মা হোক কিংবা বাবা এরা এমনই একটা জিনিস যার সঙ্গে পৃথিবীর কোনও দামী বস্তুর তুলনা হয় না। প্রতিটি মানুষের জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বাবা। মায়ের জন্য যেমন কোনও বিশেষ দিনের দরকার হয় না তেমনি বাবার জন্যও না। কারণ গোটা জীবনটাই তাদের জন্য বরাদ্দ। প্রতিটা দিনই তাদের। তবে একটা তো স্পেশ্যাল দিন থাকা দরকার। যেই দিনটাতে মন খুলে তাকে মনের সমস্ত গোপন কথা বলা যায়। আর সেই দিনটি হল ২১ জুন অর্থাৎ রবিবার। বিশ্ব পিতৃ দিবস। বাবার জন্য সম্মান, ভালবাসা, শ্রদ্ধা জানাতেই এই বিশেষ দিনের আয়োজন। আর মাত্র একদিন তারপরেই সারা দেশ জুড়ে পালিত হবে ফাদার্স ডে। জুন মাসের তৃতীয় রবিবারই এই দিনটি পালিত হয়। বিশ্বের প্রায় ৮৭ টি দেশে এই দিনটি মহা আনন্দের সঙ্গে পালন করা হয়। কিন্তু কবে থেকে শুরু হয়েছিল এই ফাদার্স ডে-উদযাপন, কোথায়ই বা শুরু হয়েছিল, কে-ই বা ছিলেন এই দিনটির নেপথ্যে ? এর পিছনেও রয়েছে এক ইতিহাস।
আরও পড়ুন-৬ সেকেন্ডে ৯৯ শতাংশ করোনা ভাইরাস ধ্বংস হবে আলট্রা ভায়োলেট রশ্মিতে, দাবি গবেষকদের...
জুন মাসের তৃতীয় রবিবার ফাদার্স ডে প্রথম চালু হয় মার্কিন মুলুকে। এর পিছনে রয়েছে অনেক কাহিনি। তবে ১৯১০ সালে প্রথম ওয়াশিংটনে পালিত হয়েছিল ফাদার্স ডে। সোনোরা স্মার্ট ডোড নামে একজন মহিলা ছিলেন, যিনি কম বয়সে মাকে হারিয়েছিলেন। তারপর থেকেই বাবা তাদেরকে মানুষ করে। তখন থেকেই ভাইবোনেরা মিলে বাবাকে সম্মান জানাতে এই বিশেষ দিনটি পালন করে। সোনোরার ইচ্ছে ছিল বাবার জন্মদিনের দিন অর্থাৎ ৫ জুন ফাদার্স ডে পালিত হবে। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে নি। অবশেষে জুন মাসের ১৯ তারিখে এই দিনটি পালন হয়।
আরও পড়ুন-সোনার পাশাপাশি ছক্কা হাঁকাচ্ছে রূপোর দামও, জেনে নিন কলকাতায় কত...
শোনা যায় সোনোরার আগেও আমেরিকায় পালিত হয়েছে ফাদার্স ডে। ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় পালিত হয় ফাদার্স ডে। সোনোরা আর তার সঙ্গীরা ফাদার্স ডে-র সরকারি স্বীকৃতির জন্য দশকের পর দশক প্রচার চালিয়েছেন। সালটা ১৯১৩। মার্কিন সংসদে ফাদার্স ডে-কে ছুটির দিন হিসাবে ঘোষণা করার জন্য একটি বিল আসে। কিন্তু সেটিতেও পরে বাধা আসে। এভাবেই কেটে যায় বহু দশক। হাজারো চেষ্টার পরে অবশেষে ১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন ফাদার্স ডে-কে ছুটির দিন হিসাবে ঘোষণা করেন। তারপর ১৯৭০ সালে মার্কিন কংগ্রেস সরকারি নির্দেশে জানায়, প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার ফাদার্স ডে পালিত হবে। এবং জানানো হয়, সেইদিন সরকারি দফতরে উড়বে মার্কিন পতাকা, এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। তার দুই বছর পর ১৯৭২ সাল থেকে নিক্সনের সময় থেকেই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে উদযাপন শুরু হয় ফাদার্স ডে-র।
আরও পড়ুন-এক ফোনেই মিলবে লোভনীয় পদ, ফাদার্স ডে স্পেশাল মেনু নিয়ে হাজির অউধ ১৯৫০...
মার্কিন মুলুক ছাড়াও আরও অনেকগুলি দেশেই জুন মাসের তৃতীয় রবিবার ফাদার্স ডে উদযাপন করা হয়। যেমন এর মধ্যে আছে ভারত, জাপান, চিলি,গ্রেট ব্রিটেন, পাকিস্তান, মায়ানমার, সৌদি আরব, ভেনেজুয়েলা, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ আফ্রিকা, প্রভৃতি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফাদার্স ডে উদযাপনের দিন এক নয়। উল্লেখ্য, ফাদার্স ডে-র ফুল হল গোলাপ। তবে জীবিত ও প্রয়াত বাবার জন্য আলাদা রং রয়েছে। জীবিত বাবার জন্য লাল গোলাপ এবং প্রয়াত বাবার জন্য সাদা গোলাপ। ইতিহাসের পাতাতেও উল্লেখ রয়েছে ফাদার্স ডে-র । মধ্যযুগে, ক্যাথলিক ইউরোপে ফাদার্স ডে পালিত হত।