ফেলে রেখে শহুরে রুটিন জয়পুরের জঙ্গলে রোমাঞ্চকর দুদিন

বাঁকুড়ার জয়পুরে বিশুদ্ধ প্রকৃতি আর জঙ্গলের রোমাঞ্চ
হাতি, হরিণ, ময়ূর ও অনেক রকমের পাখি রয়েছে এই জঙ্গলে
জঙ্গলের মধ্যে পাঁচতলার ওয়াচটাওয়ারে রয়েছে তিনটি স্যুট
জয়পুরের কাছেপিঠে রয়েছে টেরাকোটার কাজ সমৃদ্ধ টেরাকোটার পঞ্চরত্ন মন্দির

এই বছর সপ্তাহান্ত ও উৎসবের ছুটিগুলো এমনভাবে পড়েছে যা নাকি বেড়াতে যাওয়ার জন্য আদর্শ। বেড়াতে যাওয়া মানেই কি সবসময় তল্পিতল্পা বেঁধে দূর দূরান্তে যাওয়া? বেড়াতে যাওয়া মানে আসলে বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে দু তিনদিন নিজের শর্তে বাঁচা। আমাদের রাজ্যে এমন বেশ কিছু জায়গা আছে যেখানে পৌঁছে শহুরে অভ্যস্ত জীবনের রুটিন নস্যাৎ করে দিয়ে নিজের শর্তে বাঁচা যায় মনের আনন্দে। 

বাঁকুড়া জেলার কথা মনে পড়লেই, টেরাকোটা মন্দির, দলমাদল কামান, শুশুনিয়া পাহাড় ইত্যাদির কথা মনে পড়ে, এর সঙ্গেই আছে কিন্তু সবুজ সামঞ্জস্যে ঘেরা নিভৃত অরণ্য।  সংক্ষিপ্ত ছুটি কাটানোর মনোরম পরিবেশ। শাল, বহেড়া, সেগুন, টিক, মহুয়া, পলাশ ঘন হয়ে তৈরি করেছে আলোছায়া মাখা শ্যামলা শামিয়ানা। যেখানে পৌঁছে বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে হবেই। এই জঙ্গলে আছে হাতি, চিতল হরিণ, বুনো শেয়াল, বুনো শুয়োর, ময়ূর আর প্রচুর পাখি। এইখানেই রয়েছে বাঁকুড়া জেলার সবচেয়ে বড়ো জলাশয় সমুদ্র বাঁধ। ভাগ্য প্রসন্ন থাকলে এই সমুদ্রবাঁধে হাতিদের জলকেলি দেখতে পেতেও পারেন।  এই জঙ্গলে ২০০৫ সালে বন দফতরের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে পাঁচতলার ওয়াচ টাওয়ার। এই ওয়াচ টাওয়ারটি অন্যরকম। এর পাঁচতলা ও নীচের তলা ছাড়া বাকি তলায় রয়েছে তিনটি স্যুট। এই স্যুটগুলোয় থাকলে জঙ্গল ঘিরে থাকবে পর্যটককে সর্বক্ষণ। পাখিদের যাওয়া আসা, সমদ্র বাঁধে হাতিদের হুল্লোড় সবই দেখতে পাবেন ঘরে বসে।  তবে ওয়াচ টাওয়ারে থাকতে হলে আগে থেকে বন দপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন হয়। ওয়াচটাওয়ার থেকে বেলাশেষের সূর্যের লালচে আভা সবুজ বনানীর ওপর যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন সমগ্র চরাচর জুড়ে অস্তরাগের সুরমূর্ছনা ছড়িয়ে পড়ে। তেমনি সূর্যোদয়ও অপূর্ব লাগে এখান থেকে।
এছাড়া জঙ্গলের ভেতর মোবারকপুর ও মাচানপুরে দুটি ওয়াচটাওয়ার আছে। তৈরি করা হয়েছে হাতিবাঁধ যেখানে হাতিরা জল খেতে বা স্নান করতে যায়। রেঞ্জ অফিসের লাগোয়া হাইটেক নার্সারিও ভালো লাগবে পর্যটকদের।
জঙ্গলের মধ্যে আছে ব্রিটিশ আমলের তৈরি এয়ারস্ট্রিপ যা আজ একাকী, বুনো জঙ্গলে ঢাকা খানিকটা।
প্রাণ ভরে জঙ্গল দেখার মাঝেই বিরতি নিয়ে ঘুরে আসা যায় জয়পুর গ্রামের ভেতরে দেপাড়া ও দত্ত পাড়ার দুটি পঞ্চরত্ন মন্দির যার গায়ে সুন্দর টেরাকোটার সাজ।
জয়পুর গ্রাম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে যে গ্রাম, তার নাম গোকুলনগর। এই গ্রামে রয়েছে মাকড়া পাথর দিয়ে তৈরি পঞ্চ্রত্ন গোকুল চাঁদ মন্দির। মন্দিরের নামেই গ্রামের নাম বোঝাই যায়।  এই পুরনো মন্দির প্রাঙ্গনে আছে একটি নাট্মন্দির। এই মন্দির চত্ত্বর এখন ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনস্থ।

Latest Videos

কোথায় থাকবেন- ওয়াচটাওরের কথা আগেই লিখেছি। এছাড়া আছে বনলতা রিসর্ট, বিষ্ণুপুরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যুরিস্টলজেও থাকতে পারেন। অনেক বেসরকারি রিসর্ট, লজও পেয়ে যাবেন।

কীভাবে যাবেন- সড়কপথে যেতে হলে কোনা এক্সপ্রেস ধরে দানকুনি, আরামবাগ, কোতল্পুর পেরিয়ে চলে যান জয়পুর জঙ্গল।

ট্রেনপথ-  সাঁতরাগাছি থেকে রূপসী বাংলা ধরে বিষ্ণুপুর, সেখান থেকে গাড়িতে করে জয়পুর জঙ্গল 

Share this article
click me!

Latest Videos

Live: মথুরাপুরে সদস্যতা অভিযান অগ্নিমিত্রা পালের, দেখুন সরাসরি
টাকা 'হজম' করার আগেই ধরে ফেলে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী | Suvendu Adhikari | Awas Yojana
ভাটপাড়ায় প্রোমোটারের 'দাদাগিরি', আতঙ্কে জমির মালিক, কি বলছে পুরসভা! দেখুন | Bhatpara News
'আমি মারা গেলে আমার যেন স্ট্যাচু না হয়' দলের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার
‘সবরমতি রিপোর্ট’ দেখলেন বিজেপির হেভিওয়েটরা! দেখুন কী বার্তা দিলেন সিনেমার ব্যপারে | Sabarmati Report