গ্রীষ্মে এক গ্লাস বেল শরবতের চেয়ে ভাল আর কিছুই নেই। এটি আপনার শরীরে শীতল প্রভাব ফেলে এবং আপনাকে হাইড্রেটেড রাখে। কাঠ আপেল, বেঙ্গল কুইনস, ইন্ডিয়ান বেল বা স্টোন আপেলের মতো বিভিন্ন নামে পরিচিত, এই দেশীয় ফলটি পুষ্টি ও ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ।
একে বলা হয় শ্রীফল। অর্থাৎ খোদ ভগবানের আশীর্বাদপুষ্ট এই ফল হাজারো শারীরিক সমস্যার একটাই সমাধান। বেল ফল এতটাই গুরুত্বপীর্ণ। পুজোর নানা কাজ থেকে শরীরে সারানোর একটাই উপায় হিসেবে আজও বেল ফলকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
গ্রীষ্মে এক গ্লাস বেল শরবতের চেয়ে ভাল আর কিছুই নেই। এটি আপনার শরীরে শীতল প্রভাব ফেলে এবং আপনাকে হাইড্রেটেড রাখে। কাঠ আপেল, বেঙ্গল কুইনস, ইন্ডিয়ান বেল বা স্টোন আপেলের মতো বিভিন্ন নামে পরিচিত, এই দেশীয় ফলটি পুষ্টি ও ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ।
ফলের খাদ্যগুণ
১০০ গ্রাম বেলের শাঁসে থাকে: জল ৫৪.৯৬-৬১.৫ গ্রাম, প্রোটিন ১॥.৮-২.৬২ গ্রাম ; স্নেহপদার্থ ০.২-০.৩৯ গ্রাম ; শর্করা ২৮.১১-৩১.৮ গ্রাম ; ক্যারোটিন ৫৫ মিলিগ্রাম ; থায়ামিন ০.১৩ মিলিগ্রাম ; রিবোফ্ল্যাবিন ১.১৯ মিলিগ্রাম ;নিয়াসিন ১.১ মিলিগ্রাম ; এসকর্বিক এসিড ৮ - ৬০ মিলিগ্রাম ; এবং টারটারিক এসিড ২.১১ মিলিগ্রাম।
ফলের ভেষজগুণ
বেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও আমাশয়ে উপকার করে। আধাপাকা সেদ্ধ ফল আমাশয়ে অধিক কার্যকরী। বেলের শরবত হজমশক্তি বাড়ায় এবং তা বলবর্ধক। বেলের পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়। পাতার রস, মধু ও গোল মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়। পেট খারাপ, আমাশয়, শিশুর স্মরণ শক্তি বাড়ানোর জন্য বেল উপকারী। বেলে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। এই ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বেল নিয়মিত খেলে কোলন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।
বেল ফলের পুষ্টিগুণ
বেল ফলের মধ্যে রয়েছে জল, চিনি, প্রোটিন, ফাইবার, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন (ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি এবং রিবোফ্লাভিন), এমনই জানাচ্ছে আইওএসআর জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, টক্সিকোলজি অ্যান্ড ফুড-এর একটি সমীক্ষা।
বেল হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের জন্য টনিক হিসেবে কাজ করে। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য অবস্থার নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়েছে। এতে ট্যানিন, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং কুমারিনের মতো রাসায়নিক রয়েছে যা প্রদাহ কমায়। ফার্মা ইনোভেশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বেল গাছের সব অংশই উপকারী হলেও ফল পাকতে শুরু করলে এর ঔষধি গুণ বেশি হয়ে যায়।
বেল ফলের ছত্রাক-বিরোধী এবং অ্যান্থেলমিন্টিক (যা শরীর থেকে অভ্যন্তরীণ পরজীবী বের করে দেয়) বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
আলসার নিরাময় করে: গবেষণায় দেখা গেছে যে পানীয় আকারে বেল খাওয়া পাকস্থলীর মিউকোসায় একটি আবরণ তৈরি করে এবং আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে।
কলেরার চিকিৎসা: বেল ফল ট্যানিনের উচ্চ উৎস, যা কলেরার চিকিৎসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর খোসায় প্রায় ২০ শতাংশ যৌগ এবং সজ্জা প্রায় ৯ শতাংশ থাকে। এই ফলটিকে কলেরার ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।