আপনি কি সোজা হয়ে শুয়ে ঘুমোলে ভয়ের স্বপ্ন দেখে বোবা হয়ে যান? জেনে নিন এর থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার উপায়

Published : May 27, 2023, 04:06 PM IST
sleep paralysis

সংক্ষিপ্ত

ভয়ের স্বপ্ন দেখা ছাড়াও, অনেক মানুষ ঘুমের মধ্যে এমন অনুভব করেন যেন, তাঁর বুকের ওপর কোনওকিছু চেপে বসে আছে। 

কখনও উঁচু থেকে পড়তে থাকা, কখনও আবার গভীর জলে ডুবতে থাকা, কখনও পশুপাখির আক্রমণ, অথবা প্রিয়জনের মৃত্যু, কখনও আবার ভুতের স্বপ্ন, এরকম বহুবিধ ভয়াল দৃশ্যের হানায় ঘুমিয়ে পড়তেই আশঙ্কা করেন পৃথিবীর বহু মানুষ। ভয়ের স্বপ্ন দেখা ছাড়াও, অনেক মানুষ ঘুমের মধ্যে এমন অনুভব করেন যেন, তাঁর বুকের ওপর কোনওকিছু চেপে বসে আছে। বিশেষ করে সোজা হয়ে ঘুমোলে (অনেকের মতে কপাল, হাঁটু এবং গোড়ালি একই সরলরেখায় থাকলে) অনেক মানুষকে বোবায় ধরে। এই ‘বোবায় ধরা’ ব্যাপারটা কী?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগ হল স্লিপ প্যারালাইসিস, অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাত হওয়া। মানুষ ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর সমস্ত শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু, মস্তিষ্ক জেগে থাকে। অর্থাৎ, মাথার ভেতরে চিন্তাভাবনার কাজ চলতে থাকে, কিন্তু, মুখ দিয়ে শব্দ করা, হাত পা নাড়ানো, বা শরীরটাকে একচুল এদিক-ওদিক করার মতো সামান্য ক্ষমতাটুকুও থাকে না। মাত্র কয়েক সেকেন্ড বা দু-এক মিনিটের জন্য স্থায়ী হতে পারে এই স্লিপ প্যারালাইসিস। কিন্তু, ওইটুকু সময়ের মধ্যেই স্বপ্নের মধ্যে এমন কিছু খারাপ দৃশ্য আসতে থাকে যাতে, ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তি অত্যন্ত ভয় পেয়ে যান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ‘বোবায় ধরা’ হল গভীর ঘুম আর জেগে থাকার মধ্যবর্তী একটা স্নায়ুজনিত সমস্যা।

ঘন ঘন স্লিপ প্যারালাইসিস হলে উদ্বিগ্নতার কারণে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে বা কমে যায়, এর ফলে মানুষ মারাও যেতে পারেন। চিকিৎসকদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে যে, এই রোগ যে কোনও বয়সের মানুষের হতে পারে। তবে, কিশোর বয়সে এর প্রভাব বেশি বৃদ্ধি পায়। এর মূলে থাকে প্রধানত ৬টি কারণ। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব। একটানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হওয়া। ঘুমের স্থান পরিবর্তিত হওয়া। অতিরিক্ত ধূমপান বা মদ্যপান। কোনও কারণে মনের ওপর বেশি চাপ পড়া। প্যানিক ডিসঅর্ডার, বাইপোলার ডিজঅর্ডার অথবা অন্যান্য কোনও মানসিক সমস্যা। এগুলি ছাড়া অন্যান্য কোনও কারণেও স্লিপ প্যারালাইসিস হতে পারে।

‘বোবায় ধরা’ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার উপায়:

একটানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোনো। বারবার যাতে ঘুম না ভেঙে যায়, সেজন্য চোখ বন্ধ রেখে ঘুমনোর চেষ্টা করা। মোবাইল বা ল্যাপটপ না দেখা।

প্রত্যেক দিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যেস করা।

শান্ত পরিবেশে ঘরের আলো কমিয়ে ঘুমোতে যাওয়া। হাওয়া-বাতাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা।

ধূমপান, মদ্যপান এবং ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়, যেমন চা কফি, ইত্যাদি খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। রাতে ঘুমনোর আগে এগুলি একেবারেই বন্ধ করতে হবে।

ঘুমোতে যাওয়ার আগে রাতের খাবার খেয়ে অন্তত এক ঘণ্টা হালকা হাঁটাচলা করুন।

দিনের বেলা অতিরিক্ত সময় ধরে ঘুমনো যাবে না।

প্রত্যেক দিন অন্তত আধ ঘণ্টা ধরে মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্য ধ্যান করতে হবে। বারবার নিজেকে বোঝাতে হবে যে, স্লিপ প্যারালাইসিস অত্যন্ত ছোট সময়ের একটি আক্রমণ। এই নিয়মগুলি মেনে চললেই এই আক্রমণ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পাওয়া যাবে।

নিয়মগুলি পালন করার পরেও স্লিপ প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি না পেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুন-
বিছার কামড়ে অর্থলাভ, মোষের পিঠে চড়া মৃত্যুর ইঙ্গিত, স্বপ্নে একেকরকম পশু-পাখি দেখলে একেকরকম ভাগ্যফল পেতে পারেন
কোন স্বপ্ন দেখলে বাড়বে প্রচুর ধনসম্পত্তি, কোন স্বপ্ন বুঝিয়ে দেয় আপনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, জেনে নিন স্বপ্ন দেখার ফলাফল
শনিদেবের পূজা থেকে মা লক্ষ্মীর চরণে, ৬টি বিশেষ উপায়ে আপনার ভাগ্য খুলে দিতে পারে অপরাজিতা ফুল

PREV
click me!

Recommended Stories

শীতকালীন অবসাদ জানেন কী হয়? মন ভালো করতে কেক বা চকলেট নয়, করুন এই কয়েকটি উপায়
৬০ সেকেন্ডের কম সময়ে মেজাজ হবে ভালো, রইল টিপস