ভিটামিন ডি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, যা আপনার হাড় এবং পেশীকে শক্তি দেয়। এটির ঘাটতি সাধারণত ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি পাওয়ার অনেক উৎস রয়েছে। আমাদের শরীর ত্বকে সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পায়।
সূর্যের আলো শরীরে ভিটামিন ডি-র এক বড় উৎস। সূর্যের রশ্মি চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সত্ত্বেও, বেশিরভাগ মানুষেরই শরীরে এর অভাব রয়েছে। এটি একটি গুরুতর সমস্যা। শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক এবং যে কেউ এর ঘাটতির শিকার হতে পারে। আপনার শরীরকে সুস্থ থাকার জন্য যে কয়টি ভিটামিন প্রয়োজন তার মধ্যে ভিটামিন ডি অন্যতম।
এটি আপনার রক্ত এবং হাড়ের ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং হাড় গঠন ও বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি-এর অভাব বর্তমানে একটি সাধারণ বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী আনুমানিক 1 বিলিয়ন মানুষের ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে, জনসংখ্যার ৫০% ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে।
শীতের মৌসুমে কে না রোদ খোঁজে? কিন্তু ব্যস্ত জীবনযাপনে অনেকেই সূর্যের আলো গ্রহণের সময় পান না। কিন্তু ভিটামিন ডি এর জন্য রোদে বসতে হবে। আপনি যদি মাত্র ২০ মিনিট সময় বের করেন তবে অবশ্যই রোদে বসুন।
এর ফলে শরীরে ভিটামিন ডি সংশ্লেষণ অব্যাহত থাকবে। এতে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হবে না। মানবদেহ ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট শুধুমাত্র ভিটামিন ডি-এর উপস্থিতিতে শোষণ করে। একই সময়ে, এটি ফুসফুসের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন ডি এর উপস্থিতিতে, আমাদের শরীর ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট সঠিকভাবে শোষণ করে। ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে এবং তাদের কার্যকারিতা উন্নত করতে ভিটামিন ডি একটি অপরিহার্য পুষ্টি। শরীরে ক্যালসিয়াম বিপাকের জন্য ভিটামিন ডি-এর উপস্থিতি প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি হাড় গঠনে এবং তাদের ক্ষয়-ক্ষতি মেরামতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে হাড় মজবুত হয়। শরীরে ভিটামিন ডি-এর উপস্থিতি শরীরের স্নায়ুতন্ত্র ও মাংসপেশিকে শক্তিশালী রাখতে প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং হাড় সংক্রান্ত রোগ হতে পারে। এর ঘাটতি দাঁতের শক্তিকেও প্রভাবিত করে। মানবদেহের মাংসপেশি সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির মধ্যে ভিটামিন ডিও গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি এর অভাবে ছোট বাচ্চাদের রিকেট হয়। এতে হাড় দুর্বল ও বিকৃত হয়ে যায়।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ভিটামিন ডি-এর অভাব অস্টিওম্যালাসিয়া নামক রোগের কারণ হতে পারে। ভিটামিন ডি-এর অভাবে মানবদেহ ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়। যে কারণে এই রোগ হয়। ভিটামিন ডি-এর অভাবে চুল পড়া, পেশির দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দার মতো উপসর্গও দেখা যায়।
গরুর দুধ ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণের জন্য নিখুঁত পানীয়। এটি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসও সরবরাহ করে। কমলার রস ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। এটি খনিজগুলির চাহিদাও পূরণ করে। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি উৎপাদন নিশ্চিত করতে সূর্যালোক নিন। সকালে রোদে ব্যায়াম করতে পারেন। ভিটামিন ডি লিভার তেল, মাছ, দুগ্ধজাত পণ্য, ডিমের কুসুম, পনিরেও রয়েছে। গুরুতর অভাবের ক্ষেত্রে, ডাক্তাররা সম্পূরক গ্রহণের পরামর্শও দেন।