লকডাউনের মরশুনে বাজারে দেখা গিয়েছে ওষুধের সংকট। অথচ যাঁরা চাইলেও ওষুধ বন্ধ করতে পারবেন না, বন্ধ করলেই বিপদের মুখে পড়বেন, তাঁরা কোথায় যাবেন? সেক্ষেত্রে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। বললেন অ্য়াপলো গ্লিনেগেলসের সিনিয়ার পালমোনোলজিস্ট ডা. অশোক সেনগুপ্ত।
সিওপিডি আর অ্য়াজমা, এই দুটোই খুব সাধারণ সমস্য়া। এই দুই রোগেরই কিছু মেনটেনান্স ট্রিটমেন্ট রয়েছে। অর্থাৎ রোগী ভালো থাকুন বা মন্দ থাকুন, তাঁকে অপেক্ষাকৃত একটা ভালো জোনে রাখার জন্য় কিছু ওষুধ দিতে দিতে হয়। এই দুই ক্ষেত্রেই ইনহেলার ধরনের ওষুধ থাকে, ট্য়াবলেট ওষুধ কম থাকে। আবারও বলছি, এটা কিন্তু চালিয়ে যেতে হয়।
অ্য়াজমা অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের মধ্য়ে দেখা যায়। আর সিওপিডি একটু বেশি বয়সীদের মধ্য়ে দেখা যায়। যাঁরা ধূমপায়ী, চল্লিশ পেরোলেই তাঁদের মধ্য়ে অনেকেই সিওপিডিতে ভোগেন। সিওপিডির রোগীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা আরও বেশি। কারণ তাঁদের বয়স হয়েছে, ফুসফুস বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বলে রাখা ভালো, এইরকম বয়স্ক ধূমপায়ীদের ফুসফুস করোনাভাইরাসের খুব পছন্দের জায়গা। তাই এই সিওপিডি রোগীরা কিন্তু একটা ডেনজার জোনের মধ্য়ে রয়েছেন। বিশেষ করে যাঁরা এখনও ধূমপান ছাড়তে পারেননি, তাঁরা।
এই অবস্থায় ওষুধ বন্ধ হয়ে গেল বিপদ। অ্য়াজমার ক্ষেত্রেও নয়, আর সিওপিডির ক্ষেত্রে তো নয়ই। এ কথা ঠিকই যে ওষুধের একটা কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা যেমন আতঙ্কিত হয়ে চাল-ডাল বেশি করে কিনছি, ঠিক সেরকমই দু-তিনমাসের ওষুধও মজুত করছি অনেকে। এদিকে লকডাউনের কারণে ওষুধের জোগান কমছে। পরিবহণ প্রায় বন্ধ। তাই ডিলারদের ঘর থেকে আর দোকান অবধি এসে পৌঁছচ্ছে না ওষুধগুলো। এক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন হওয়া আর সরকারকে এ-বিষয়ে আরও একটু উদ্য়োগী হতে বলতে পারি। এছাড়া আর তো কিছু করার নেই। আমি ব্য়ক্তিগতবাবে বেশ কয়েকজন রোগীকে একটু সাহায্য় করার চেষ্টা করেছি, যাঁরা ওষুধ পাচ্ছেন না লকডাউনের বাজারে। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি বা ডিসট্রিবিউটরের ফোন নম্বর দিয়ে দিচ্ছি সেইসব রোগীদের। তাঁরা এবার যোগাযোগ করে নিচ্ছেন। তবে এইবাবে কয়েকজনের সমস্য়া হয়তো একটু মেটাতে পারছি আমি। অন্য় ডাক্তাররাও তাঁদের মতো করে চেষ্টা করছেন। কিন্তু সংকট একবার বড়সড় জায়গায় চলে গেলে সরকারকেই কিন্তু হস্তক্ষেপ করতে হবে।