবাসী। নিত্য়যাত্রীদের কাছে পাতাল রেলে চড়া ছিল এক অভিনব ব্য়পার। একে কম সময়ে গন্তব্য়ে পৌছানো, তার উপর আবার সুরঙ্গের রোমাঞ্চ বাঙালি গোগ্রাসে গিলেছিল। সেই ভালবাসা,নস্টালজিয়া, সার্থকতা আবারও একবার ফিরে পাওয়া গেল আমবাঙালির চোখে-মুখে।