আজকাল বাচ্চারা বড় বেশি ওবেসিটির সমস্য়ায় ভুগছে। যার ফলে ছোট থেকেই নানা ধরনের রোগবিসুখের শিকার হতে হচ্ছে তাদের। কার্ডিওমায়োপ্য়াথি, গলস্টোন, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হাড় সংক্রান্ত সমস্যা থেকে শুরু করে ওই বয়সেই কোষ্ঠাকাঠিন্য়ের শিকার হচ্ছে তারা। ওবেসিটির কারণ হিসেবে দায়ী করা যায় খাদ্য়াভ্য়াসকে। আগে মায়েরা নিজের হাতে তৈরি করে দিতেন স্কুলের টিফিন। এখন তো সেসবের চল নেই। রংচঙে প্য়াকেটে মোড়া চিপস, চকোলেট, কুকিজ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ছোটদের টিফিনে। সেইসঙ্গে বাইরের খাবারের রেওয়াজও বেড়েছে। বড়দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাচ্চারাও সমানে খাচ্ছে রাস্তার রোল-চাউমিন। আর এসব মুখরোচক খাবারে অভ্য়স্ত হওয়ার ফলে বাড়ির খাবার আর মুখে রোচে না। ছোটদের বায়নার কাছে অপারগ হয়ে বড়রাও অকাতরে তাদের কিনে দিচ্ছে ফাস্টফুড। ফলে ওজনও বাড়ছে। অন্য়দিকে শারীরিক পরিশ্রমও সেভাবে নেই। পড়াশোনার চাপ বড় বেশি, কাজেই খেলাধুলোর সঙ্গে আড়ি। এরমাঝে যতটুকু সময় পাওয়া যায়, ততটুকু সময় টিভির সামনে বসা বা কম্পিউটারে ভিডিয়ো গেম খেলা। এখন তো আবার শাঁখের কড়াত হয়ে দাঁড়িয়েছে স্মার্টফোন। এগুলো ব্য়বহারের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত মুখ চলছে কুরকুরে, চিপস, চকোলেট সহযোগে। কাজেই এই প্রজন্মের ছোটরা যে ওবেসিটির সমস্য়ায় এখন ভুগবে, তাতে আর অবাক হওয়ার কী আছে।
কী করে নিস্তার পাওয়া যায় এর হাত থেকে, দেখা যাক। এদের খাদ্য় তালিকায় প্রোটিন, ফ্য়াট, মিনারেলস সবই থাকা উচিত। বাড়ন্ত বয়স, তাই কোনও কিছু বন্ধ করা উচিত নয়। তবে খাওয়া উচিত সঠিক পরিমাণে। ন-দশ বছর অবধি মোট যত ক্য়ালোরি খাওয়া উচিত একজন বাচ্চার, তার সত্তর শতাংশই কার্বোহাইড্রেট হওয়া উচিত। তবে সিম্পল কার্বোহাইড্রেট, যেমন জ্য়াম, স্কোয়াশ, সিরাপ, সুগার, ফ্টুট জুস, একেবারেই বাদ দেওয়া উচিত। খেলেও খুব কম। তবে ফ্য়াটজাতীয় খাবার একেবারেই বন্ধ করা উচিত নয়। নইলে শরীরে প্রয়োজনীয় ফ্য়াটি অ্য়াসিড ও ফ্য়াট সলুবেল ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেবে। যদিও এর মাপ হওয়া উচিত প্রতিদিন ৪ চা-চামচ। প্রোটিন খাওয়া উচিত প্রতি কেজি বডিওয়েটে ১ গ্রাম। সবুজ শাকসবজি , ফল, অঙ্কুরিত ছোলার মতো ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। মিষ্টি. চিপস, কোল্ড ড্রিঙ্কস, রোল-চাউমিন, যে কোনও ফাস্টফুড বাদ দিতে ওবেসড বাচ্চাদের। শরীরের বাড়তি মেদ ঝরাতে স্কিপিং, জগিং, সুইমিং আর খেলাধুলোর কোনও বিকল্প নেই। কাজেই সঠিক খাদ্য়াভ্য়াসের সঙ্গে ঠিকঠাক জীবনযাপন অত্য়ন্ত জরুরি, মেদ ঝরাতে গেলে।