৪০ বছরের পর পেটের মেদ ঝরানোর বেশ কয়েকটি সহজ উপায় রয়েছে।
৪০ বছরের পরই অনেকেরই পেটের মেদ দ্রুত বাড়তে থাকে। এর বেশ কিছু কারণ রয়েছে। কিন্তু ৪০ বছরের পর পেটের মেদ ঝরানোর বেশ কয়েকটি সহজ উপায় রয়েছে।
পেটের চর্বি বাড়ার কারণ
১. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেশীগুলি শিথির হয়ে যায়। যা সারকোপেনিয়া নামের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ। পেশী যত বেশি শিথিল হবে চর্বি ততই বাড়বে। আর মানুষ ততই দুর্বল হয়ে যায়। তাই ৪০ বছরের পর পেটের চর্বি ঝরানোর জন্য ক্যালরি খরচ করা অত্যান্ত জরুরি। এই সময় যে কোনও ব্যক্তি পেশীর ওপর ভর বা চাপ বাড়াতে পারবে সে ততই বেশি চর্বি পোড়াতে পারবে।
২. হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই ওজন বৃদ্ধি হয়। অনেকেরই আবার ওজন হ্রাস পায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরে টেস্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোনের উৎপাদন কমে যায়। এবং দুর্ভাগ্যবশত, এই হরমোন পেশী তৈরি করতে এবং চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. মেনোপজ
মহিলাদের ৪০এর পরে পেটের চর্বি বাড়ার কারণ মেনোপজ। বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে মেনোপজ এবং পেরিমেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা প্রভাবিত হয় এবং এর ফলে পেটের চারপাশে চর্বি জমে যেতে পারে, জার্নাল অফ মিড-লাইফ হেলথ-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে।
৪. চাপের কারণেও পেটের মেদ বাড়তে পারে। এই পেটের মেদ বিপাকক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে। পেটের মেদের কারণ ট্রেস বা চাপের কারণেও হতে পারে। তাই এই জটিলতা এড়াতে স্ট্রেস মোকাবিলা করা অত্যান্ত জরুরি।
এই কারণগুলি পেটের চর্বির জন্য মূলত দায়ী। কিন্তু পেটের চর্বি কমানোর সহজ উপায়ও রয়েছে।
১. কারেন্ট ওভিসিটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, পেটের মেদ বৃদ্ধির জন্য স্ট্রেস সবথেকে বেশি দাবি। আমরা চাপে থাকি, তখন আমাদের শরীর কর্টিসল নামক একটি হরমোন তৈরি করে, যা ক্ষুধা বাড়াতে পারে এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবারের জন্য লোভ সৃষ্টি করতে পারে। করটিসল শরীরকে পেটের চর্বি সঞ্চয় করতেও উৎসাহিত করে।
২. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান
প্রোটিন গ্রহণ বৃদ্ধি আপনাকে পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করতে পারে। আমেরিকান কলেজ অফ নিউট্রিশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় চর্বিহীন মাংস, মুরগি, মাছ, টোফু, মটরশুটি, মসুর ডাল, ডিম এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। বাদাম এবং বীজ যেমন বাদাম, আখরোট এবং কুমড়ার বীজও প্রোটিনের ভালো উৎস।
৩. অ্যালকোহল সেবন কমান
পেটের চর্বি হারাতে চান তবে আপনি আপনার অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করার কথা বিবেচনা করতে পারেন। যদিও এক গ্লাস ওয়াইন বা বিয়ার উপভোগ্য হতে পারে, খুব বেশি পান করলে ওজন বাড়তে পারে। অ্যালকোহলে ক্যালোরি থাকে যা আপনার ওজন বাড়ায় এবং শরীরের চর্বি পোড়ানো কঠিন করে তোলে।
৪. লবণ খাওয়া কমান
বেশি পরিমাণে লবণ খেলে ওজন বাড়তে পারে। অ্যানালস অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড মেটাবলিজম-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আপনার লবণের পরিমাণ যত বেশি হবে, তরল আকারে আপনার ওজন তত বেশি হবে। সুতরাং, অত্যধিক লবণ গ্রহণ করা এড়িয়ে চলুন কারণ আপনার শরীর এটি ধরে রাখবে এবং জল আপনার পেটের অংশে ওজন এবং ভলিউম যোগ করে।
৫. ব্যায়ম
পেটের চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা অত্যান্ত জরুরি। পাশাপাশি দৈন্দদিন কাজে বেশি করে করাও অত্যান্ত জরুরি। প্রয়োজনো যোগব্যায়াম করে। চাইলে জিমেও যেতে পারেন। কারণ এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ক্যালরি পোড়ানোর বিষয়টিও।