মধ্যরাতের পেটপুজোয় বাড়তে পারে ব্লাড সুগারের মাত্রা, জানুন কী ধরনের খাবার তালিকায় রাখবেন

মিড নাইট ক্র্যাভিং মিটে যাওয়ার পর একটা সুন্দর ঘুম হয় ঠিকই কিন্তু যদি সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া যায় তাহলে দেখা যাবে এই মিড নাইট ক্র্যাভইং শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিডনাইট ক্র্যাভিং-এর সময় সব সময় সঠিক খাবার নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এমন খাবার খেতে হবে যাতে ব্লাড সুগারের মাত্রা কোনোভাবেই না বাড়তে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক রাতে ঠিক কী ধরনের খাবার খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকবে।  
 

Kasturi Kundu | Published : Mar 4, 2022 7:26 AM IST

অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে ওয়ার্ক ফর্ম হোমের ক্রেজ কিন্তু অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে নাইট শিফট বা নাইট ডিউটির সময়ও অনেক কর্মস্থানে বাড়ানো হয়েছে। আর কাজ করতে করতে খিদে পাওয়াটা কিন্তু বেশ স্বাভাবিক। ডিনারের পর বেশ কিছুক্ষণ সময় কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ মনে হয় যদি একটু কিছু হতো তাহলে বেশ ভালই হতো। শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয়, রাতে যদি দুচোখের পাতা এক না হয় তাহলেও কিন্তু মিড নাইট ক্র্যাভিংটা (Midnight Food) বেশ ভাল মতোই চাড়া দিয়ে ওঠে। ধরুন ঘড়ির কাঁটায় রাত ৩ টে, যাকে বলে একেবারে মধ্যরাত্রি (Mid Night) আর আপনার আইসক্রিম ক্র্যাভিং বা অন্য কোনও কিছু খাবারের জন্য মনটা একেবারে ছটফট করছে। সেক্ষেত্রে আপনি হয়তো আপনার মন মতন কিছু একটা বানিয়ে খেলেন বা ঘরে সন্ধ্যাবেলার অধ খাওয়া পিৎজাটা রয়েছে সেটাই একদম গপগপ করে খেয়ে নিলেন। কিন্তু তারপর আপনার শরীরে যে সমস্যাটা হবে সেটা কখনও ভেবে দেখেছেন। 

মিড নাইড ক্র্যাভিং (Mid Night Craving) মিটে যাওয়ার পর একটা সুন্দর ঘুম হল ঠিকই কিন্তু যদি সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া যায় তাহলে দেখা যাবে এই মিড নাইট ক্র্যাভইং শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর (Mid Night Craving Harmful)। বিশেষ করে যখন কোনও কিছু বিবেচনা না করেই হাতের সামনে যা পাচ্ছেন সেটা দিয়ে পেটপুজো করে ফলছেন। এই ধরনের পদক্ষেপে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটা হয় সেটা হল এই সময় শরীরে অতিমাত্রায় ক্যালোরি প্রবেশ করে। যার ফলে খুব স্বাভাবিকভাবে চড়চড় করে আপনার ওজন (Body Weight) বাড়তে থাকে। আর ওজন বৃদ্ধি মানেই শরীরে বিভিন্ন রোগের বাসা বাঁধার পথ খুলে দেওয়া। মিড নাইট ক্র্যাভিং বা মধ্যরাতের খাওয়ার ইচ্ছে জাগা মানে আরেকটি বড় ধরনের রোগের হাতছানি আসা। আর সেটা হল ডায়াবেটিস (Diabetis)। হ্যাঁ, মাঝরাতে যদি স্বাস্থ্যের দিকটা বিচার বিবেচনা না করে যা খুশি তাই খেয়ে নেন তাহলে জানবেন ডায়াবেটিসও (Diabetis) আপনার জীবনে গ্র্যান্ড এন্ট্রি নিতে কিন্তু এক পা এগিয়ে রয়েছে। 

মধ্যরাতের খাওয়ার বাসনার সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক

আপনি যদি একজন ডায়াবেটিসের রুগী হন তাহলে কিন্তু অবশ্যই মধ্যরাতের খাবারের লোভ সম্বরণ করুন। কারন মধ্যরাতের ভুলভাল খাবার একজন ডায়াবেটিস রোগীর পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। এর প্রভাব সোজা গিয়ে পড়ে ব্লাড সুগারের (Blood Suger) ওপর। ব্লাড সুগারের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয় মিডনাইট ক্র্যাভিং-এর ভুল খাবার নির্বাচন। আর ঠিক সেই জন্যই বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিডনাইট ক্র্যাভিং-এর সময় সব সময় সঠিক খাবার নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এমন খাবার খেতে হবে যাতে ব্লাড সুগারের মাত্রা কোনোভাবেই না বাড়তে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক রাতে ঠিক কী ধরনের খাবার খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকবে।  

১. মধ্যরাতের খাবারের তালিকায় কম চিনি যুক্ত খাবার রাখা বাধ্যতামূলক।

২. কম ক্যালোরিযুক্ত সুস্বাস্থ্য খাবার মিডনাইট ক্র্যাভিং মেটানোর জন্য খাবারের তালিকায় রাখা উচিত। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমানে জল পান করতে হবে। 

৩.  যদি বাড়ির ফ্রিজে মধ্যরাতের খিদে মেটানোর জন্য খাবার সংরক্ষণ করে রাখেন তবে সেক্ষেত্র কম GI যুক্ত খাবার সংরক্ষণ করুন। রেডি টু ইট বা প্রসেস ফুড এবম কেক, পেস্ট্র, কুকিংস বা পাউরুটির মত খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলুন। 

৪. খাবার মানেই কিন্তু তৃপ্তির একটা বিষয় থেকেই যায়। তাই মধ্যরাতের খাবারেও সেই তৃপ্তি পাওয়ার জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার স্টোর করুন। খুব ভারি ধরনের কোনও খাবার বা হেভি মিল মাঝরাতে কখনই খাবেন না। 

৫. একজন ডায়াবেটিক রোগীর কাছে কিন্তু মাঝরাতের খাবার নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ডায়াবেটিক রোগীদের এমনিতেই বেশ কিছু নিয়ম নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হয়, আর সেটা যদি খাবারের ক্ষেত্রে হয় তাহলে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তাই সঠিক সময় সঠিক খাবার বেছে নেওয়ার মাধ্যমে, ডায়াবেটিসের সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে পেতে পারেন। 

ডায়াবেটিসকে কীভাবে নিয়ন্ত্রনে রাখবেন সেই সংক্রান্ত রইল কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস যা আপনার কাজে আসতে পারে। এই টিপসগুলো মানলে আপনার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে থাকবে। 

১. চিনি যুক্ত খাবার বা তরল পানীয় অবশ্যই এড়িয়ে চলুন। 

২. নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। এর ফলে ব্লাড সুগার যেমন নিয়ন্ত্রনে থাকবে তেমনই ওজনও বৃদ্ধি পাবে না। 

৩. শরীরকে অবশ্যই পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া উচিত। আপনার শরীর যদি পর্যাপ্ত পরিমানে বিশ্রাম বা রেস্ট না পায় তাহলে কিন্তু ব্লাড সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভবনা থাকে। 

৪. ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে যে বিষয়টা অবশ্যই মেনে চলা উচিত সেটা হল নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। নির্দিষ্ট দিনে চিকিৎসককে দেখানোর কথা কিন্তু কোনওভাবেই ভোলা যাবে না বা এড়িয়ে চললে হবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজের মত করে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করলে কিন্তু বিপদ। 

Share this article
click me!